আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

১) হুজুর আমাদের এখানে সরকার ঘোষনা দিয়েছিলো কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্ররা যারা আছে তাদেরকে মোবাইল দেওয়া হবে। কিন্তুু মোবাইলটা ছাত্ররা আগে নিজে কিনবে। পরবর্তীতে মোবাইল কেনার প্রমান অর্থাৎ মেমো কার্ড টি প্রমান স্বরূপ দিলে ৫০০০ টাকা স্টাইপেন্ড দেয়। কিন্তুু মোবাইল আর কেউ কিনে না। সবাই মেমু কার্ড টি কিনে। তারপরে জমা দিয়ে দেয়। আমিও পেয়েছি। এভাবে। আমি জানি এটা হারাম। এখন এটার কাফফারা কীভাবে আদায় করবো? সরকারী ফান্ডে কীভাবে দিতে হয় জানি না?
২) আমি বিএড ( শিক্ষকতার একটি কোর্স) করি। শুরুতে আমি জানতাম এটা distance মুডে হয়। কিন্তুু যখন stipend এর জন্য যাই কলেজ থেকে আমাদের ফর্ম ফিলাপ করা হয় রেগুলার মুড।  পরে ভুল বুঝি। পরীক্ষার সময় ছাড়া কলেজেও যাই না। কারন আমি একরাজ্যে। কলেজ আরেক রাজ্যে। তাই সরকারকে যখন এই ফর্ম জমা দেই তখন তাতে ৮১% attendance তারা দেয়।  আর পরিবারের বার্ষিক ইনকাম আড়াইলক্ষ টাকা হতে হবে।  উপরে হলে হবে না। আমার পরিবারের বার্ষিক ইনকাম আড়াই লাখ টাকার নিচেই। তবুও আমরা ছাত্ররা সেখানে ৭০০০ টাকা লিখতাম।  যদিও মাসিক ইনকাম আরো বেশি থাকতো। মাসে ২০'০০০ ইনকাম থাকলেও সমস্যা নেই। তবুও stipend পাওয়ার জন্য মিথ্যাটা লিখতাম।তাই টাকাটা আমি মনে করি পুরোই হারাম।  আমরা মার্ক দিয়েও যোগ্য নির্বাচিত হই। ৯০০০০ করে দুইবারে একলক্ষ আশি হাজার টাকা পাই। এখানে তো পুরোই মিথ্যাবাজি হলো। তাছাড়া কলেজে দুই semester করোনাকালীন online এ পরীক্ষা হয়। ঐখানে দশটি সঠিক উত্তরের মাধ্যমে মার্ক ঠিক করা হতো। আমরা দশটিই দেখে দেখে উত্তর করেছি। আর বাকি সেমেস্টারগুলো নকল করিনি। হুজুর এখানে যে দুই সেমিস্টারে সঠিক উত্তর গুলো দেখে দেখে উত্তর করেছি।  তারজন্যও কী stipend হারাম হয়ে যাবে? আর এতটাকা সরকারকে কীভাবে দেবো আমি। অবশ্য সরকারি টাকা দিয়ে কলেজে যাওয়া আসা, কলেজফি এসব মিলিয়ে অনেকটাই সাহায্য হয়েছে। পুরো কলেজ ফি দেওয়া সহজ হয়েছে। বাড়িতে বললে পাত্তাও দেবে না। কী করতে পারি হুজুর পরামর্শ দিন? আমরাও আসলে এতটা ধনী নই।
৩) তখন সবে বান্দার হক বুঝেছিলাম।  প্রতিজ্ঞা করেছিলাম কোনোদিন বান্দার হক্ব নষ্ট করবো না। যা হয়েছে সব ফিরিয়ে দেবো। চেষ্টা করে খুজে খুজে বের করে আমি আদায় করেছি যথাসাধ্য। আসল কথাটা হচ্ছে, আমি হোস্টেলে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আমাদের পাশে একটা বিল্ডিং ছিলো্ সরকার থেকে মাইনরিটিদের ফ্রি কম্পিউটার কোর্স শেখানোর জন্য সেখানে সবাইকে ডাকা হয়। আমিও যাই। বিকেলের দিকে বাড়ি যাওয়ার আগে আমি একবার ঐখানে যাই।  সেখানে programme শেষে

সবাইকে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। তো মিষ্টিগুলো দেখার দায়িত্ব আমাদের উপর ছিলো। আমার সমবয়সী + ১/২ জন সিনিয়র তখন মিষ্টি চুরি করে। আর তারা আমার ব্যাগে সেগুলো ঢুকানোর জন্য তোরজোর শুরু করে। আমি প্রথমে অনেকক্ষন রাজি হইনি। পরবর্তীতে আমি রাজি হয়ে যাই। তারপরে আমি সেটা খাইও। আমারই সবথেকে বেশী গুনাহ হয়। হুজুর কাফফারার বা তাওবার কোনো সুযোগ আছে বলবেন।
আর যদি না থাকে?

1 Answer

0 votes
by (57,030 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

কারোর নিকট বান্দার হক পাওনা থাকলে,প্রথমে উক্ত হক পরিশোধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে। সাধ্যমত চেষ্টা করার পরও যদি সেই হককে আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত প্রাপ্য হক্বকে সেই ব্যক্তির পক্ষ থেকে সদকাহ করে দিবে এবং আল্লাহ তা'আলার নিকট খালিছ নিয়তে তাওবাহ করবে। আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০,

ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)


https://www.ifatwa.info/8668  নং ফাতাওয়াতে বলেছি যে,

অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না।বিদায় এসব পরিত্যাজ্য।

কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ

তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা-২৯)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. আপনি যেই ফান্ড থেকে টাকাটা পেয়েছেন বা সরকারী কোনো ফান্ডে ফেরত দিতে পারেন, তাহলে সেই সরকারী ফান্ডে যদি ঐ পরিমাণ টাকা ফেরত দিতে পারেন তাহলে তা ফেরত দিয়ে দিবেন। অন্যথায় ঐ পরিমাণ টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকাহ করে দিবেন। পাশা পাশি তওবাও করবেন।


২. আপনি অল্প অল্প করে দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। একবারে দিতে হবে না।  আরো জানুন- https://ifatwa.info/85967/

৩. আপনি ঐ কর্তৃপক্ষকে ঐ পরিমাণ টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন। যা চুরি করা হয়েছিলো। তাকে হাদিয়া বলেও দিতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (22 points)
কর্তৃপক্ষ কারা নিশ্চিত জানিনা। যদি বিল্ডিং কর্তৃপক্ষকে দিই তাহলে কী হবে? ঐটাও সরকারী বিল্ডিং

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...