বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনুল কারীম পৃথিবীর সর্বোত্তম ও মর্যাদাবান গ্রন্থ।এই কিতাবে কিছু বৈশিষ্ট্য ও আদাব রয়েছে।তেলাওয়াতের সময় এ সমস্ত আদাবের প্রতি লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত জরুরী।এ আদাব সমূহের মধ্যে একটি হল, জায়গা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া।
ইমাম নববী রাহ, উনার লিখিত কিতাব 'আত-তিবয়ান' এ কুরআন তেলাওয়াতের যাবতীয় আদাব উল্লেখ করেন।সে সব আলোচনার দিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রত্যেক মুসলমানের উচিৎ।তিনি তথায় গোসলখানা ও ইস্তেঞ্জার স্থানে কুরআন তেলাওয়াতের বিষয়টা নিয়ে আসেন।এবং সেক্ষেত্রে আহলে ইলমদের বক্তব্যকে নকল করে উল্লেখ করেন যে, কুরআন তেলাওয়াত পবিত্রতম স্থানে হওয়াই উচিৎ।সেজন্য উলামাগণ মসজিদের ভিতর কুরআন তেলাওয়াতকে পছন্দ করে থাকেন।কেননা সর্বোত্তম পবিত্রতম স্থান হল মসজিদ।এবং গোসলখানায় কুরআনে কারীমের তেলাওয়াত নিয়ে সালাফদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। শাফেয়ী মাযহাবের উলামাগণ বলেন,ইহা মাকরুহ হবে না।এবং এটাকে আবু-বকর ইবনে মুনযির 'আল-ইশরাফ' গ্রন্থে ইবরাহিম নাখয়ী,ও ইমাম মালিক রাহ থেকেও বর্ণনা করেন।এবং এটা হযরত আ'তা রাহ এরও অভিমত।
একদল উলামায়ে কেরাম গোসলখানায় কুরআন তেলাওয়াত কে মাকরুহ বলেছেন।তাদের মধ্য থেকে আবু-দাউদের বর্ণনায় রয়েছে, হযরত আলী রাযি।ইবনুল মুনযির এক জামাত উলামা থেকে বর্ণনা করেন যে,তাদের মধ্য রয়েছেন,আবু-ওয়ায়িল শাক্বিক্ব ইবনে সালামাহ রাহ, শা'বী রাহ, হাসান বসরী রাহ,মাকহুল রাহ, ক্বাবিসাহ ইবনে যুওয়াইব রাহ, এবং আবু-হানিফা রাহ। ইমাম শা'বী রাহ বলেন, তিনটি স্থানে কুরআন তেলাওয়াত মাকরুহ।গোসলখানা, বাথরুম, এবং ঘম বা ধান ভাঙ্গানো হয় এমন কোনো স্থানে।
হযরত আবু মাইসারাহ রাহ থেকে বর্ণিত,কুরআন তেলাওয়াত শুধুমাত্র পবিত্রতম স্থানেই হবে।
শায়খ ইবনে উছাইমিন রাহ কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,
ﻭﺳﺌﻞ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﺍﺑﻦ ﻋﺜﻴﻤﻴﻦ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ :ﻫﻞ ﻳﺠﻮﺯ ﺫﻛﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻤﺎﻡ ؟ .
ﻓﺄﺟﺎﺏ :ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻟﻺﻧﺴﺎﻥ ﺃﻥ ﻳﺬﻛﺮ ﺭﺑﻪ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ﻓﻲ ﺩﺍﺧﻞ ﺍﻟﺤﻤﺎﻡ ، ﻷﻥ ﺍﻟﻤﻜﺎﻥ ﻏﻴﺮ ﻻﺋﻖ ﻟﺬﻟﻚ ، ﻭﺇﻥ ﺫﻛﺮﻩ ﺑﻘﻠﺒﻪ ﻓﻼ ﺣﺮﺝ ﻋﻠﻴﻪ ، ﺑﺪﻭﻥ ﺃﻥ ﻳﺘﻠﻔﻆ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ، ﻭﺇﻻ ﻓﺎﻷﻭﻟﻰ ﺃﻥ ﻻ ﻳﻨﻄﻖ ﺑﻪ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﻮﺿﻊ ﻭﻳﻨﺘﻈﺮ ﺃﻥ ﻳﺨﺮﺝ ﻣﻨﻪ .ﺃﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻣﻜﺎﻥ ﺍﻟﻮﺿﻮﺀ ﺧﺎﺭﺝ ﻣﺤﻞ ﻗﻀﺎﺀ ﺍﻟﺤﺎﺟﺔ ﻓﻼ ﺣﺮﺝ ﺃﻥ ﻳﺬﻛﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻴﻪ .
মানুষের জন্য গোসলখানায় কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করা উচিৎ নয়। কেননা এই জায়গা তেলাওয়াতের উপযুক্ত নয়।আর যদি অন্তর দ্বারা কেউ স্বরণ করে নেয় তাহলে সেটাতে কোনো সমস্যা হবে না।তবে শর্ত হল,যবান দ্বারা উচ্ছারণ করা যাবে না।বাথরুমের বাহিরে ওজুর স্থানে তেলাওয়াত করা যাবে।মাজমুউল ফাতাওয়া-১১/১০৯
বাথরুমে বিসমিল্লাহ পড়া যাবে না,এমনকি বিনা প্রয়োজনে কাশি দেওয়াও মাকরুহ-643
বাথরুমে থাকাবস্থায় আযানের জবাব,সালামের জবাব দেওয়াও জায়েয হবে না।-732