আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আজকে আমার বন্ধুদের সাথে ( যারা মিউজিশিয়ান) তাদের সাথে বাদ্যযন্ত্রের ব্যাপারে তর্ক হচ্ছিলো । তাদের সাথে তর্ক করতে গিয়ে আমি এক প্রকার বলে ফেলি কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্র বাজানো কুফুরিও হতে পারে। তখন আমার বন্ধুরা এ বিষয়ে হাদিস চাইলো যে কোন টাইপের বাদ্যযন্ত্র বাজালে কুফুরি হতে পারে।

তাই আন্দাজে এই কথা বলার কারণে এই বিষয় কনফর্ম হওয়ার জন্য প্রশ্ন

আমরা জানি ইসলামে বাদ্যযন্ত্র হারাম এটা জানা সত্যও অনেকে এই গানবাজনার সাথে জড়িত

কিন্তু আমি কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্রের কথা বলছি যেটা বাজালে কুফুরি পযন্ত্য হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা।


যেমন:- বাঁশি (অর্গান), বিনা ( ইংরেজিতে হার্প বলে), ট্রাম্প ইত্যাদি

যেগুলোর ছবি :- https://drive.google.com/file/d/1xoiLR6KqM6KbXYgRzbnlTQvAhUi4-ubF/view?usp=sharing


এই বাদ্যযন্ত্র বাজানো কুফুরি এজন্যই বললাম।

যেমন বাঁশি নামে বাদ্যযন্ত্র টি হিন্দু ও খ্রিষ্টানরা তাদের ভগবানকে পূজা করার জন্য ব্যবহার করে, তারা মনে করে এটা বাজালে ভগবানের আশীর্বাদ পাওয়া যাবে। তাছাড়া বাঁশি নামে বাদ্যযন্ত্র খ্রিষ্টানদের বাইবেলে লেখা আছে ।

এবং এখানে যত বাদ্যযন্ত্রের কথা বললাম সব খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্মের ধর্মীয় একটি অংশ।

এখন কোনো মুসলিম যদি এই বাদ্যযন্ত্র গুলি ( বাঁশি, বিনা, ট্রাম্প, অর্গান) বাজিয়ে থাকে । অথবা এগুলোর সফটওয়্যার ভার্সন বাজিয়ে মিউজিক তৈরি করে, মিউজিক গুলা বিক্রি করে থাকে তাহলে সেটা দারা কি কুফুরি হবে?

মানে এসব বাদ্যযন্ত্র তো খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্মের অংশ তো এগুলা বাজালে তাদের ধর্মকে অনুসরণ করার মতো ব্যাপার হবে না?


তাই আমার প্রশ্ন

১) হানাফি ফিক অনুসারে এমন কোনো হাদিস আছে যেখানে বলা আছে কিছু বাদ্যযন্ত্র বাজালে কাফের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে ?

২) যে সমস্ত বাদ্যযন্ত্রের কথা বললাম (( বাঁশি, বিনা, ট্রাম্প, অর্গান)) কোনো মুসলিম যদি এই বাদ্যযন্ত্র গুলি বাজিয়ে থাকে । অথবা এগুলোর কম্পিউটার সফটওয়্যার ভার্সন বাজিয়ে মিউজিক তৈরি করে, মিউজিক গুলা বিক্রি করে থাকে তাহলে সেটা দারা কি কুফুরি হবে? মানে এসব বাদ্যযন্ত্র তো খ্রিষ্টান ও হিন্দু ধর্মের অংশ তো এগুলা বাজালে তাদের ধর্মকে অনুসরণ করার মতো ব্যাপার হবে না?

বাঁশি, বিনা, ট্রাম্প, অর্গান এ সমস্ত বাদ্যযন্ত্রের কথা খ্রিষ্টানদের বাইবেলে লেখা আছে।

৩) আমাদের নবিজি বাদ্যযন্ত্রকে হারাম বলার পাশাপাশি আর কিছু বলেছে? যেমন বাদ্যযন্ত্রের যারা বাজায় তারা আমার উন্মত না এমন টাইপের কথা।

1 Answer

0 votes
by (57,240 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামে গান বাজনা সম্পূর্ণভাবে হারাম, কবীরাহ গুনাহ। তওবা না করলে কোনোভাবেই মাফ হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ ইবনে আসাকির হযরত আনাস রাঃ সূত্রে বর্ণনা করেন,রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেন

من استمع قينة صب في أذنيه الآنك يوم القيامة)(ضعیف الجامع الصغیر للالبانی حدیث:4510 والضعیفه حديث:4549

যে ব্যক্তি কোন গায়কের নিকট বসে গান শুনলো, কিয়ামতের দিন  আল্লাহ্ পাক তার কানে গলিত সীসা ঢেলে দিবেন। (যয়ীফুল জামিউস সাগির লিল আলবানী ৪৫১০)

