আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
105 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (11 points)
আসসালামু আ'লাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
১। উস্তায আমি আমার টিউশনের স্টুডেন্টকে দাজ্জালের ফিতনা সম্পর্কে বলছিলাম। এক পর্যায়ে সে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে দাজ্জাল এখন কোথায় আছে? আমি তখন বলি যে কোনো একটা দ্বীপে তাকে আটকে রাখা হয়েছে (হাদীসের আলোকে আমার এমনটাই মনে পড়ছিলো)। তখন সে জানতে চায় যে, কেন তাকে আটকে রাখা হয়েছে? তার অপরাধ কি? আমি তখন বলেছি যে আমি তো জানি না। উস্তাদ তার এই দুটা প্রশ্নর সঠিক উত্তর কী হবে?

২। সম্প্রতি ফেসবুকে একটা পোস্ট খুব ভাইরাল হয়, যেখানে একটা লাইন ছিল এমন, আমরা এমন জায়গায় সুখ খোঁজার চেষ্টা করছি যেখানে এডাম আর ইভকে শাস্তির জন্য পাঠানো হয়েছিলো। ঘটনাক্রমে পোস্টটা আমিও শেয়ার দিই। তখন এক দ্বীনী বোন বলেন যে এটা ঠিক না, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ওনাদেরকে জান্নাতেই ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। দুনিয়াতে তাদের মানবসতি গড়ে তোলার জন্য পাঠানো হয়। ওনার এই তথ্যটা কি ঠিক? তাহলে ছোটবেলা যে শুনেছিলাম আদাম আঃ কে শ্রীলঙ্কার দিকে কোনো এলাকায় পাঠানো হয় আর বিবি হাওয়া আঃ কে ইরাক বা ওদিকের কোনো অঞ্চলে পাঠানো হয় এবং ওনারা কয়েকশত বছর অনেক কান্নাকাটি করে ক্ষমা চান তখন আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা দয়াপরবশত তাদের আবার মিলিত করে দেন। সেখানেই আজকের কাবা শরীফের অবস্থান। - এটা কি নিকছ কাহিনী??

৩।ক) একটা কথা অনেক বলতে শুনি যে ইসা আঃ নতুন কোনো বিধান নিয়ে আসেন নি, তাওরাতের বিধানই শিক্ষা দিয়েছেন। তাহলে ইঞ্জিল কি বিষয়ক কিতাব? খ) আরেকটা কথা শুনি যে যিনি কোনো নতুন বিধান নিয়ে আসেন নি, পূর্বের নবীর বিধানই শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি হলেন নবী। তাহলে ঈসা আঃ কে রাসূল কেনো বলা হয়?? গ) ঈসা আঃ পুনরায় যখন দুনিয়াতে আসবেন তখন কি তিনি আমাদের রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত হয়ে যাবেন?

আফওয়ান উস্তায। প্রশ্নগুলি বিশাল কাহিনী হয়ে গেছে। একটু কষ্ট করে পড়িয়েন। জাযাকাল্লাহ খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরহ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

ফাতিমাহ বিনতু কাইস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَّرَ الْعِشَاءَ الْآخِرَةَ ذَاتَ لَيْلَةٍ، ثُمَّ خَرَجَ، فَقَالَ: " إِنَّهُ حَبَسَنِي حَدِيثٌ كَانَ يُحَدِّثُنِيهِ تَمِيمٌ الدَّارِيُّ عَنْ رَجُلٍ كَانَ فِي جَزِيرَةٍ مِنْ جَزَائِرِ الْبَحْرِ، فَإِذَا أَنَا بِامْرَأَةٍ تَجُرُّ شَعْرَهَا، قَالَ: مَا أَنْتِ؟ قَالَتْ: أَنَا الْجَسَّاسَةُ، اذْهَبْ إِلَى ذَلِكَ الْقَصْرِ، فَأَتَيْتُهُ، فَإِذَا رَجُلٌ يَجُرُّ شَعْرَهُ، مُسَلْسَلٌ فِي الْأَغْلَالِ، يَنْزُو فِيمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ، فَقُلْتُ: مَنْ أَنْتَ؟ قَالَ: أَنَا الدَّجَّالُ، خَرَجَ نَبِيُّ الْأُمِّيِّينَ بَعْدُ؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: أَطَاعُوهُ أَمْ عَصَوْهُ؟ قُلْتُ: بَلْ أَطَاعُوهُ، قَالَ: ذَاكَ خَيْرٌ لَهُمْ "
অনুবাদ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে ‘ইশার সালাত পড়তে বিলম্ব করলেন। তিনি (ঘর থেকে) বেরিয়ে এসে বললেনঃ তামীম আদ-দারী আমার নিকট যে ঘটনা বর্ণনা করেছে সেটিই আমাকে আটকে রেখেছে। সে সমুদ্রের উপদ্বীপের জনৈক ব্যক্তির সূত্রে আমাকে বলেছে, হঠাৎ আমি একটি স্ত্রীলোককে দেখতে পেলাম যে, সে তার চুল টানছে। তিনি প্রশ্ন করলেন, তুমি কে? সে বললো, আমি গুপ্তচর, তুমি ওই প্রসাদে যাও।অতঃপর আমি সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম, জনৈক ব্যক্তি তার কুঞ্চিত কেশ টানছে, সে মজবুত শিকলে বাঁধা অবস্থায় আকাশ ও যমীনের মাঝখানে ছটফট করছে। আমি বললাম, তুমি কে? সে বললো, আমি তো দাজ্জাল। নিরক্ষরদের নবী এখন আবির্ভূত হয়েছেন কি? আমি বললাম, হ্যাঁ। সে বললো, লোকেরা তাঁকে মান্য করছে নাকি অমানস্য করছে? আমি বললাম, তারা বরং মান্য করছে। সে বললো, এটাই তাদের জন্য কল্যাণকর–(সুনানে আবূ দাঊদ, হাদিস নং ৪৩২৫)

