আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
১. মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি কত দিনের মধ্যে বন্টন করতে হবে এমন কোন সময়সীমা আছে কি?

২. সম্পত্তি বন্টন করতে দেরি হলে কেউ কি গোনাহগার হবে? বা মৃত ব্যক্তির কোন আযাব হবে কিনা?

৩. যদি মৃত ব্যক্তি তার মৃত্যুর আগে নির্দিষ্ট কোন সম্পত্তি নির্দিষ্ট কোন ওয়ারিশকে দেয়ার ওসিয়ত করে যায় সেক্ষেত্রে এই ওসিয়ত মানা যাবে কিনা?

৪. ওয়ারিশদের কেউ নিজের ভাগ অন্যান্য ওয়ারিশদের জন্য ছেড়ে দিতে পারবে কিনা? সেক্ষেত্রে কি কোন সাক্ষী বা লিখিত রাখতে হবে কি?

৫. হজ্জ করার আর্থিক সামর্থ্য কখনো ছিলো না এমন কোন সাবালক ব্যক্তি যদি নিজ বাবার কাছ থেকে বিনা সুদে ঋণ নিয়ে হজ্জ করে, পরবর্তীতে কখনো পুনরায় হজ্জ করার আর্থিক সামর্থ্য হলে তার উপর কি পুনরায় হজ ফরজ হবে নাকি প্রথম বারের ঋণ করে হজ করায় তার ফরজ আদায় হয়ে যাবে?

উল্লেখ্য এখানে ব্যক্তির বাবা বৃদ্ধ মানুষ। বাবার সঙ্গে তার হজে যাওয়া জরুরি।

৬. আগে কোন ব্যক্তির হজ্জ করার আর্থিক সামর্থ্য ছিল। বর্তমানে আর্থিক সামর্থ্য নেই, এমন ব্যক্তি কি ঋণ নিয়ে হজ্জ করলে তার ফরজ হজ্জ আদায় হয়ে যাবে?

৭. নিজের ফ্ল্যাট বাড়ি আছে যা থেকে ভাড়া আসে। এমন ব্যক্তির জন্য কি ফ্ল্যাট বিক্রি করে হজ্জে যাওয়া ফরজ যদি ফ্ল্যাট বিক্রি করা ছাড়া অন্য কোন উপায়ে হজ্জে যাওয়ার আর্থিক সামর্থ্য না হয়।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ১১ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ۚ فَاِنۡ کُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَیۡنِ فَلَہُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَکَ ۚ وَ اِنۡ کَانَتۡ وَاحِدَۃً فَلَہَا النِّصۡفُ ؕ وَ لِاَبَوَیۡہِ لِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَکَ اِنۡ کَانَ لَہٗ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہٗ وَلَدٌ وَّ وَرِثَہٗۤ اَبَوٰہُ فَلِاُمِّہِ الثُّلُثُ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَہٗۤ اِخۡوَۃٌ فَلِاُمِّہِ السُّدُسُ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ اٰبَآؤُکُمۡ وَ اَبۡنَآؤُکُمۡ لَا تَدۡرُوۡنَ اَیُّہُمۡ اَقۡرَبُ لَکُمۡ نَفۡعًا ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿۱۱﴾ 

আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচেছন: এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশী থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্য থাকলে তার জন্য অর্ধেক। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই-বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ; এ সবই সে যা ওসিয়াত করে তা দেয়ার এবং ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না। এ বিধান আল্লাহর; নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মানুষের মৃত্যুর পর কাফন দাফনের পর তার সম্পত্তিকে ওয়ারিছদের মধ্যে বন্টনের পূর্বে তার ঋণ থাকলে সেটা আগে পরিশোধ করতে হবে। মৃত ব্যাক্তির সমূদয় সম্পদ হতে তার ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

ঋণ পরিশোধের পর যে সম্পদ থাকবে,তার এক তৃতীয়াংশ দ্বারা তার অসিয়ত পূরন করতে হবে।

অসিয়ত পূরন করার পরে যে সম্পদ থাকবে,তাহা তার ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করতে হবে।

কাফন দাফন,ঋণ পরিশোধ,অসিয়ত পূরন এর আগে ওয়ারিশদের মাঝে সম্পদ বন্টন করা যাবেনা।

এক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ,অসিয়ত পূরন করতে যদি কিছুটা সময় লেগে যায়,সেক্ষেত্রে ওয়ারিশদের ধৈর্য ধারন করতে হবে।

ঋণ পরিশোধ,অসিয়ত পূরন এর পর ওয়ারিশদের মাঝে সম্পদ বন্টন করা হতে দেড়ি করা জায়েজ নয়।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
সম্পত্তি বন্টন করতে বিনা ওযরে দেরি হলে যাদের কারনে দেড়ি হচ্ছে,তারা গোনাহগার হবে। তবে এর দরুন মৃত ব্যক্তির কোন আযাব হবেনা।

(০৩)
না,মানা যাবেনা।
কেননা ওয়ারিশদের জন্য কোনো অসিয়ত কার্যকর নয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، وَهَنَّادٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا شُرَحْبِيلُ بْنُ مُسْلِمٍ الْخَوْلاَنِيُّ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي خُطْبَتِهِ عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ " إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَعْطَى كُلَّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ فَلاَ وَصِيَّةَ لِوَارِثٍ

হান্নাদ ও আলী ইবন হুজর (রহঃ) ....... আবূ উমামা বাহিলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ বিদায় হজ্জের বছরে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ ’’আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক হকওয়ালার হক দিয়েছেন। সুতরাং ওয়ারিছানের জন্য কোন ওয়াসীয়ত নাই।
(তিরমিজি ২১২৩)

(০৪)
ওয়ারিশদের কেউ সন্তুষ্টি চিত্তে নিজের ভাগ অন্যান্য ওয়ারিশদের জন্য ছেড়ে দিতে পারবে।

তবে এটা সন্তুষ্টি চিত্তে হতে হবে। জোড় জুলুম করে নয়।

এমতাবস্থায় ২ জন্য প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা লিখিত আকারে স্ট্যাম্পে বা দলিল আকারে লিখে রাখাই উচিত।

নতুবা পরবর্তীতে ঝামেলা হতে পারে।

(০৫)
তার উপর পুনরায় হজ্ব ফরজ হবেনা।
 
প্রথম বারের ঋণ করে হজ করায় তার ফরজ হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।

(০৬)
এমন ব্যক্তি ঋণ নিয়ে হজ্ব করলে তার ফরজ হজ্ব আদায় হয়ে যাবে।

(০৭)
উক্ত ফ্ল্যাট যদি তার দৈনন্দিন আবশ্যকীয় প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে তার উপর হজ্ব ফরজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...