আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
98 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (62 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন মেয়ে হিসেবে যথেষ্ট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকি। কিন্তু আমার হাজব্যান্ড পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার ব্যাপারে খুব উদাসীন। আমি অনেক বলেও তাকে পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতন করতে পারিনি। যেমন প্রতিদিন গোসল করেনা, ঘামের দুর্গন্ধ থাকে, ঘাম লেগে শরীর চটচটে থাকে,  সাম্প্রতিক হিট ওয়েভের সময়েও তিনি প্রতিদিন গোসল করতেন না,  খাবারের পর মুখে বাজে গন্ধ থাকে, কুলি করেন না, পায়ের তলা নোংরা থাকে।

এখন আমি এসব নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি যখন শারীরিক সম্পর্ক করতে চান তখন। নোংরা অবস্থায় আমার কাছে আসলে বা জড়িয়ে ধরতে চাইলে আমার খুবই ঘৃনা লাগে। বহুত বলেছি, বুঝিয়েছি, আমার কথা তোয়াক্কাও করেনা।
আমি কখনোই শারিরীক সম্পর্ক করব না তা বলিনা। বলি যে ঘনিষ্ঠ হওয়ার আগে কিছু শর্ত আছে যেটা হল পরিষ্কার হয়ে আসো। কখনো আসে,  কখনো আসেনা।
এখন প্রশ্ন হল,  আমি তো শারীরিক সম্পর্ক করবনা তা বলছিনা,  শুধু সে নোংরা থাকে বলে শর্ত দিচ্ছি যে পরিষ্কার হয়ে আসো, এতে কি আমার গুনাহ হবে?  আমার এই কথায় সে যদি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?  কিন্তু তার অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় আমার ঘনিষ্ঠ হতে খুবই মেন্টাল টর্চার লাগে। ইসলামে  এইক্ষেত্রে মেয়েদের ভাষ্যর কি কোন মূল্য আছে বা কি মুল্য আছে?
( আমি স্বামীর শারিরীক হক সংক্রান্ত হাদিসগুলো নিয়ে জানি আলহামদুলিল্লাহ, তাই গুনাহ হবে কিনা একটু চিন্তায় আছি, কিন্তু অপরিচ্ছন্ন অবস্থা নিয়ে কিছু করতেও ঘেন্না লাগে)

দয়া করে একটু সুচিন্তিত মতামত দিলে কৃতজ্ঞ হই।  পুনশ্চ,  আমার হাজব্যান্ড আমার সাথে অত্যন্ত একরোখা,, একগুয়ে আচরণ করে,  ওয়াইফ হিসেবে আমার কোন মতামত তার কাছে মুল্য পায় না)

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তা'আলা স্ত্রীর সাথে সদ্ভাবে বসবাসের আদেশ দিয়েছেন-

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﻳَﺤِﻞُّ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥ ﺗَﺮِﺛُﻮﺍْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﻛَﺮْﻫًﺎ ﻭَﻻَ ﺗَﻌْﻀُﻠُﻮﻫُﻦَّ ﻟِﺘَﺬْﻫَﺒُﻮﺍْ ﺑِﺒَﻌْﺾِ ﻣَﺎ ﺁﺗَﻴْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﻳَﺄْﺗِﻴﻦَ ﺑِﻔَﺎﺣِﺸَﺔٍ ﻣُّﺒَﻴِّﻨَﺔٍ ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑِ ﻓَﺈِﻥ ﻛَﺮِﻫْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﻓَﻌَﺴَﻰ ﺃَﻥ ﺗَﻜْﺮَﻫُﻮﺍْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻭَﻳَﺠْﻌَﻞَ ﺍﻟﻠّﻪُ ﻓِﻴﻪِ ﺧَﻴْﺮًﺍ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ

হে ঈমাণদারগণ! বলপূর্বক নারীদেরকে উত্তরাধিকারে গ্রহন করা তোমাদের জন্যে হালাল নয় এবং তাদেরকে আটক রেখো না যাতে তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ তার কিয়দংশ নিয়ে নাও; কিন্তু তারা যদি কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতা করে! নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছ, যাতে আল্লাহ, অনেক কল্যাণ রেখেছেন।(সূরা নিসা-১৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنَ كِبْرٍ» . فَقَالَ رَجُلٌ: إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَنًا وَنَعْلُهُ حَسَنًا. قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ. الْكِبَرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاس» . رَوَاهُ مُسلم

আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার অন্তরে এক বিন্দু অহংকার আছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রসূল! সকলেই তো এটা পছন্দ করে যে, তার পোশাক ভালো হোক, জুতো জোড়া ভালো হোক, এসব কি অহংকারের মধ্যে শামিল? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা নিজেও সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দও করেন। আর অহংকার হলো হককে বাতিল করা এবং মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।
(মুসলিম ১৪৭-(৯১), সহীহুল জামি‘ ৭৬৭৪, সহীহ আত্ তারগীব ২৯১২, আবূ দাঊদ ৪০৯২, সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৩৩, আহমাদ ৪০৫৮, শু‘আবুল ঈমান ৬১৯৩।)


