আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
১/ আমি ওয়েবসাইটে দুলহান তেল সম্পর্কে কয়েকটা লিখাই দেখেছি তবে আমি ক্লিয়ার হইনি। আমার ফুপু একসময় দুলহান তেল ব্যবহার করত যখন ছোট ছিলাম অনেক আমি।তখন দেখছিলাম এ তেল ব্যবহাদ করলে হাতে লাগলে/জামায় লাগলেও জামা কালো হয়ে যায় সাথেই নষ্ট হয়ে যায়।আমার আম্মু বলছিল তখন  এটা নাকি কালার।অনেকেই বলে যে এটা তেল না এটা কালারই।আর আমি নিজে যতদূর জানি কোনো তেলই এমন হয়না যে, এভাবে জামা নষ্ট করবে আর দেয়ার পরব কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে সাথেই এত চুল কালো করবে।


২/ এক বোনের প্রশ্ন-

আমি বিবাহিত।বয়স ২২ বছর রানিং।একটা বাবু আছে।বিয়ের বয়স ৪ বছর হবে কিছুদিন পর।এখন আমার হাসবেন্ডের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল না।তার বাড়িঘর নাই।বাবা দিবেনা।আর বড় সমস্যা হলো তার শারিরীক সমস্যা।শারিরীক ভাবে অক্ষম।তার ফ্রেন্ডদের সামনে আমাকে ফেস করতে চাইতো বাট আমি ইগনোর করতাম।এর ভিতর অনেক মারধর করতো বা করে।গত ২২ তারিখেও করেছে।এখন আমার আর কিচ্ছু ভালো লাগেনা।হাসবেন্ডের সাথে আমার শারীরিক কোনো সম্পর্ক নেই। তার কোনো ফিলিংস নেই। এই অবস্থায় আমার অনেক খারাপ চিন্তা ভাবনা আসে।কি করব আমি? ইসলাম এই বিষয়ে কি বলে?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/101392/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, স্বামীর পক্ষ থেকে যে তালাক দেয়া হয় সেটাকে তালাক বলা হয়। আর স্ত্রীর পক্ষ থেকে কাযী সাহেব বা উনার স্থলাভিষিক্ত কারো নিকট তালাক চাওয়ার ভিত্তিতে মালের বিনিময়ে যে বিবাহ বিচ্ছেদ করা হয়, তাকে খোলা বলে। যদি এক তালাকের উপর খোলা হয়ে থাকে,তাহলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। যদি কোনো সংখ্যা লেখা না থাকে, তাহলেও এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। এক্ষেত্রে ঐ স্ত্রীকে নিতে চাইলে,নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

যদি তিন তালাকের উপর খোলা করে থাকে, তাহলে প্রথম স্বামীর জন্য ইদ্দত শেষ হয়ে গেলেও বিবাহ করা জায়েজ হবে না। এক্ষেত্রে তিন তালাকই পতিত হবে।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «جَعَلَ الْخُلْعَ تَطْلِيقَةً بَائِنَةً»

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ খোলাকে এক তালাকে বাইন সাব্যস্ত করেছেন। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪০২৫, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৮৪৪৮, মুজামে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-২৩০, আসসুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৪৮৬৫}

তালাক খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যেআল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়।

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. আপনার প্রথম প্রশ্নটি অস্পষ্ট। অনুগ্রহপূর্বক আপনার প্রশ্নটি ক্লিয়ার করবেন।

২. প্রশ্নকারী বোনের প্রতি আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, যেহেতু আপনার স্বামী এখনো আপনার সাথে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। তালাক প্রদাণ করেননি। এটি প্রমাণ করে যে, সে আপনাকে ভালবাসে। হয়তো শয়তানের ওয়াসওয়াসার কারণে সে আপনার সাথে এখন এমন করছে। তাই আমি মনে করি যে, আপনি তাকে পূর্ণ ভালবাসা প্রদাণ করুন। তার সাথে যথেষ্ট মায়াবী আচরন করুন। তার সামনে সু-সজ্জিত হয়ে আসুন এবং প্রথম দিনের মত তাকে আগ্রহ ভরে দেখুন এবং সাথে সাথে তাকে আখেরাতের ভয় প্রদর্শন করুন বা ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে সম্মক অবগত করানোর চেষ্টা করুন। সেই সাথে তার শারিরীক সমস্যার জন্য তাকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলুন। আরো জানুন: https://ifatwa.info/66838/

আমরা আপনাকে বিশেষ কয়েকটি নসিহত করবো-

(ক) আপনার স্বামীর দোষত্রুটি সম্পর্কে অন্য কাউকে জানাবেন না। কেননা, গোনাহ গোপন রাখা ওয়াজিব। তাই গোপন রাখার চেষ্টা করুন।

(খ) পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন। তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না। বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকুন। তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করুন।

(গ) তার হেদায়তের জন্য দু'আ করতে থাকুন।

এরপরেও যদি কোনভাবেই পরস্পরে মিল মোহাব্বত না হয় এবং আপনার স্বামী আপনার সাথে ন্যায় সঙ্গত আচরণ না করে, তাহলে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের আলোচনা সাপেক্ষে সুন্নত তরিকায় বিবাহ বিচ্ছেদ করতে পারেন অর্থাৎ আপনার স্বামী আপনাকে এক তালাক প্রদান করবেন এবং আপনি ইদ্দত সম্পন্ন করে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (56 points)
ওস্তাদ প্রথম প্রশ্নতে বলতে চেয়েছি যে,দুলহান তেল দেয়াটা কি জায়েজ হবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...