আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in সালাত(Prayer) by (2 points)
নামাজ পরার সময় যদি নামাজ আদায়কারী মহিলার অজান্তেই কোন সতর দেখা যায় যা  মহিলাদের জন্য নামাজে ঢেকে রাখা ফরজ তাহলে কি তার নামাজ আবার পরতে হবে, অথবা যদি কোন মহিলা নামাজ পড়ছে তখন তার চুল দেখা জাই তবে মহিলাতি সেটি তখন-ই জানতে পারলনা তবে পরে তার মনে সন্দেহ হোল তাহলেকি তার জন্য ওই ওয়াক্তের নামাজ পুনরাই আদাই করা আবশ্যক ?

1 Answer

0 votes
by (57,270 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَخْلَدٍ ، نَا أَحْمَدُ بْنُ مَنْصُورٍ زَاجٌ ، نَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ ، أَنَا أَبُو حَمْزَةَ الصَّيْرَفِيُّ وَهُوَ سَوَّارُ بْنُ دَاوُدَ ، نَا عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ جَدِّهِ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - : " مُرُوا صِبْيَانَكُمْ بِالصَّلَاةِ لِسَبْعٍ ، وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا لِعَشْرٍ ، وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ ، وَإِذَا زَوَّجَ أَحَدُكُمْ عَبْدَهُ أَمَتَهُ أَوْ أَجِيرَهُ ، فَلَا يَنْظُرُ إِلَى مَا دُونَ السُّرَّةِ وَفَوْقَ الرُّكْبَةِ ، فَإِنَّ مَا تَحْتَ السُّرَّةِ إِلَى الرُّكْبَةِ مِنَ الْعَوْرَةِ

মুহাম্মাদ ইবনে মাখলাদ (রহঃ) ... আমর ইবনে শুআইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের শিশুদের সাত বছর বয়সে নামাযের (পড়ার) নির্দেশ দাও। তারা দশ বছর বয়সে পদার্পণ করলে নামাযের জন্য (তা না পড়লে) তাদের দৈহিক শাস্তি দাও এবং তাদের বিছানা পথক করে দাও। আর তোমাদের কেউ নিজের দাসকে বা নিজের শ্রমিককে তার দাসীর সঙ্গে বিবাহ দিলে সে যেন তার নাভির নিচ থেকে হাঁটুর উপর পর্যন্ত অঙ্গের প্রতি না তাকায়। কারণ নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত সতর (অবশ্য আবরণীর অঙ্গ)। (সুনানে দারা কুতনি ৮৬৩)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ حَمَّادِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ صَفِيَّةَ ابْنَةِ الْحَارِثِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تُقْبَلُ صَلاَةُ الْحَائِضِ إِلاَّ بِخِمَارٍ " . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو . وَقَوْلُهُ " الْحَائِضُ " . يَعْنِي الْمَرْأَةَ الْبَالِغَ يَعْنِي إِذَا حَاضَتْ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ حَدِيثٌ حَسَنٌ . وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ الْمَرْأَةَ إِذَا أَدْرَكَتْ فَصَلَّتْ وَشَيْءٌ مِنْ شَعْرِهَا مَكْشُوفٌ لاَ تَجُوزُ صَلاَتُهَا . وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ قَالَ لاَ تَجُوزُ صَلاَةُ الْمَرْأَةِ وَشَيْءٌ مِنْ جَسَدِهَا مَكْشُوفٌ . قَالَ الشَّافِعِيُّ وَقَدْ قِيلَ إِنْ كَانَ ظَهْرُ قَدَمَيْهَا مَكْشُوفًا فَصَلاَتُهَا جَائِزَةٌ .

