আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
80 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته
এক বোনের প্রশ্ন --

আমার গলব্লাডারে স্টোন আছে।সেটা সার্জারী করাতে হবে।প্রায় মাস ছয়েক আগেই স্টোন ধরা পড়েছিল কিন্তু বাসার সবাই চাচ্ছিল পুরুষ সার্জন দিয়ে সার্জারী করাতে তাই আমি না করে দিয়েছিলাম।হয়ত এখন মহিলা সার্জন দিয়েই করাতাম। তবে সমস্যা হচ্ছে আমার পরিবারের লোকজন কেউ আমার কাছে নেই।শুধু সমবয়সী ভাইটা ছাড়া। সিলেটে আমাদের পরিচিত একজন পুরুষ সার্জন আছেন।যেহেতু আমার পরিবারের লোকজন কেউ নেই তাই সবাই চাচ্ছেন সেই পরিচিত সার্জনকে দিয়েই সার্জারী করাতে।আর আমার পরিচিত যেসব বোনেরা ওটিতে গিয়েছেন তাদের মুখে শুনলাম ওটির পোশাক খুবই সংক্ষিপ্ত থাকে।অনেক সময় প্রাইভেট পার্টও কভার হয় না।এসময় আমার মনে হয় না আমি ওটিতে মুখ ঢাকা দূরের কথা মিনিমাম ওটনা দিয়ে নিজেকে কভার করতে পারব।ভেবেছিলাম পরিবারের লোকজন আসলে পরে সার্জারী করাব তাহলে হয়ত মহিলা সার্জন দিয়েই করাতে পারব।কিন্তু ওটিতে তো পুরুষ সহকারী ও থাকবে।আর তাছাড়া ইদানীং আমার পাথর খুব বড় হয়ে গিয়েছে।হয়ত দুই একদিনের মধ্যে সার্জারী করাতে হবে।এ অবস্থায় আমি কী করতে পারি?কীভাবে নিজেকে নূন্যতম কভার রাখা যায়?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

আদ-দুররুল মুখতার কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-

ينظر الطبيب إلي موضع مرضها بقدر الضرورة …  و كذا نظر قابلة  وختان.

মর্থার্থ: জরুরত পরিমাণ ডাক্তারের জন্য অসুস্থতার স্থান (সতর) দেখা জায়েজ আছে।…তেমনীভাবে ধাত্রী ও খাৎকারীর জন্যও জরুরত পরিমাণ সতর দেখা জায়েজ আছে। (আদ-দুররুল মুখতার, ৯/৫৩৫)


হেদায়া কিতাবে উল্লেখ আছে-

يجوز للطبيب ان ينظر إلي موضع المرض  الضرورة …  وصار كنظرالخافضة و الختان.

মর্থার্থ: জরুরত পরিমাণ ডাক্তারের জন্য অসুস্থতার স্থান (সতর) দেখা জায়েজ আছে।…তেমনীভাবে ধাত্রী ও খাৎকারীর জন্যও জরুরত পরিমাণ সতর দেখা জায়েজ আছে। (হেদায়া, ৪/৪৫৯)


তাবয়ীনুল হাকায়েক কিতাবে উল্লেখ আছে-

ينظر الطبيب إلي موضع مرضها (كنز)و في التبيين: و في نظر الطبيب إلي موضع المرض ضرورة …  و كنظرالختان والخافضة الخ

মর্থার্থ: জরুরতের কারণে ডাক্তারের জন্য সতর দেখা জায়েজ আছে। যেমনীভাবে খাৎনাকারী ও ধাত্রীর জন্য সতর দেখা জায়েজ আছে। (তাবয়ীনুল হাকায়েক, ৭/৩৯-৪০)


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা করা ফরজ।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।


ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}


 আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}


وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}


বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)


নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


সাধারণত নিয়ম হল, পুরুষ ডাক্তার পুরুষ রোগীদের চিকিৎসা করবে। আর মহিলা ডাক্তার মহিলা রোগীদের চিকিৎসা করবে। যদি কোথাও বিপরীত লিঙ্গের ডাক্তার ব্যতিত অন্য কোনো ডাক্তার পাওয়া না যায়, তাহলে তখন বিপরীত লিঙ্গের ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করানো জায়েয।

আরো জানুনু - https://ifatwa.info/91318/

আরো জানুন - https://ifatwa.info/39124/


হ্যাঁ, যদি তিনি এ বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার খুজে না পান বা সময় সুযোগ না থাকে, আর অপারেশনও খুব দ্রুত করার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে সেই অভিজ্ঞ পুরুষ ডাক্তারকে বিশেষ প্রয়োজন বশত দেখাতে পারবেন বা অপারেশন করাতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 151 views
...