ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
■ আদ-দুররুল মুখতার কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
ينظر
الطبيب إلي موضع مرضها بقدر الضرورة … و
كذا نظر قابلة وختان.
মর্থার্থ: জরুরত পরিমাণ ডাক্তারের
জন্য অসুস্থতার স্থান (সতর) দেখা জায়েজ আছে।…তেমনীভাবে ধাত্রী ও খাৎকারীর জন্যও জরুরত
পরিমাণ সতর দেখা জায়েজ আছে। (আদ-দুররুল মুখতার, ৯/৫৩৫)
■ হেদায়া কিতাবে উল্লেখ আছে-
يجوز
للطبيب ان ينظر إلي موضع المرض الضرورة
… وصار كنظرالخافضة و الختان.
মর্থার্থ: জরুরত পরিমাণ ডাক্তারের
জন্য অসুস্থতার স্থান (সতর) দেখা জায়েজ আছে।…তেমনীভাবে ধাত্রী ও খাৎকারীর জন্যও জরুরত
পরিমাণ সতর দেখা জায়েজ আছে। (হেদায়া, ৪/৪৫৯)
■তাবয়ীনুল হাকায়েক কিতাবে উল্লেখ
আছে-
ينظر
الطبيب إلي موضع مرضها (كنز)و في التبيين: و في نظر الطبيب إلي موضع المرض ضرورة
… و كنظرالختان والخافضة الخ
মর্থার্থ: জরুরতের কারণে ডাক্তারের
জন্য সতর দেখা জায়েজ আছে। যেমনীভাবে খাৎনাকারী ও ধাত্রীর জন্য সতর দেখা জায়েজ আছে।
(তাবয়ীনুল হাকায়েক, ৭/৩৯-৪০)
■শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ
পর্দা করা ফরজ।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
قُلْ
لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ
أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
وَقُلْ
لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا
يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ
عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ
آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ
بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي
أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ
التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ
الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ
بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى
اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে।
এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত
করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য
প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের
স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা,
ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ,
ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ,
তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ,
তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা
সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
■আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
يَا
نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا
تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا
مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ
الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের
মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা
আহযাব-৩২}
وَإِذَا
سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ
أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে।
এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী
রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ
তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে
পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ
নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার
আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি
কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
সাধারণত নিয়ম হল, পুরুষ ডাক্তার পুরুষ রোগীদের চিকিৎসা করবে। আর মহিলা ডাক্তার
মহিলা রোগীদের চিকিৎসা করবে। যদি কোথাও বিপরীত লিঙ্গের ডাক্তার ব্যতিত অন্য কোনো ডাক্তার
পাওয়া না যায়,
তাহলে তখন বিপরীত লিঙ্গের ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করানো জায়েয।
আরো জানুনু - https://ifatwa.info/91318/
আরো জানুন - https://ifatwa.info/39124/
হ্যাঁ, যদি তিনি এ বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞ
মহিলা ডাক্তার খুজে না পান বা সময় সুযোগ না থাকে, আর অপারেশনও খুব দ্রুত করার
প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে সেই অভিজ্ঞ পুরুষ ডাক্তারকে বিশেষ প্রয়োজন বশত দেখাতে
পারবেন বা অপারেশন করাতে পারবেন।