اَلْغِنَائُ یَنْبِتُ الْنِّفَاقَ فِی الْقَلْبِ کَمَا یُنْبِتُ الْمَاءُ الْبَقْلَ۔‘ (السنن الکبری للبیهقی،رقم:۲۱۰۰۸، سنن ابی داؤد،بَابُ کَرَاهِیَةِ الْغِنَاء ِ وَالزَّمْرِ،رقم:۴۹۲۷)

রাসুল সাঃ বলেন  গান বাজনা কলবে নিফাক সৃষ্টি করে,যেমনভাবে পানি শষ্য উৎপাদন করে।

আব্দুল্লাহ ইবন আমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ نَهَى عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَالْكُوبَةِ وَالْغُبَيْرَاءِ وَقَالَ كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ

রাসূলুল্লাহ শরাব পান করতে, জুয়া খেলতে, ঢোল বা তবলা বাজাতে এবং ঘরের তৈরী শরাব পান করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তুই হারাম। (আবু দাউদ ৩৬৪৪)

আবু হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

إِذَا اتُّخِذَ الْفَئُْ دُوَلاً، وَالأَمَانَةُ مَغْنَماً، والزَّكَاةُ مَغْرَماً، وَتُعُلَّمَ الْعِلْمُ لِغَيْر الدِّين، وَأَطَاعَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ، وَعَقَّ أُمَّهُ، وأَدْنَى صَدِيقَهُ، وأُقْصَى أبَاهُ، وظَهَرَتِ الأصْوَاتُ فى المسَاجدِ، وسَادَ الْقَبيلَةَ فَاسِقُهُمْ، وَكانَ زَعِيمَ الْقَوْمِ أَرْذَلُهُمْ، وَأُكْرِمَ الرَّجُلُ مخَافَةَ شَرِّهِ، وَظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالمَعَازِفُ، وشُرِبَتِ الْخَمْرُ، وَلَعَنَ آخِرُ هذِهِ الأُمَّةِ أَوَّلهَا، فَلْيَرْ تَقِبُوا عِنْدَ ذلِكَ رِيحاً حَمْرَاءَ، وَزَلْزَلَةً وَخَسْفاً، وَمَسْخاً، وَقَذفاً، وآيَاتٍ تتابع كَنِظَامٍ بَالٍ قُطِعَ سِلْكُهُ فَتَتَابَعَ

গনীমত সম্পদ যখন ব্যক্তিগত সম্পদ বলে গণ্য করা হবে, যাকাত হবে জরিমানা বলে, দ্বীনী উদ্দেশ্য ছাড়া ইলম অর্জন করা হবে, পুরুষরা স্ত্রীদের আনুগত্য করবে, এবং মা‘দের অবাধ্য হবে, বন্ধুদের নিকট করবে আর পিতাকে করবে দূর, মসজিদে শোরগোল করবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হয়ে বসবে, নিকৃষ্ট লোকেরা সমাজের নেতা হবে, অনিষ্টের আশংকায় একজনকে সম্মান করা হবে, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদ্যপান দেখা দিবে, উম্মতের শেষ যুগের লোকেরা প্রথম যুগের লোকদেরকে অভিসম্পাত করবে তখন তোমরা অপেক্ষা করবে অগ্নিবায়ু, ভূমিকম্প, চেহারা বিকৃতি, পাথর বর্ষণের আযাবের এবং আরো আলামতের যা পরপর নিপতিত হতে থাকবে, যেমন একটি পুরান হারের সূতা ছিড়ে গেলে একটার পর একটা দানা পড়তে থাকে। (তিরমিযী ২২১৪)

আরো জানুনঃ  https://ifatwa.info/13605/

নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বাজনাদার নুপুর পরে কোনো বালিকা আসলে আয়েশা রা. বললেন, খবরদার, তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।-সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদীস : ৫২৩৭

সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজা, ঘুঙুর হল শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২১১৪

মৃদু আওয়াজের ঘণ্টি-ঘুঙুরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আধুনিক সুরেলা বাদ্যযন্ত্র, মিউজিকের বিধান কী হবে তা খুব সহজেই বুঝা যায়।

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/16375/

https://ifatwa.info/13605/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. হানাফী মাযহাবে বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা মিউজিক ব্যবহার করা হারাম এবং কবীরা গুনাহ, যার ভয়াবহ শাস্তির কথা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। যারা উক্ত কাজ করবে তারা ফাসেক তবে কাফের নয়। উক্ত বিষয়ে বিভিন্ন মাযহবের মতামত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/82035/

২. উক্ত কাজগুলো ফাসেকদের কাজ, তারা গুনাহে কবীরাতে লিপ্ত। তবে কাফের নয়।

৩. এই মর্মে বিভিন্ন হাদীস উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আপনি উপরে প্রদত্ত লিংকগুলো থেকে আরো জানতে পারবেন ইশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (19 points)
ধন্যবাদ, ফাসেক মানে আইন ভঙ্গকারী কে বোঝায়? মানে জারা আল্লাহর আইন ভঙ্গ করে তাদেরকেই কি ফাসেক বলে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...