عَن أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الطُّهُورُ شَطْرُ الْإِيمَانِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَأُ الْمِيزَانَ وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ تَمْلَآنِ - أَوْ تَمْلَأُ - مَا بَيْنَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَالصَّلَاةُ نُورٌ وَالصَّدَقَةُ بُرْهَانٌ وَالصَّبْرُ ضِيَاءٌ وَالْقُرْآنُ حُجَّةٌ لَكَ أَوْ عَلَيْكَ كُلُّ النَّاسِ يَغْدُو فَبَائِعٌ نَفْسَهُ فَمُعْتِقُهَا أَوْ مُوبِقُهَا»

আবূ মালিক আল আশ্’আরী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাক-পবিত্রতা হলো ঈমানের অর্ধেক। ’আলহামদু লিল্লা-হ’ মানুষের ’আমলের পাল্লাকে ভরে দেয় এবং ’সুবহানাল্লাহ-হি ওয়াল হাম্দু লিল্লা-হ’ সাওয়াবে পরিপূর্ণ করে দেয় অথবা বলেছেন, আকাশমণ্ডলী ও জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে তা পরিপূর্ণ করে দেয়। সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হলো নূর বা আলো। দান-খয়রাত (দানকারীর পক্ষে) দলীল। সবর বা ধৈর্য হলো জ্যোতি। কুরআন হলো তোমার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দলীল। প্রত্যেক মানুষ ভোরে ঘুম হতে উঠে নিজের আত্মাকে তাদের কাজে ক্রয়-বিক্রয় করে- হয় তাকে সে আযাদ করে দেয় অথবা জীবনকে ধ্বংস করে দেয়।
মুসলিম ২২৩, আহমাদ ৫/৩৪২-৪৩।

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস (রাঃ) হতে বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন,

حدثني عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما، قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يا عبد الله، ألم أخبر أنك تصوم النهار، وتقوم الليل؟»، فقلت: بلى يا رسول الله قال: «فلا تفعل صم وأفطر، وقم ونم، فإن لجسدك عليك حقا، وإن لعينك عليك حقا، وإن لزوجك عليك حقا، وإن لزورك عليك حقا، وإن بحسبك أن تصوم كل شهر ثلاثة أيام، فإن لك بكل حسنة عشر أمثالها، فإن ذلك صيام الدهر كله»، فشددت، فشدد علي قلت: يا رسول الله إني أجد قوة قال: «فصم صيام نبي الله داود عليه السلام [ص: ٤٠] ، ولا تزد عليه»، قلت: وما كان صيام نبي الله داود عليه السلام؟ قال: «نصف الدهر»، فكان عبد الله يقول بعد ما كبر: يا ليتني قبلت رخصة النبي صلى الله عليه وسلم

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে ‘আবদুল্লাহ! আমি এ সংবাদ পেয়েছি যে, তুমি প্রতিদিন সওম পালন কর এবং সারা রাত সালাত আদায় করে থাক। আমি বললাম, ঠিক (শুনেছেন) হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ এরূপ করবে না (বরং মাঝে মাঝে) সওম পালন কর আবার ছেড়েও দাও। (রাতে) সালাত আদায় কর আবার ঘুমাও। কেননা তোমার উপর তোমার শরীরের হাক্ব রয়েছে, তোমার চোখের হাক্ব রয়েছে, তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হাক্ব আছে, তোমার মেহমানের হাক্ব আছে। তোমার জন্য যথেষ্ট যে, তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন কর। কেননা নেক ‘আমলের বদলে তোমার জন্য রয়েছে দশগুণ নেকী। এভাবে সারা বছরের সওম হয়ে যায়। আমি (বললাম) আমি এর চেয়েও কঠোর ‘আমল করতে সক্ষম। তখন আমাকে আরও কঠিন ‘আমলের অনুমতি দেয়া হল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আরো বেশি শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ তবে আল্লাহর নাবী দাঊদ (আঃ)-এর সওম পালন কর, এর হতে বেশি করতে যেয়ো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নাবী দাঊদ (আঃ)-এর সওম কেমন? তিনি বললেনঃ অর্ধেক বছর। রাবী বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বৃদ্ধ বয়সে বলতেন, আহা! আমি যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত রুখসত (সহজতর বিধান) কবূল করে নিতাম! সহীহ বোখারী(শামেলা)-১৯৭৫
(১১৩১, মুসলিম ১৩/৩৩৫, হাঃ ১১৫৯, আহমাদ ৬৭৭৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৮৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ১৮৪৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নোংরা থাকা অবস্থায় আপনি যদি তাকে পরিস্কার হয়ে আসার শর্ত দেন,তাহলে এতে আপনার গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...