আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
55 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
উস্তাদ,আমার বয়স ২০ বছর,মেয়ে। আব্বু আম্মুর সাথে এক;ই বিছানায় ঘুমানো কি জায়েজ হবে? বিছানায় প্রস্থ বরাবর যদি ঘুমাই আর মাঝখানে বড় কোলবালিশ রাখি,তাহলে?আমি গত ৪ বছর ধরে একা ঘুমাতে পারি না,ভয় পাই, মাঝেমাঝেই রাতে ঘুমের ঘোরে চিৎকার করে উঠি। আব্বু অন্য রুমে একা শোয়। আব্বুকেও মাঝেমাঝে বোবা জিন ধরে রাতে। এজন্য আমি, আব্বু, আম্মু এক রুমে ঘুমালে ভালো হয়।আমি একা একা নিচে বা বিছানায় ঘুমাতেও ভয় পাই। আম্মু আমার সাথেই ঘুমায় এজন্য।আব্বু আম্মু নিচে আর আমি বিছানায় ঘুমাতে খারাপ লাগে।নিজের কাছেই খারাপ লাগে+মনে হয় যে আদবের খেলাফ হচ্ছে হয়তো।আর এখন তো বর্ষাকাল,রুমে অনেক পোকামাকড় থাকে।নিচে শোয়াটা সেইফও না।এই অবস্থায় আমার কী করণীয় উস্তায?

1 Answer

0 votes
by (706,040 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/10091/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
শরীয়তের বিধান হলো প্রাপ্ত বয়স্ক-বালেগ হবার পর আলাদা ঘুমানো জরুরী। একসাথে একই বিছানায় ঘুমানো যাবে না।
,
এক মহিলা আরেক মহিলার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে, যদি উভয়ের সতর ঢাকা থাকে আর ফিতনার শংকা না থাকে। তেমনি দুইজন পুরুষ একসাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে, যদি সতর ঢাকা থাকে। কিন্তু ফিতনার শংকা থাকলে বৈধ নয়।
,
সুতরাং বাবা তার প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে,উপরোক্ত শর্তের ভিত্তি।
একই শর্তের ভিত্তিতে মা তার প্রাপ্ত বয়স্কা কন্যার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে পারবে। 
 
তবে একই বিছানায় প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সাথে বাবা আর প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের সাথে মা ঘুমাতে পারবেনা  

সহীহ হাদীস দ্বারা এ কথা প্রমাণিত রয়েছে যে,সন্তানদের বয়স দশ হয়ে গেলে তাদের শয়নস্থল-কে পৃথক করে দিতে হবে।
,
যেমন হযরত আমর বিন শুয়াইব তার সুত্রে বর্ণনা করেন,
ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﻣُﺮُﻭﺍ ﺃَﻭْﻟَﺎﺩَﻛُﻢْ ﺑِﺎﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﺳَﺒْﻊِ ﺳِﻨِﻴﻦَ ، ﻭَﺍﺿْﺮِﺑُﻮﻫُﻢْ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﻭَﻫُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺀُ ﻋَﺸْﺮٍ ، ﻭَﻓَﺮِّﻗُﻮﺍ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﻀَﺎﺟِﻊِ ) .
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানাদিকে নামাযের আদেশ দাও যখন তারা সপ্ত বর্ষে উপনীত হয়।নামায না পড়ার ধরুণ তাদেরকে প্রহার করো যখন তারা দশম বৎসরে উপনীত হয়।এবং সাথে সাথে তাদের শয়নস্থল কে পৃথক করে দাও।(সুনানু আবি-দাউদ-৪১৮)

হযরত সামুরাহ ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺳﺒﺮﺓ ﺑﻦ ﻣﻌﺒﺪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇﺫﺍ ﺑﻠﻎ ﺃﻭﻻﺩﻛﻢ ﺳﺒﻊ ﺳﻨﻴﻦ ﻓﻔﺮﻗﻮﺍ ﺑﻴﻦ ﻓﺮﺷﻬﻢ ﻭ ﺇﺫﺍ ﺑﻠﻐﻮﺍ ﻋﺸﺮ ﺳﻨﻴﻦ ﻓﺎﺿﺮﺑﻮﻫﻢ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﻼﺓ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যখন তোমাদের সন্তানাদি সপ্তম বৎসরে উপনীত হবে তখন তোমরা তাদের বিছানাকে পৃথক করে দাও।এবং যখন তারা দশম বৎসরে উপনীত হবে তখন নামাযের জন্য তোমরা তাদেরকে প্রহার করো।(সহীহ জামে-৪১৮)

★শরীয়তের মূল বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক তথা দশ বৎসরে উপনীত হওয়ার পর থেকে প্রত্যেকের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিধান হলো যে,প্রত্যেকেই এমন স্থানে শয়ন করবে যেখানে পর্দা পুশিদার রক্ষা হয়।

সে হিসেবে প্রত্যেকেই পৃথক পৃথক রুমে থাকবেন।হ্যা স্বামী-স্ত্রীর বিষয়টি ভিন্ন।সুতরাং সাধারন বিধান হচ্ছে প্রত্যেকেই পৃথক পৃথক রুমে শয়ন করবেন।এটাই সতর রক্ষার সর্বোত্তম পদ্ধতি।