হযরত ফাতেমা বিনতে কায়স (রাঃ) তামীমে দারীর (রাঃ) ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, তামীমে দারী (রাঃ) বলেছেন, সেই দ্বীপে প্রবেশ করলে আমি সেখানে একটি নারীর সাক্ষাৎ পেলাম যার মাথার চুল এত যে, তা জমিনে হিচড়িয়ে চলে।
তামীম জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কে? সে বলল, আমি ‘জাসসাসা’ (অর্থাৎ অন্বেষণকারিণী)। অতঃপর সে বলল তুমি প্রসাদের দিকে যাও। সুতরাং আমি সেখানে আসলাম সেখানে লম্বা লম্বা চুল বিশিষ্ট এমন এক ব্যক্তিকে দেখলাম যে, শক্তভঅবে লোহার শিকলে বাঁধা- আসমান জমিনের মাঝখানে লাফালাফি করছে।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম তুই কে? সে বলল আমি দাজ্জাল।–সুনানে আবূ দাঊদ, হাদিস নং ৪৩২৭

আরো জানুনঃ- 

https://www.ifatwa.info/11076 

★সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

দাজ্জালকে আটকে রাখা না হলে সে দুনিয়াতে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিশৃংখলা সৃষ্টি করতো।
তাই তাকে আটকে রাখা হয়েছে।

(০২)
আদম আঃ কে জান্নাতেই ক্ষমা করা হয়নি।
দুনিয়াতে এসে তওবা ইস্তেগফারের দরুনই তাদেরকে ক্ষমা করা হয়েছিলো।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
ক, ঈসা আঃ নতুন শরীয়ত ও নতুন কিতাব নিয়েই এসেছিলেন।

খ, যেহেতু তিনি নতুন কিতাব নিয়ে এসেছিলেন,নাহী আনিল মুনকারের জন্যও প্রেরিত হয়েছিলেন,তাই তিনি রাসুল।

গ, 
শেষ জামানায় হযরত ঈসা আঃ আমাদের নবি মুহাম্মাদ সাঃ এর উম্মত হয়েই আসবেন।
,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-


وَعَنْ جَابِرٍ عَنِ النَّبِيِّ ﷺ حِيْنَ اَتَاهُ عُمَرُ فَقَالَ اِنَّا نَسْمَعُ اَحَادِيْثَ مِنْ يَّهُوْدَ تُعْجِبُنَا اَفَتَرى اَنْ نَّكْتُبَ بَعْضَهَا فَقَالَ أَمُتَهَوِّكُوْنَ اَنْتُمْ كَمَا تَهَوَّكَتِ الْيَهُوْدُ وَالنَّصَارى لَقَدْ جِئْتُكُمْ بِهَا بَيْضَاءَ نَقِيَّةً وَلَوْ كَانَ مُوْسى حَيًّا مَّا وَسِعَه إِلَّا اتِّبَاعِيْ. رَوَاهُ أَحْمَدُ والْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبُ الاِيْمَانِ


জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন ‘উমার (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেনআমরা ইয়াহূদীদের নিকট তাদের অনেক ধর্মীয় কথাবার্তা শুনে থাকি। এসব আমাদের কাছে অনেক ভালো মনে হয়। এসব কথার কিছু কি লিখে রাখার জন্য আমাদেরকে অনুমতি দিবেনরসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনইয়াহূদী ও নাসারাগণ যেভাবে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেতোমরাও কি (তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে) এভাবে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছআল্লাহ্র কসম! আমি তোমাদের কাছে একটি অতি উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ দ্বীন নিয়ে এসেছি। মূসা (আঃ)-ও যদি আজ দুনিয়ায় বেঁচে থাকতেন, আমার অনুসরণ ব্যতীত তাঁর পক্ষেও অন্য কোন উপায় ছিল না। মিশকাত, হাদীস নং- ১৭৭ হাদিসের মান : হাসান হাদিস


★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
শেষ জামানায় হযরত ঈসা আঃ আমাদের নবি মুহাম্মাদ সাঃ এর উম্মত হয়েই আসবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...