হান্নাদ (রহঃ) ...... আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে মেয়ের ঋতুবতী হওয়ার বয়স হয়েছে, উড়না ব্যবহার করা ছাড়া তার সালাত কবূল হয় না। - ইবনু মাজাহ ৬৫৫, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৭৭ [আল মাদানী প্রকাশনী]

এই বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত এই হাদীসটি হাসান। আলিমগণ এই হাদীস অনুসারে আমল গ্রহণ করেছেন। তাঁরা বলেনঃ কোন সাবালিকা মহিলা যদি তার চুলের কিছু অংশ অনাবৃত রেখে সালাত আদায় করে, তবে তার সালাত হবে না। ইমাম শাফিঈ-এর অভিমতও এ-ই। তিনি বলেনঃ শরীরের কিছু অংশ অনাবৃত রেখে কোন মহিলার সালাত হবে না। তিনি আরও বলেনঃ বলা হয় সালাত আদায়ের সময় যদি কোন মহিলার পায়ের পিঠ খোলা থাকে, তবে তার সালাত আদায় হয়ে যাবে।

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে : বালেগা বা সাবালিকা অর্থাৎ- যে বয়সে পৌঁছলে মেয়েরা ঋতুবতী হয় বা স্বপ্নদোষ হয় কিংবা শারী‘আহ্ পালনের যোগ্য হয় সে বয়সের মেয়ের সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) খিমার বা ওড়না ছাড়া বৈধ বা বিশুদ্ধ হবে না । যে জিনিস কোন জিনিসকে ঢেকে রাখে তাকেই খিমার বলে। পরিভাষায় প্রত্যেক ঐ জিনিসকে খিমার বলে যা মাথাকে ঢেকে রাখে। অত্র হাদীসে খিমার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐ বস্ত্ত যা দ্বারা মহিলারা তাদের মাথা এবং ঘাড় ঢেকে রাখে।

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নারীর মাথা ঢেকে রাখতে হবে। নারীর জন্য সলাতরত অবস্থায় মাথা ঘাড় ঢেকে রাখা ওয়াজিব। এ হাদীসের দ্বারা ঋতুবতী নারীর কথা বর্ণনার দ্বারা স্বাধীন ও দাসী নারীর মধ্যে কোন পার্থক্য করা হয়নি। উভয়েই সমান। এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সলাত বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শরীরের আকর্ষণীয় অংশ বা লজ্জাস্থান ঢাকা শর্ত।

কিছু মানুষের ধারণা, নামায অবস্থায় যদি কোনো মহিলার একটি চুল বের হয়ে থাকে তাহলেও নামায হবে না। তাদের এ ধারণা ঠিক নয়।

নামাযে একটি দুইটি চুল বের হয়ে গেলে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না। কেননা সতরের ক্ষেত্রে মহিলাদের মাথার সমস্ত চুল এক অঙ্গ হিসেবে গণ্য। সুতরাং মাথার সমস্ত চুলের এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি যদি তিনবার সুবহানা রাবিক্ষয়াল আযীম’ বলা পরিমাণ বের হয়ে থাকে তাহলে নামায ফাসেদ হবে; অন্যথায় নয়।

উল্লেখ্য, নামায পড়তে হবে সমস্ত মাথা ঢেকে পূর্ণ সতর্কতার সাথে; যেন চুলের কোনো অংশ বের না হয়ে যায়। -ফাতাওয়া শামী ১/৪০৯; ফাতহুল কাদীর ১/২২৬)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

শরীয়তের বিধান হলো নামাযের মধ্যে সতরের আওতাধীন কোনো একটি অঙ্গের এক চতুর্থাংশ যদি স্বেচ্ছায় খুলা হয়, তাহলে এক মুহুর্তের জন্য খুলা হলেও নামায ফাসিদ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি অনিচ্ছায় এক চতুর্থাংশ খুলে যায়, তাহলে তিন তাসবিহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা) পরিমাণ সময় পর্যন্ত খুলে গেলে নামায ফাসিদ হবে। কিন্তু যদি তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় থেকে কম হয়, কিংবা এক চতুর্থাংশ থেকে কম হয়, তাহলে  নামায ফাসিদ হবে না। অনুরুপ ভাবে নামাজের পরে যদি জানতে পারে যে, নামাযে একটি দুইটি চুল বের হয়ে গিয়েছিল এতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যদি এক চতুর্থাংশ বেশি বের হয়ে যায় এবং এমতাবস্থায় তিন তাসহিব পরিমাণ ছিল তাহলে পুনরায় সালাত আদায় করতে হবে।

আরো বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/5215


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 134 views
0 votes
1 answer 1,010 views
0 votes
1 answer 172 views
0 votes
1 answer 142 views
...