অনেক দিন আগে আমি কেনায়া তালাক সম্পর্কে জানতাম না।
আমার ওয়াসওয়াসার সমস্যা অনেক আগে থেকে ৩-৪ বছর ধরে সেটা রোগের ব্যাপারে হোক বা অন্য। এ নিয়ে বারবার ডাক্তারের কাছে যেতাম। কোনো রোগ ধরা পরত না, সবাই ঘুমের ওষুধ দিতো আর বলতো এনজাইটি ডিজওয়ার্ডার অর্থাৎ অযথা দুশ্চিন্তা ও কোনো বিষয় মাথা ঢুকলে তা সারাক্ষণ ঘুরপাক খাওয়া, কোনো রোগ খুঁজে না পেয়ে আমি বারবার ডাক্তারের কাছে যেতাম। এটাতে আমার স্ত্রী বিরক্ত হয়ে একটু মিসবিহ্যাব করে তখন আমি কষ্টে বলি যে তোমার ভালো না লাগলে চলে যাও তখন তালাকের খেয়াল আসে নি। পরে ওর কোন কথার উপর যেন আমি বলি যাও যাও তা আমার মনে নেই। এর পরে ও বেয়াদবি করলে আমার তালাকের বিষয়টা জেহেনে আসে আমি ভয় দেখাতে বলি I want separation. আর আগের কথা গুলোর মধ্যে তালাকের খেয়াল আসছিলো কিনা আমার জানা নাই। একবার মনে হয় আসছে আরেকবার মন হয় আসে নাই।আবার আমি জানি যে ছেড়ে দেয়া, ডিভোর্স দেয়া বা তালাক দেয়া বললে তালাক হয় তাই আমি নিয়ত কিভাবে করবো। আমি সন্দেহ ও ওয়াসওয়াসা তে ভুগছি যে তালাক হলো কিনা।
.
.গত মাস দুই ধরে কেনায়া তালাকের ওয়াসওয়াসাতে ভুগছি, এমনি হুজুর দেখিয়েছি তাবিজও দিয়েছে আমাকে। ইউটিউবে তালাকের মাসয়ালা ও কেনায়া সম্পর্কে ভিডিও দেখার পর থেকে আমার এই অবস্থা। মাঝে মাঝে নতুন করে ইজাব কবুল করে বিয়ে করার কথা ভাবি শুনছি কেনায়াতে এক তালাকে বায়েন হয় এই ভয়ে আগেও নানা বিষয় নিয়ে ওয়াসওয়াসা চলতো যেমন রোগ নিয়ে, জ্বর হলেও ভাবতাম আমার ক্যান্সার হয়ে গেছে।
কাল ও রাস্তায় উচ্চস্বরে কথা বলছিলো যা আমার একেবারেই পছন্দ না।মেয়ে মানুষের উচু গলার আওয়াজ আমার পছন্দ না তাই আমি এতে আপত্তি তুললে ও তর্ক শুরু করে তাই আমি বলি এভাবে মেনে না চললে দিয়ে দেবো কিন্তু।সে তর্ক করতে থাকায় আমার প্রচন্ড রাগ উঠে যায়।
১/ গতকাল আমার বিবির সাথে ঝগড়া হয় আমি তাকে থামানোর জন্য তালাকের ভয় দেখাই বাট তালাক শব্দ উচ্চারন করিনি.
এভাবে বলেছি : আমি কিন্তু দিয়ে দিবো বা আমি কিন্তু বলে ফেলবো। ( উদ্দেশ্য ভয় দেখানো)। এতে তালাকের মজলিস হয়ে যাবে কিনা?
২/ তালাকের ভয় দেখানোর জন্য আমি (এক) উচ্চারন করি এবং না দেয়ার ইচ্ছা থাকায় ওই এক শব্দের সাথে মিলিয়ে এভাবে বলি এক এক করে দিয়ে দেবো কিন্তু।
এতে কি তালাক পতিত হবে?
.
৩/ আমি এক পর্যায়ে আমি তাকে থামাতে ও ভয় দেখাতে বলি আমার সিদ্ধান্ত নেয়া শেষ বা আমার ডিসিশন নেয়া হয়ে গেছে( এর অর্থ আমি তালাক দিয়ে দিবো এমনটা ভয় দেখানো)
বাবা মা কে আসতে বলো আমার পক্ষে আর সম্ভব""" এতটুকু বলে থেমে যাই যাতে কেনায়া তালাকও না হয়। বলতে চেয়েছিলাম (আমার পক্ষে আর সম্ভব না)
এতে তালাক পতিত হবে কিনা? আর বাবা মা কে ডাকো এবং আমার পক্ষে আর সম্ভব না এমন কথা কি কেনায়া বাক্য?
৪/ আরেকটা আমার ক্লিয়ার মনে পড়ছে না, বাট কথা অনেকটা এমন ছিলো যে সে বলছিলো দিলে দেও, আমি বলছিলাম যে বাবা মা কে ডাকো, তাদের সাথে কথা বলবো, আমি আর পারছি না ((হয়তো এমনটা আমি সিওর না)) এটা কি কেনায়া হবে?
৪/ আমি তাকে জিঙ্গোস করি যে তোমার কি সংসার করার ইচ্ছে আছে? সে বলে হ্যা আছে। তারপর সে আমাকে প্রশ্ন করে তোমার ইচ্ছে আছে? আমি কেনায়া শব্দ যাতে মুখে না আসে তাই আমি বলি আমি কোনো উত্তর দেবো না। আমি উত্তর দিলে কিসে কি হয়ে যাবে আমি বুঝবো না।
.
এবার আমি কেনায়া তালাক সম্পর্কে জানতাম তাই? কেনায়া বাক্য এড়িয়ে কথা বলছি সবসময় কারন আমার তালাক দেয়ার ইচ্ছা নাই কিন্তু প্রচুর ওয়াসওয়াসা আসায় আমি কেনায়া বাক্য এড়িয়ে চলছি যাতে তালাক না হয়ে যায় । এতে কি দ্বিয়ানাতান তালাক হবে? বাকি কথা অনেক আমার মনে নাই ঠান্ডা হওয়ার পর মনে করতে পারছি না।
তবে কখনো সরীহ শব্দ ব্যাবহার করিনি এখন ভয় লাগছে নতুন একটা মাসয়ালা দেখলাম কেনায়াতে নাকি তিন তালাকও হয়। কেনায়াতে তিন তালাক হওয়ার মাসয়ালা দেখার পর এখন সবসময় মনে হয় তিন হয়ে গেলো কিনা, কিন্তু আমি তো দেইনি।
আমি সন্দেহ ও দুশ্চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমি কি করবো? ইদানিং সবাই খেয়াল করছে আমি আর আগের মতো নেই, শরীরে দুশ্চিন্তার ছাপ, মনমরা হয়ে থাকি, আবার পরকালেও ভয় পাই, নামাজে কান্নাকাটিও করি।
কাযাআন তালাক কখন হয়? কাজির কাছে বিচার নিয়ে গেলে তখন?