আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
103 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আমার ছোট বেলা থেকেই বলতে গেলে ৩য় শ্রেণি থেকেই অধিক সংখ্যক হিন্দু বান্ধবী ছিল। আমি মনে করতাম যে ওদের ধর্মের কোনো কিছু না মেনে ওদের সাথে মিশতে সমস্যা নেই৷ হাই স্কুল থেকে শুরু করে ভার্সিটি লাইফেও অনেক হিন্দু বান্ধবী হয় যাদের সাথে আমি সবসময় প্রাইভেট পড়েছি, এমনকি তাদের বাসায়ও কয়েক রাত থেকেছি, তাদের বাসায় নামাজও পড়েছি ( যে রুমে কোনো ছবি বা মূর্তি ছিলো না)। ভার্সিটিতে পড়াকালীন এক রুমেও ১জন হিন্দু ,  ৩ জন মুসলমান ছিলাম আমরা। এখন এসে বুঝতেছি যে এগুলো করাও ঠিক হয় নি।
এখন আমি জানতে চাই  যাদের সাথে আমার স্কুল থেকে এখন পর্যন্ত ভালো সম্পর্ক আছে আমি কি তাদের সাথে বন্ধুত্ব ছিন্ন করবো? আমি মনে মনে তাদের বন্ধু না ভাবলাম, কিন্তু সবার সামনে প্রকাশ করলাম না,তবে কি তা জায়েজ হবে? নাকি তাদেরকেও জানাতে হবে যে তারা এখন আর আমার বান্ধবী না?? তাদের সাথে কি কথা বলা বন্ধ করে দিতে হবে??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মুসলমানদের জন্য কোনো  অমুসলিমকে বন্ধু বানানো জায়েজ নেই।

অমুসলিমদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে সূরা মুমতাহিনার এই নির্দেশনাটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য-

لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ  إِنَّمَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ قَاتَلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَأَخْرَجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ وَظَاهَرُوا عَلَى إِخْرَاجِكُمْ أَنْ تَوَلَّوْهُمْ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের বিরম্নদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বহিষ্কার করেনি, তাদের সঙ্গে সদাচরণ করতে ও তাদের প্রতি ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালোবাসেন। আল্লাহ  তো তোমাদের তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেছেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে, তোমাদেরকে তোমাদের ঘর-বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে এবং তোমাদেরকে বের করার কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে তারা জালিম। -সূরা মুমতাহিনা : ৮-৯

★তবে কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করতে,বা কোনো প্রভাবশালী অমুসলিমের ক্ষতি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে তার সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্ব রাখা যায়,তবে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন কখনো জায়েয হবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব করা নিয়ে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَّ يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاء مِن دُوْنِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللّهِ فِي شَيْءٍ إِلاَّ أَن تَتَّقُواْ مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمُ اللّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللّهِ الْمَصِيرُ
মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।(সূরা আলে ইমরান-২৮)

কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করতে,বা কোনো প্রভাবশালী অমুসলিমের ক্ষতি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে তার সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্ব রাখা যায়,তবে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন কখনো জায়েয হবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদেরকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করার নিয়ত নিয়ে তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাত করা যাবে। তাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক রাখা যাবে না।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি তাদের সাথে বন্ধুত্ব ছিন্ন করবেন। আমি মনে মনে তাদের বন্ধু না ভাবলেন, কিন্তু সবার সামনে প্রকাশ করলেননা,তবে তা জায়েজ হবে।

তাদেরকে এটা জানানো বাধ্যতামূলক নয় যে তারা এখন আর আপনার বান্ধবী না।
তাদের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতে হবেনা।

তবে তাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক রাখা যাবে না। তাদেরকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করার নিয়ত নিয়ে তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাত করতে পারেন,কথাবার্তা বলতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...