আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম।।
১) রাস্তার পাশের দেয়ালে কুরআনের আয়াত দিয়ে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি করা বৈধ কিনা?
২) যদি বৈধ হয়, অনেক সময় রিকশাওয়ালারা মামারা বা কুকুর যেখানে সেখানে দেয়ালের পাশে প্রস্রাব করতে বসে যায়, এতে অঙ্কনকারীর গুণাহ হবে কিনা?
৩) কুরআনের আয়াত বৈধ না হলে অন্য কোনো arabic ক্যালিগ্রাফি বৈধ কিনা? সেগুলো ধরণ একটু specify করে দিবেন দিয়ে করে।

1 Answer

0 votes
by (59,550 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/4543/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,


কোরআন মহান আল্লাহর কালাম বা বাণী।  এর সর্বোচ্চ সম্মান মর্যাদা দিতে হবে

হাদীস শরীফে এসেছে 

وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ اللهَ يَرْفَعُ بِهٰذَا الْكِتَابِ أَقْوَامًا وَيَضَعُ بِه اٰخَرِينَ

উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা এ কিতাব কুরআনের মাধ্যমে কোন কোন জাতিকে উন্নতি দান করেন। আবার অন্যদেরকে করেন অবনত। (মুসলিম ৮১৭, ইবনু মাজাহ ২১৮, আহমাদ ২৩২, দারিমী ৩৪০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১২৫, শু‘আবূল ঈমান ২৪২৮, সহীহাহ্ ২২৩৯)


কুরআন মাজীদ আল্লাহ তাআলার কালাম। এটি প্রদর্শনের বস্তু নয়।  তাই এর কোনো প্রকারের সম্মান হানী হয়, এমন কাজ করা যাবেনা

(-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৬৭, ৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৯, ৫/৩২২; আদ্দুররুল মুখতার ৪/১৩০)

,

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে 

وَيُكْرَهُ أَنْ يَجْعَلَ شَيْئًا فِي كَاغِدَةٍ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ تَعَالَى كَانَتْ الْكِتَابَةُ عَلَى ظَاهِرِهَا أَوْ بَاطِنِهَا، (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الخمس-5/322)

يكره كتابة قرآن أو إسم الله تعالى على ما يفرش لما فيه من ترك التعظيم وكذا على درهم ومحراب وجدار لما يخاف من سقوط الكتابة (طحطاوى على مراقى الفلاح، باب الحيض، مصرى-118)

 যার সারমর্ম হলো কুরআনের আয়াত বা আল্লাহর নাম এমন জায়গায় লেখা যাবেনা, যেটার দ্বারা সম্মান হানী হয়। এরকমটি হলে এটি নাজায়েয।


ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় অন্যত্রে এসেছে

وَلَوْ كُتِبَ الْقُرْآنُ عَلَى الْحِيطَانِ وَالْجُدَرَانِ بَعْضُهُمْ قَالُوا: يُرْجَى أَنْ يَجُوزَ، وَبَعْضُهُمْ كَرِهُوا ذَلِكَ مَخَافَةَ السُّقُوطِ تَحْتَ أَقْدَامِ النَّاسِ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ.

كِتَابَةُ الْقُرْآنِ عَلَى مَا يُفْتَرَشُ وَيُبْسَطُ مَكْرُوهَةٌ، كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.

দেয়ালে লিখিত কুরআনে বিষয়ে শরয়ী বিধি-বিধান নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম এটাকে জায়েযই মনে করেন।আবার কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম এটাকে অপছন্দ করে থাকেন।এজন্য যে,হয়তো তা মানুষের পদতলে পৃষ্ট হতে পারে। (ফাতাওয়ায়ে কাযিখান)এবং বসা বা ঘুমানোর জায়গায় কুরআন লিখা মাকরুহ। (গারাঈব) (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;৫/৩২৩)


অনুপযুক্ত স্থানে কুরআন লিখা অনুচিত।  মসজিদের দেয়ালে অযথা কুরআনের আয়াত না লিখাই ভালো।

ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-১৫/২৬৩


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


ফুকাহায়ে কেরামদের উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল যে, পদপৃষ্ঠ সম্ভাবনাময় স্থানে কুরআন, আল্লাহর নাম লিখা মাকরুহ। যদি দেয়ালে এমনভাবে লিখা হয় যা কখনো পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই, তাহলে তা নাজায়েয হবে না। আর যদি এমন স্থানে লেখা হয় যার দ্বারা সম্মান হানী হয়। তাহলে এটি নাজায়েয হবে।


১. সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আল্লাহর কালামের সম্মান হানী এমন স্থানে বা দেওয়ালে ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি করা বৈধ হবে না। তবে যদি সম্মান হানী না হয় এমন স্থানে লিখা যাবে।

২. হ্যাঁ, এতে অঙ্কনকারীর গোনাহ হবে।

৩. হ্যাঁ, কুরআনের আয়াত ছাড়া আরবী প্রবাদ বাক্য বা আরবীতে সুন্দর সুন্দর কথা বার্তা অথবা বৈধ ছবি কিংবা ডিজাইন ক্যালিগ্রাফি করা বৈধ আছে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...