আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকু।। একটু লম্বা হবে লিখাটা।আফুয়ান।বোঝার সুবিধার্তে বিস্তারিত লিখতে হচ্ছে।আমার মা-বাবার ডিভোর্স হয়েছে গত বছর।আমি আমার মাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকি।বর্তমান ৪ মাস যাবত একটা চাকরী পেয়েছি ১১ হাজার টাকার।এর আগে ৫০০০/- টিউশন দিয়ে চলেছি।বাসা ভারা ছিল ৬০০০/-।কিভাবে যে দিনগুলো পার করেছি আল্লাহ ছাড়া কেউ বুঝবে না আলহামদুলিল্লাহ।আমার বাবা বেকার,তিনি ক্যন্সারে আক্রান্ত।তিনি বিদেশে থাকতেন আগে কিন্তু বর্তমানে দেশে বেকাত অবস্থায় আছেন।বিদেশে আব্বু জমানো টাকা দিয়ে কয়েকদিন ক্যন্সারের চিকিৎসা করেন।পরে একটা ডাক্তার অর্র্ধেক টাকায় ক্যন্সার অপারেশন করিয়ে দেয়,বলেছিল এখন শুধু একটু রেডিওথেরাপি লাগবে।বাংলাদেশে ডাক্তারও রিপোর্ট দেখে বললেন শুধু রেডিওথেরাপি দিলে হবে।কিন্তু টাকার অভাবে অনেক মাস কেটে যায়।রেডিওথেরাপির ব্যবস্থা করা অসম্ভব হয়ে যায়।আমি আর আম্মু আমার অল্প টিউশনের টাকা দিয়ে কোনোভাবে দিন যাপন করছিলাম,আলহামদুলিল্লাহ কিছু প্রিয় দ্বীনি বোন মাসিক বাজার পাঠাতেন।অইদিকে আমার আব্বুর কাছে যেহেতু টাকা ছিল না তাই উনি একদিন চাচার বাসায় তো আরেকদিন ফুফীর বাসায় খাওয়া দাওয়া করেন।আব্বুর অসুস্থতা আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছিলো।তাই আমি একজন বোন থেকে রেডিওথেরাপির জন্য টাকা চেয়েছিলাম।আপু ৫০০০০/- টাকা দিয়েছিলেন।কিছু আত্নীয়ও বলেছিল তারা হেল্প করবে।কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ভিন্ন ছিল।ডাক্তারের কাছে রেডিওথেরাপির জন্য গেলে উনি আরেকটা ডাক্তার রেফার করেন।সে ডাক্তার আবার টেস্ট করাতে বলেন।টেস্টগুলো করা হয়েছিল।এইদিকে আমি হঠাৎ খুব জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যায়।টাকার অভাবে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছিলাম না।পরে কোনদিক থেকে টাকা জোগাড় না করতেপেরে আব্বুর সেই দানকৃত টাকা থেকে ১০০০০/- আব্বুর থেকে ধার নেয় ডাক্তার দেখানোর জন্য।তখন একটা চাকরীতে জয়েনিং এর কথা চলছিল।ভেবেছিলাম চাকরীটা হলে আব্বুকে ২ দফা বা ৩ দফায় টাকা দিয়ে দিব।পরে আমার নিউমোনিয়া ধরা পরে।আব্বু হাসপাতালে গিয়ে ওষুধ,খাবার ইত্যাদির পেছনে আরো ৮০০০/- বা ১০০০০/- বায় করেন।অই খরচ টা করতে আমি বলিনি।তখন আমি হাসপাতালে ভারী ভারী ইঞ্জেকশন এর প্রভাবে একপ্রকার বেহুস অবস্থায় শুয়ে ছিলাম।আব্বু এই টাকাগুলে যে দানকৃত টাকা থেকে খরচ করছে সেটা ভাবার বা আব্বু থেকে জিজ্ঞেস করার হুশে ছিলাম না।পরে বিষয়টি জানতে পারি।এরপর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে ১০ দিনের মাথায় আমার পায়ের হাড় ভেংগে যায় একটা দূর্ঘটনার কারণে।চাকরীতে জয়েন করতে পারিনি।প্রায় ২.৫ মাস বেড রেস্ট ছিলাম।এর মাঝে ডাক্তার যে টেস্ট দিয়েছিল সেগুলু চলে আসে।আব্বুর আবার ক্যন্সার ধরা পরে।আব্বুকে ডাক্তার আরো একটা টেসট করাতে বলেন।যেটার দাম ২৫০০০/-।শরীরের বুকের অংশ থেকে মাংস নিয়ে এই টেস্ট হয়।নামটা ঠিক জানি না।