আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
89 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
edited by
সিনারিও :

আমার বাল্যকালের বন্ধু , ক্লাস ২ থেকে ৫ পর্যন্ত একসাথে পড়া হয়েছে , এরপর ক্লাস ৬ এর শুরুর দিকে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যায় । সে আমার কথা তার বাসায় খুব ভাল বলে এবং সে মারা যাওয়ার পর থেকে তার মা আমাকে দেখার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং আমাকে ছেলের মত দেখেন এবং এরপরই প্রথম তার বাসায় যাওয়া হয় , এরপর থেকে এখন অব্দি গত ১৩-১৪ বছর ধরে আমরা ভাল সম্পর্ক  মেইনটেইন করে আসছি আমরা ফ্যামিলি গত ভাবে  ,মাঝে মাঝেই যাওয়া আসা হয় ।
গত সপ্তাহে ঈদের দাওয়াত এ তাদের বাসায় যাওয়া হয় । তখন আন্টি আমাকে বলে বাবা তোমার বোন এর বিয়ে দিব কোন ভাল পাত্র থাকলে জানাইও । এর মাঝে আমার এক বন্ধু আমার আম্মুকে এবং আমাকে বলে রেখেছিল ভাল কোন মেয়ে থাকলে জানাইতে । আমি দুই ফ্যামিলি কেই চিনি এবং তাদের কুফু মিলে যায় এজন্য  দুই পক্ষকে জানাই এবং তাদের পছন্দ হয় ইনিশিয়াল অবস্থায় ।
এখন মেয়ের বাসা থেকে বারবার বলতেছে তোমার ফ্রেন্ড আমরা আর তেমন কিছু দেখব না । আর ছেলে মোটামুটি রাজি ।
পরিস্থিতি এমন আমি বিষয় টা তে ভালভাবে ইনগেজ করলে বিয়ে টা হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ  কিন্তু আমি সেই সাহস টা পাচ্ছি না ।
১. ছেলে আমার বন্ধু সে একাধিক হারাম রিলেশন এ ছিল , আর মেয়ে আমার বোন সে কোন হারাম রিলেশন এ জড়ায় নাই , এখন আমি যদি এ বিষয়ে ছেলেকে হেল্প করি তাহলে কি মেয়েকে ঠকানো হবে ? কেননা সূরা আহযাব ৩৫ আয়াত ।
২. যদি তাদের বিয়ে হয় এবং আল্লাহ না করুক খারাপ কোন কিছু হয় , মেয়ে সুখী না হয় (এমন হবার সম্ভাবনা কম ইনশা আল্লাহ  ) তাহলে আমার বন্ধুর ফ্যামিলি এর সাথে আমাদের ফ্যামিলি এর সম্পর্ক খারাপ হতে পারে এমন ভয় পাচ্ছি যেটা আমি কোন মতেই মেনে নিতে পারব না  ।
এখন আমার কি করা উচিত ?

ছেলে আর মেয়ে একই রকমের দীনদার ,তাদের ফ্যামিলি ও একই রকমের । যদি এই বিষয়ে আমি ইনগেজ করি কিভাবে সর্বোত্তম পন্থায় করতে  পারি এবং ছেলের এই বিষয় টা কি আমি মেয়ের ফ্যামিলি বা মেয়ের সাথে শেয়ার করব কি না ?

সমাজ এ যেনা ব্যভিচার কমানো, উভয় ফ্যামিলি কে হেল্প ,সাদকয়ে জারিয়াহ নিয়তে সর্বপরি মহান  আল্লাহ এর সন্তুষ্টি এর উদ্দেশ্য নিয়ে উক্ত বিবাহে হেল্প করতে পারব কি না

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

গুনাহ করার পর উক্ত গুনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাঃ দিয়েছেন।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল।

(সহীহ বুখারী-৬০৬৯
সহীহ মুসলিম-২৯৯০)

বান্দাহ গুনাহ করার পর যখন সে তাওবাহ করে নেয়,তখন আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহকে ক্ষমা করে দেন।

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [বাকারা-২২২] 

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০]

বিস্তারিত জানুনঃ   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে ছেলে (আপনার সেই বন্ধু) একাধিক হারাম রিলেশন এ ছিল ,আর মেয়ে সে কোন হারাম রিলেশন এ জড়ায়নি।

তো এক্ষেত্রে ছেলে যদি খালেস দিলে তওবা করে ফিরে আসে,ভবিষ্যতে আর এহেন গুনাহ না করার ব্যপারে মহান আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়,সেক্ষেত্রে তার অবস্থা দেখে যদি আপনার মনে হয় যে সে আসলেই আর কোনো দিন হারাম রিলেশনে জড়াবেনা,সেক্ষেত্রে নিশ্চিন্ত মনে আপনি এই বিবাহে মধ্যস্থতা করতে পারেন,ছেলেকে হেল্প করতে পারেন,এক্ষেত্রে আপনার পক্ষ হতে মেয়েকে ঠকানো হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 

(০২)
বিষয়টি নিয়ে চিন্তা না করে দ্রুত বিবাহ পড়িয়ে দেয়ার পরামর্শ রইলো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...