আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
আমি আর আমার স্বামী দুজনে দুজনের পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিলাম । আমরা তাবিজ ব্যবহার করায় আমাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেছে তার আগে সুন্দর ছিল ।আমার স্বামী আর আগের মত আমার কেয়ার করে না,ভরন পোষন দেয় না,আমার পরিবার চায় আমার স্বামী ও তার পরিবার যাতে আমাকে নিয়ে যায়  বাসায় এসে । আবার তারা আমার সাথে যোগাযোগ না করায় বাসায় থেকে তালাক ও দিতে বলে। কিন্তু তালাক ও হচ্ছে না আমরা এক সাথে থাকতেও পারছি না ।তালাকের কথা ছাড়া আমাদের আর কোন কথাই হয় না ।তালাকের কথা উঠলেই মনে অজানা কষ্ট চেপে বসে আর দিতে মন চায় না ।একটু কথা হলেই ঝগড়া লাগে শুধু । তারপর আর ফোন দেয় না সে তালাক দিতে বলে নিজে দেয় না ।আমি কি আমল করতে পারি যাতে স্বামী ও তার পরিবার ভাল হয়ে আমাকে নিয়ে যায়,আমার ভরন পোষন দেয় ।আর আমাদের যেন ছোট খাট কারনেই তালাক নিয়ে কথা না হয় ।
by (6 points)
السلام عليكم و رحمه الله و بر كا ته
আমার স্বামী আমার সাথে কোন যোগাযোগ করে না । ভরন পোষন ও দেয় না । আমি তার কাছে যেতে চাইলে বলে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসো ।আরো অনেক কিছু চায় ।সে নিজে অনেক মেয়েদের সাথে কথা বলে । কিন্তু আমাকে কল দেয় না ।১০ বছর হল এমন করে ।আমি নিজে থেকে তাকে কল দিয়ে তালাক দিতে বললে তালাক ও দেয় না ।  ছোট একটা কিছু বললে ই আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।তালাকে তাফবিজ এর অনুমতি দিয়েছিল কিনা সেটাও আমাকে বলে না ।তার কোন পরিচয় ও আমাকে বলতে চায় না । অথবা কাবিনের ছবি দেয় না যাতে আমি পরে বুঝে তালাক দিতে পারি । যেহেতু আমরা নিজে থেকে বিয়ে করেছি আমাদের পরিবার রাজি ছিল না । এখন এটা নিয়ে আমি এবং আমার পরিবার অনেক কষ্টে আছি ।আমাদের কাবিনে ৫ লাখ টাকা লিখা আমি নিজে থেকে তালাক দিলে কি সেটা আমাকে দেওয়া লাগবে ? 

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

স্বামীর পক্ষ থেকে যে তালাক দেয়া হয় সেটাকে তালাক বলা হয়। আর স্ত্রীর পক্ষ থেকে কাযী সাহেব বা উনার স্থলাভিষিক্ত কারো নিকট তালাক চাওয়ার ভিত্তিতে মালের বিনিময়ে যে বিবাহ বিচ্ছেদ করা হয়, তাকে খোলা বলে। যদি এক তালাকের উপর খোলা হয়ে থাকে,তাহলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। যদি কোনো সংখ্যা লেখা না থাকে, তাহলেও এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। এক্ষেত্রে ঐ স্ত্রীকে নিতে চাইলে,নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

যদি তিন তালাকের উপর খোলা করে থাকে, তাহলে প্রথম স্বামীর জন্য ইদ্দত শেষ হয়ে গেলেও বিবাহ করা জায়েজ হবে না। এক্ষেত্রে তিন তালাকই পতিত হবে।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «جَعَلَ الْخُلْعَ تَطْلِيقَةً بَائِنَةً»

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ খোলাকে এক তালাকে বাইন সাব্যস্ত করেছেন। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪০২৫, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৮৪৪৮, মুজামে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-২৩০, আসসুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৪৮৬৫}

তালাক খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যেআল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

যেহেতু আপনার স্বামী এখনো আপনার সাথে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। তালাক প্রদাণ করেননি। এটি প্রমাণ করে যে, সে আপনাকে ভালবাসে। হয়তো শয়তানের ওয়াসওয়াসার কারণে সে আপনার সাথে এখন এমন করছে। তাই আমি মনে করি যে, আপনি তাকে পূর্ণ ভালবাসা প্রদাণ করুন। তার সাথে যথেষ্ট মায়াবী আচরন করুন। তার সামনে সু-সজ্জিত হয়ে আসুন এবং প্রথম দিনের মত তাকে আগ্রহ ভরে দেখুনএবং সাথে সাথে তাকে আখেরাতের ভয় প্রদর্শন করুনবা ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে সম্মক অবগত করানোর চেষ্টা করুন।

আমরা আপনাকে বিশেষ কয়েকটি নসিহত করবো-

(ক) আপনার স্বামীর দোষত্রুটি সম্পর্কে অন্য কাউকে জানাবেন না। কেননা, গোনাহ গোপন রাখা ওয়াজিব। তাই গোপন রাখার চেষ্টা করুন।

(খ) পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন। তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না। বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকুন। তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করুন।

(গ) তার হেদায়তের জন্য দু'আ করতে থাকুন।

এরপরেও যদি কোনভাবেই পরস্পরে মিল মোহাব্বত না হয় এবং আপনার স্বামী আপনাকে  নিয়ে না যান, তাহলে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের আলোচনা সাপেক্ষে সুন্নত তরিকায় বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারেন অর্থাৎ আপনার স্বামী আপনাকে এক তালাক প্রদান করবেন এবং আপনি ইদ্দত সম্পন্ন করে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...