কিন্তু ইতোমধ্যে দানকৃত টাকা থেকে অনেক খরচ হয়ে যায় প্লাস আব্বু যেহেতু বেকার ছিলা।খাবার এর পেছনেও টাকা ব্যয় করেন আব্বু।দানকৃত টাকা থেকে আর মাত্র ১০০০০/-  বা ১৫০০০/- বাকি ছিল।আত্নীয় যারা হেল্প করবে বলেছিল তারা করেনি।তাই চিকিৎসা আর চালানো সম্ভব হয়নি।এইদিকে আমিও একের পর এক অসুস্থতায় পরি।চাকরী এখন হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।কিন্তু আমার অনেক টাকা ঋন হয়ে গেছে।যেটা আমি অল্প অল্প করে শোধ করছি।আমার আব্বুর কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছিলাম।সেটাও অল্প অল্প করে দিচ্ছি।

কিন্তু যে বোন টাকা দিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য উনি বলছেন এইটা হ্বক নষ্ট হয়েছে।চিকিৎসার টাকা অন্য খাতে ব্যয় করে।আমাকে টাকা জোগাড় করে আব্বুর চিকিৎসা করাতে বলেছে।তাহলেই হ্বক আদাগ হবে নাহলে হবে না।কিন্তু আমি তো মাদ্রাস্র একজন জুনিয়র টিচার।আমার পক্ষে ৫০০০০/- জোগাড় করা অসম্ভব।উনি এইভাবে বলার পর আমার অনেক কান্না পাচ্চগে।আমি কি আসলেই অন্যায় করেছি?

এখন আমি কি করতে পারি?আমার তো টাকা জোগাড় কোনো রাস্তা নেই।বর্তমানে শিক্ষকতা আর টিউশন করে মাস শেষে ১৬০০০/- পাই।এর মধ্যে ঘর ভাড়া যায় ৬৩০০/-।এর পর বাকি টাকা থেকে মাসে আমার ১৫০০/- ঋন দিতে হয়।বর্তমানে আমার টন্সিলের সমস্যা আছে।ওষুধ খেয়ে যাছি।ডাক্তার বলেছেন অপারেশন লাগবে।কিন্তু আমার টাকা নেই অপারেশন করানোর।বাকি টাকা দিয়ে মাসিক খরচ চালাই।বেশি থেকে বেসি হয়তো আমি যে টাকা নিয়েছিলাম সেটা এক মাস না খেয়ে থেকে দিতে পারবো।কিন্তু ৫০০০০/- তো আমি জোগাড় করতে পারবো না।আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।কি করবো বুঝতে পারছি না।প্লিজ জানাবেন আমার কি গুনাহ হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ " 
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না। (তালখিসুল হাবীর-১২৪৯) আরো জানুন- 3747 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
ঐ বোন আপনার আব্বুর চিকিৎসা ব্যয়ের জন্য ঐ টাকাগুলো আপনার আব্বুকে দিয়েছেন। এই দেওয়ার উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি কি? এখানে কি তিনি আপনার আব্বুকে মালিক বানিয়ে দিয়েছেন? না শুধুমাত্র আপনার আব্বুর চিকিৎসার জন্য ঐ টাকাগুলো মুবাহ করে দিয়েছেন?
সমাজের প্রচলন এটাই যে, এক্ষেত্রে মালিক বানিয়ে দেয়া হয়। সুতরাং এই টাকাগুলোর মালিক আপনার আব্বু। তিনি যদি স্বেচ্ছায় এই টাকাগুলো নিজের চিকিৎসায় ব্যয় না করে বরং আপনাকে দিয়ে দেন, তাহলে আপনার জন্য ঐ টাকাগুলো হালাল হবে। তবে  যেহেতু মুবাহ করে দেওয়ার বিষয়টিও রয়েছে, তাই আপনি ঐ বোনকে জিজ্ঞাসা করে নিবেন, তিনি যদি মুবাহ করে দেওয়ার কথা বলেন, তাহলে এই টাকা আপনার আব্বুর চিকিৎসায়-ই ব্যয় হতে হবে। আপনার চিকিৎসায় ব্যয় হয়ে থাকলে আপনি ধীরে ধীরে আপনার আব্বুকে দিয়ে দিবেন। যদি আপনার পরিশোধ করার পূর্বে (আল্লাহ না করুক)আপনার আব্বুর মৃত্যু হয়ে যায়, তাহলে আপনি ঐ বোনকে টাকাগুলো দিয়ে দিবেন। অথবা তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...