আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
250 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম। 
হিদায়াত ও গোমরাহী সম্পর্কে ৩টি আক্বীদাহ-
১।আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল পথ দেখান,আর যাকে ইচ্ছা গোমরাহীর উপর ছেড়ে দেন।

২। তাই বলে এটা বলা যাবে না যে,কাফির আল্লাহর ইচ্ছাতেই কাফির হয়ে থাকলে তার দোষ কী?একইভাবে এটাও বলা যাবে না যে,মুমিন আল্লাহর ইচ্ছায় মুমিন হয়ে থাকলে তার কৃতিত্ব কী?কেননা, আল্লাহ তাকেই হিদায়াত দিয়েছেন যে হিদায়াত পাওয়ার উপযুক্ত।একইভাবে, তিনি তাকেই পথভ্রষ্ট করেছেন যে পথভ্রষ্ট হওয়ার উপযুক্ত। কে কিসের জন্য উপযুক্ত,তা আল্লাহ তার ক্ষমতা ও ইলম এর মাধ্যমে আগে থেকেই জানেন।

৩।কখনো এমন হয় না যে, কেউ মুমিন হওয়ার উপযুক্ত কিন্তু আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেন।কারণ এমন কিছু হলে আল্লাহর দ্বারা যুলুম সংঘটিত হয়ে যায়।অথচ আল্লাহ যুলুমকে নিজের জন্য হারাম করেছেন।

উপরে উল্লেখিত ৩টি আক্বীদাহ কি সঠিক?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা কাসাসের ৫৬ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

اِنَّکَ لَا تَہۡدِیۡ مَنۡ اَحۡبَبۡتَ وَ لٰکِنَّ اللّٰہَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ ۚ وَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۵۶﴾

নিশ্চয় তুমি যাকে ভালবাস তাকে তুমি হিদায়াত দিতে পারবে না; বরং আল্লাহই যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দেন। আর হিদায়াতপ্রাপ্তদের ব্যাপারে তিনি ভাল জানেন। 
,
এই আয়াত ঐ সময় অবতীর্ণ হয় যখন নবী (সাঃ)-এর হিতাকাঙ্ক্ষী চাচা আবু তালেবের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসে। তখন তিনি চেষ্টা করলেন যাতে চাচা একবার নিজ মুখে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বাণী উচ্চারণ করুক, যাতে পরকালে আল্লাহর সামনে তার ক্ষমার জন্য সুপারিশ করতে পারেন। কিন্তু সেখানে কুরাইশ নেতাদের উপস্থিতির কারণে আবূ তালেব ঈমান আনয়নের সৌভাগ্য হতে বঞ্চিত থাকে এবং কুফরের উপরই তার মৃত্যু হয়। 

নবী (সাঃ) এর জন্য অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। এই সময় মহান আল্লাহ এই আয়াত অবতীর্ণ করে স্পষ্ট করে দিলেন যে, তোমার কাজ কেবলমাত্র পৌঁছিয়ে দেওয়া ও আহবান করা। আর হিদায়াত দান করা আমার কাজ। হিদায়াত সেই ব্যক্তিই লাভ করে থাকে, যাকে আমি হিদায়াত দান করি। তুমি যাকে হিদায়াতের উপর দেখতে পছন্দ কর, সে হিদায়াত পায় না। (বুখারীঃ সূরা কাস্বাসের তাফসীর পরিচ্ছেদ, মুসলিমঃ ঈমান অধ্যায়)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
শরীয়তের বিধান হলো তাকদীর সম্পর্কে আলোচনা পর্যালোচনা করা ঠিক নয়।

তাকদীর বিষয়ে আলোচনা করার অনুমতি নেই। 

খোদ রাসুল ছাহাবায়ে কেরামদেরকেই এ সম্পর্কে আলোচনা করতে নিষেধ করেছেন,আর আমরা তো দূর্বল ঈমানদার।

হাদীসে পরিস্কার নিষেধাজ্ঞা এসেছে-

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ، فَذَكَرَ لَهَا شَيْئًا مِنَ الْقَدَرِ، فَقَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ تَكَلَّمَ فِي شَيْءٍ مِنَ الْقَدَرِ سُئِلَ عَنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ لَمْ يَتَكَلَّمْ فِيهِ لَمْ يُسْأَلْ عَنْهُ»

হযরত ইয়াহইয়া বনি আব্দুল্লাহ বিন আবী মুলাইকা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি একদা হযরত আয়শা রাঃ এর নিকট গেলেন। তখন তিনি তাকদীর বিষয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করেন, তখন হযরত আয়শা রাঃ বলেন, আমি রাসুল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি তাকদীর বিষয়ে কথা বলে, কিয়ামতের ময়দানে এ কারণে সে জিজ্ঞাসিত হবে। আর যে এ বিষয়ে আলোচনা না করবে, তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে না। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮৪}
,
মানুষ দুনিয়াতে বান্দা ভাল  এবং মন্দ উভয় কাজের জন্য স্বাধীন। এখানে আল্লাহ তাআলা কাউকে কোন কাজ করতে বাধ্য করেন না সরাসরি। বাকি বান্দা কী করবে? তা আল্লাহ তাআলা আগে থেকেই জানেন। সেই হিসেবে আগেই সব কিছু লিখে রাখা হয়েছে। আল্লাহ তাআলার উক্ত লিখে রাখার দ্বারা বান্দার কাজে কোন প্রভাব সৃষ্টি করে না। তা’ই বান্দা তার কর্ম অনুপাতে বদলা পাবে। ভা করলে ভাল। আর মন্দ করলে মন্দ। 
,
আর বান্দা যেহেতু জানে না, আল্লাহ তাআলা কী লিখে রেখেছেন, তাই বান্দার উচিত ভাল কর্ম করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকা। এবং মন্দ কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখা। আর এ বিষয়ে অতিরিক্ত আলোচনা মোটেই উচিত নয়। 
,
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আমরা বলবো যে মানুষ ঈমান আনবে নাকি কাফের থাকবে,এটি বান্দার ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ। 
মানুষ চেষ্টা করলে আল্লাহর ইচ্ছায় অবশ্যই ঈমান আনতে পারবেই।
কারন এতে (চেষ্টার কারনে)  আল্লাহ তাকে মুমিন বানাবেই,
এতে কোনো সন্দেহ নেই।
,
বাকি মানুষ চেষ্টা করবে কি করবেনা(যেটির ভিত্ততেই সে মুমিন বা কাফের হবে),সেটি আল্লাহ তায়ালা আগে থেকেই জানেন।
এটি আল্লাহ তায়ালার সর্বোচ্চ জ্ঞানী হওয়ার কারনে,আল্লাহ তায়ালা আগে থেকেই তাহা জানতেন।
,
সর্বপরি বলবো যে এগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা ঠিক নয়।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...