আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
122 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ।

এত বড় করার জন্য আফওয়ান।
১)আমার বায়ুর সমস্যা আছে। প্রায় প্রতি ওয়াক্তেই নামাজের ভিতর দুই /একবার ওযু করা লাগে।আর এই দুই/একবার ছাড়াও আমার বার বার মনে হয় বায়ু বের হয়ে গেছে হয়তো ।কিন্তু তখন শুধু সন্দেহের কারণে নামাজ ছাড়িনা।নামাজ পড়তে অনেক অসুবিধা হয়। এখন,আমি মাগরিবের ওয়াক্তে পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম আমি মাজুর কি না?

মাগরিবের ওয়াক্ত থাকে (৬:৪৮- ৮:১২)পর্যন্ত।ইফতারি করে ৭:২০ বাজে থেকে ৮:১২ পর্যন্ত আমি শুধু মনযোগ সহকারে ফরজ নামাজ পড়ার অর্থাৎ ১০ মিনিট সময়ও পাইনি।ফরজ নামাজের আগে একবার ও ফরজ নামাজের ভিতরে দুই বার ওযু করে এসে ৩ য় রাকাতে দাড়ানোর পর আবার বায়ু আসলে তারপর আমি আর ওযু করিনি। কিন্তু পর্যবেক্ষণ করেছি।৭:২০ এর আগের সময়টুকুর মধ্যে একবার সম্ভবত (৭:১০- ৭:১২/১৪) এর মাঝে আমার একবার বায়ু বের হয়েছে।আর বাকি সময় যেহেতু আমি পর্যবেক্ষণ করিনি তাই সিউর হতে পারছিনা, সন্দেহের মধ্যে আছি যে বায়ু বের হয়েছিলো কি না।এখন আমি কি মাজুর হিসেবে গণ্য হব?বেশি বড় করার জন্য আফউয়ান।

আর কিছুদিন পর আমার স্কুল খুলে দিবে।তখন, আমার নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরেই যোহর এবং আসর সালাত পড়তে হয়। তখন একবার  ওযু করতে গেলেই ক্লাসে ঢুকতে বেশ দেরি হয়্র যায়। আর এই সমস্যার কারণে যদি বারবার ওযু করি তাহলে ক্লাসে হয়ত অনেক দেরি হয়ে যাবে এবং আমার ওপর ক্লাস বাঙ্ক দেওয়ার অভিযোগ আসতে পারে।বিশেষ করে আসরের সালাতের সময় খুবই অল্প থাকে,কলেজ ছুটি হয়ে যায় বিধায় সব কিছু বন্ধ করে দেয়।আর শীত কালে তো নামাযের সময়ই দেওয়া হয় না।সে সময় ক্লাসের মাঝে নামাজ পড়তে গেলে দেখা যায় একবার ওযু করে নামায পড়ে আসতে গেলেই আমার নিম্নে ২৫ মিনিট লাগে।আবার ওযুর স্থান ও অনেক সময়  দূরে থাকে। তাই নামাজের মাঝে এত মানুষের মাঝে বারবার ওযু করতে গেলে নামাজে বেশ ব্যাঘাত ঘটে এবং নামাজ ভেঙে যাওয়ারো সম্ভাবনা আছে (কোনো স্যার বা  কেউ ডাকলে আমাকে উত্তর দিতে হবে)।আবার,বাসায় নামাজের ও সুযোগ নেই। এখন সমস্যা আগের চেয়ে কম। তবে এই সমস্যা যেকোনো সময় বারবার হতে পারে।এখন করণীয় কি?

(আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ

২)বর্তমানে ফেসবুকে অনেক ইসলামিক গল্প, উপন্যাস পাওয়া যায়।সেখানে বিবাহ পরবর্তী স্বামী -স্ত্রী র কাহিনী থাকে। সেখানে খুব বেশি অশ্লীল কিছু না থাকলেও মোটামুটি ভালোই রোমান্টিক কাহিনী থাকে।

আমি যতটুকু বুঝতে পারি মোটামুটি দ্বীনি বোনারাই এই গল্প গুলো লিখে থাকেন।এখন এগুলো পড়া বা লেখা কি জায়েজ হবে?
by
২) এর জন্য :ওই সব গল্পে ইসলামের অনেক জিনিসো উপস্থাপন করা হয়। অনেক সময় ইন্সপায়ারিং হয় ভালোই।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা গ্রস্থ নারীর ন্যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।
(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)

حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত বিবরণ মতে আপনি মা'যুর কিনা,সেটা আগে নির্ণয় করতে হবে,যদি আপনি মা'যুর না হোন,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার মাগরিব নামাজ হবেনা।

পবিত্র হয়ে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবে।

বায়ু বের হওয়া মাত্র নামাজ ছেড়ে দিয়ে পাক হয়ে অযু করে এসে বাকি নামায আদায় করতে হবে।এক্ষেত্রে শুরু থেকে নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক নয়। যেই রুকনে নামাজ ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন,অযু করে আসার পর সেই রুকন হতেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আবারো অযু ভেঙ্গে গেলে আবারো অযু করতে যেতে হবে।

আর যদি আপনি মা'যুর হোন,অর্থাৎ নামাজের শুরু ওয়াক্ত থেকে নিয়ে ওয়াক্তের শেষ পর্যন্ত আপনার বায়ু বের হতেই থাকে,এই ওযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন,এই ভাবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কেননা আপনি মা'যুর। 

পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে এই ওযর একবার পাওয়া গেলেও আপনি মা'যুর হিসেবেই বহাল থাকবেন।
তবে কোনো ওয়াক্তে আপনার আর উক্ত সমস্যা না দেখা গেলে সেক্ষেত্রে আপনি আর মা'যুর হিসেবে থাকবেননা।
আপনি সুস্থ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার যেহেতু সমস্যা,সুতরাং নামাজের জন্য একেবারে শুরুর ওয়াক্ত হতে নির্ণয় করতে হবে।
ওয়াক্তের মাঝে থেকে নয়।

যেহেতু আপনার সমস্যা,তাই ৩ রাকাত নামাজের জন্য ১০ মিনিট না নিয়ে ৪/৫ মিনিটের মতো সময় নিবেন।

সুতরাং একটি নামাজের শুরুর ওয়াক্ত থেকে একেবারে শেষ মিনিট পর্যন্ত উক্ত ওযর ছাড়া ৪/৫ মিনিট পাওয়া না গেলে আপনি মা'যুর হবেন।

(০২)
কল্পকাহিনী,গল্পের বই, উপন্যাস এর বই পড়া জায়েজ, তবে শর্ত হচ্ছে দুটি। 

প্রথমত, অশ্লীল ও যৌন সুড়সুড়ি দেয় এমন কিছু হতে পারবে না। কারণ, এগুলো পড়লে এর মাধ্যমে আপনি নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হবেন। অনেক গল্প আছে, যেগুলোতে মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য অনৈতিক কথাবার্তা উল্লেখ করা হয়ে থাকে।

দ্বিতীয়ত, বিষয় হচ্ছে, ইসলামী শরিয়তে হারাম, নিষিদ্ধ, গর্হিত—এ ধরনের কোনো বিষয় যদি সেখানে এসে যায়, তাহলে সেটাও নিষিদ্ধ হবে। যেমন শিরক শিক্ষা দিচ্ছে, যৌনতার শিক্ষা দিচ্ছে, মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষা দিচ্ছে, যদি এমনি কিছু সেখানে থাকে, তাহলে সেগুলো পড়বেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত গল্প গুলো শরীয়তের উপরোক্ত শর্তাবলী মেনে লেখা হলে সেগুলো পড়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 334 views
...