হ্যা যদি কখনো এক রুমে দু'জনের থাকার প্রয়োজন পড়ে তাহলে এক্ষেত্রে একই রুমে দুই বা ততধিক সমলিঙ্গ তথা শুধু পুরুষ বা শুধু মহিলা একত্রে ঐ শর্তে থাকতে পারবেন যে,প্রত্যেকেরই পৃথক পৃথক তোষক/লেপ থাকবে।

এবং একই তোষকের নিচে একাধিক পুরুষ বা একাধিক মহিলা রাত্রিযাপন করা মাকরুহে তানযিহি।তবে বিপরীত লিঙ্গ কয়েকজনের রাত্রিযাপন একই বিছানায় কখনো জায়েয হবে না।এমনি তারা পরস্পর মাহরাম হলেও জায়েয হবে না।এবং পৃথক পৃথক তোষক থাকলেও জায়েয হবে না। 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ- 

وأما قوله وأمه وأبيه فالظاهر أن المراد تفريقه عن أمه وأبيه بأن لا يتركاه ينام معهما في فراشهما، لأنه ربما يطلع على ما يقع بينهما بخلاف ما إذا كان نائما وحده أو مع أبيه وحده أو البنت مع أمها وحدها، وكذا لا يترك الصبي ينام مع رجل أو امرأة أجنبيين خوفا من الفتنة، ولا سيما إذا كان صبيحا فإنه وإن لم يحصل في تلك النومة شيء فيتعلق به قلب الرجل أو المرأة فتحصل الفتنة بعد حين فلله در هذا الشرع الطاهر فقد حسم مادة الفساد ومن لم يحط في الأمور يقع في المحذور وفي المثل لا تسلم الجرة في كل مرة 

(দশে উপনীত হওয়া)সন্তানের শয়নস্থল-কে মাতা-পিতা থেকে পৃথকীকরণ করতে এজন্য বলা হয়েছে যে,যাতেকরে মাতা-পিতা র মধ্যকার একান্ত মুহুর্ত গুলো সম্পর্কে সন্তান অবগত হতে না পারে।সন্তান একাকী ঘুমানো বা ছেলে সন্তান পিতার সাথে এবং মেয়ে সন্তান মায়ের সাথে ঘুমানো নিষিদ্ধ নয়।এবং প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান-কে কোনো পুরুষ বা মহিলার সাথে ঘুমোতে দেয়া যাবে না।বিশেষ করে সন্তানের চেহারা সুন্দর হলে তো দেয়া যাবেই না।কেননা এক্ষেত্রে ঐ সুদর্শন সন্তানের প্রতি মন বসে যেতে পারে যা বর্তমানে না হলেও ভবিষ্যতে ফিতনার কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। শরীয়তের বিধানাবলী কতই না সুন্দর।কেননা শরীয়ত ফিতনার মূল উৎসকে ধংস করে দিতে চায়।সুতরাং ঐ সতর্কতামূলক অবস্থানকে উপেক্ষা  করলে অবশ্যই ফিতনায় জড়িত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে। (রদ্দুল মুহতার- ৬/৩৮২)

বিস্তারিত জানুনঃ  

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার আব্বু আম্মুর সাথে একই বিছানায় ঘুমানো কোনোক্রমেই জায়েজ হবেনা।
আপনার আব্বু আম্মুর রুমে ঘুমানো আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।
আপনার আব্বু আম্মু নিচে থাকলেও হবেনা,  আপনার রুমই আলাদা হতে হবে।

★এক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য সমাধান হলোঃ-
দ্রুত বিবাহ করা। 
বিবাহের আগ পর্যন্ত আলাদা রুমে কোনো শিশু বা অন্য কোনো মহিলার (আত্মীয়/প্রতিবেশী/বান্ধবীর) সাথে থাকবেন।
এই শর্তের সাথে যে,প্রত্যেকেরই পৃথক পৃথক তোষক/লেপ/কাথা থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (4 points)
মুহতারাম,আমি আর আম্মু বিছানায় আর আব্বু একা নিচে এভাবে ঘুমালে হবে না?আসলে আমার অন্য কোনো এমন আত্মীয় নেই যে আমার সাথে থাকবে।বাসায় আমি, আব্বু, আম্মু এই তিনজনই।আর আমার ভয় পাওয়ার বিষয়টাও অনেক তীব্র।আমি বিবাহিত কিন্তু এখনো আব্বু আম্মুর কাছেই থাকি।
আমি আর আম্মু এক বিছানায় থাকলে দুজন কি একই কাঁথা ব্যবহার করতে পারবো না?
by (706,040 points)
না,এভাবস ঘুমালে হবেনা।
এটা জায়েজ হবেনা।

আপনাকে আলাদা রুমে থাকতেই হবে।
বা আপনার আব্বুকে আলাদা রুমে থাকতেই হবে।

আপনার মায়ের সাথে একই কাথার নিচে ঘুমানো যদিও নাজায়েজ নয়,তবে মাকরুহে তানযিহি। 

সুতরাং আলাদা কাথা ব্যবহার করাই উচিত।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...