আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

হুজুর, আমরা একটি মধ্যবিত্ত পরিবার। আমার আম্মুর একটি জমি ছিল যার পাওয়ার নামা আমার মামার কাছে থাকায় উনি তা আমাদের না জানিয়ে বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীতে আমার মা যখন জানতে পারে, এবং আমার মামার কাছে জমির বর্তমান দাম জেনে, সেই টাকা দাবি করে। আমার মামা সাড়ে ৫ লাখ টাকা দিবে বলে আমার আম্মুর সাথে কথা বার্তা ক্লিয়ার করে। আমার আম্মু চেয়েছিল, এই টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা মসজিদে দান করবে এবং বাকি ৫ লাখ টাকা দিয়ে আমাদের বাড়ি করবে যেহেতু এখনো আমি অবিবাহিত। আমার মামা, আম্মুর মসজিদে টাকা দান করার সিদ্ধান্তে রাজি হয় এবং উনি বলে যে, উনি আমার আম্মুকে ৫ লাখ টাকা দিবে এবং বাকি ৫০ হাজার টাকা উনি নিজ হাতে মসজিদে দিয়ে দিবে।
আমার আম্মুও আমার মামার কথায় রাজি হয়। কিন্ত আজকে উনি এই কথা অস্বীকার করছে এবং বলছে যে উনি আম্মুকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিবে এবং বাকি ৫০ হাজার টাকা উনি মসজিদে দিবে।
এখন আমার আম্মুর প্রশ্ন হচ্ছে, এই ৫০ হাজার টাকা যে আমার মামা আমাদের দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে,  এক্ষেত্রে এই টাকা কি আমার আম্মুর  মসজিদে দান করতে হবে নাকি এই দায়ভার আমার মামার উপর?

1 Answer

0 votes
by (559,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://ifatwa.info/16066/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হাদীস শরীফে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেছেন- 

أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمًا يَنْهَانَا عَنِ النَّذْرِ وَيَقُولُ إِنَّهُ لاَ يَرُدُّ شَيْئًا وَإِنَّمَا يُسْتَخْرَجُ بِهِ مِنَ الشَّحِيحِ 

রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন আমাদের মান্নত করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, মান্নত কোনো কিছুকে ফেরাতে পারে না। তবে মান্নতের মাধ্যমে কৃপণ ব্যক্তির সম্পদ বের করা হয়। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৪৩২৫)।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, মান্নত এমন কোনো কিছুকে আদম সন্তানের নিকটবর্তী করে দিতে পারে না যা আল্লাহ তাআলা তার জন্য তাকদীরে নির্দিষ্ট করেননি। তবে মান্নত কখনো তাকদীরের সাথে মিলে যায়। এর মাধ্যমে কৃপণের নিকট হতে ঐ সম্পদ বের করে নিয়ে আসা হয় যা কৃপণ (এমনিতে) বের করতে চায় না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৬৪০

★মান্নত শরিয়তে পছন্দনীয় নয়। শরিয়ত উদ্বুদ্ধ করে নফল সদকার প্রতি; মান্নতের প্রতি নয়।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন-

 بَاكِرُوا بِالصَّدَقَةِ ؛ فَإِنَّ الْبَلَاءَ لَا يَتَخَطَّى الصَّدَقَةَ 

“তোমরা দানের ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবে। কেননা বিপদাপদ তাকে অতিক্রম করতে পারে না”। (বাইহাকী ৭৩৭৪)।

★মান্নত করার পর তা থেকে রুজু করার কোন সুযোগ নেই। তাই মান্নতকৃত ইবাদতটি করা আবশ্যক।
 
وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ [٢٢:٢٩]
তাদের মানত পূর্ণ করে [সূরা হজ্জ-২৯]

★মনে মনে মান্নত করলে মান্নত হয় না। মান্নত হবার জন্য মুখে উচ্চারণ করা জরুরী।

النذر لا تكفى أيجابه النية بل لابد من التلفظ به (الأشباه والنظائر-89)
সারমর্মঃ
মান্নত ছাবেত হওয়ার জন্য শুধু নিয়ত যথেষ্ট নয়,বরংং উচ্চারণ করা জরুরী। 

المسألة الأولى فى حقيقة النذر، وهو التزام الفعل بالقول مما يكون طاعة لله عز وجل، من الأعمال قربة (احكام القرآن لابن عربى، دار الكتب العلمية-1\352، كرتاشى-2\18)
فركن النذر: هو الصيغة الدالة عليه، وه قوله: لله عز شانه على كذا، أو على كذا، وهذا هدى، أو صدقة، أو مالى صدقة أو ما أملك صدقة أو نحو ذلك (بدائع الصنائع، كتاب النذر-4\226)
সারমর্মঃ
মান্নতের রুকন হলো এমন শব্দ ব্যবহার করতে হবে,যেটি তার উপর বুঝায়,,,, 

وصيغته تكون بلفظ النذر نحو "نذرت" أو ما يدل على الإلزام نحو "لله علي" أو ما شابه ذلك.
সারমর্মঃ
মান্নতের শব্দ হলো যেখানে নযর তথা মান্নতের শব্দ ব্যবহার হবে।
যেমন আমি মান্নত করিলাম,বা যে শব্দ গুলো নিজের উপর কোনো কাজ আবশ্যকীয় করে নেওয়া বুঝায়,,,, 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার মা তো কোনো মান্নত করেনি,সুতরাং ৫০ হাজার টাকা মসজিদে দেয়া আপনার মার উপর আবশ্যক নয়।

এখন আপনার মা যদি আপনার মামাম হতে ৫ লক্ষ টাকার পুরাটাই নিয়ে নেয়,মসজিদে যদি এক টাকাও না দেন,সেক্ষেত্রে আপনার মার কোনো গুনাহ হবেনা।

তবে আপনার মামা যেহেতু সাড়ে ৫ লাখ টাকা দিবে বলে আপনার আম্মুর সাথে কথা বার্তা ক্লিয়ার করে।

৫ লক্ষ আপনার মাকে দিতে চেয়েছিলো,আর আপনার মার পক্ষ হতে ৫০ হাজার টাকা মসজিদে দা করতে চেয়েছিলো,সুতরাং এখন যে তিনি পিছুটান দিচ্ছেন,এর দরুন তার গুনাহ হবে।

উল্লেখ্য,  উক্ত জমি বিক্রয় করে যতটাকা পেয়েছিলো,পুরো টাকায় আপনার হাতে ফেরত দেয়া আপনার মামার উপর আবশ্যক। 
এক টাকাও গ্রহণ করা তার জন্য জায়েজ নয়। তবে আপনার মা সন্তুষ্টি চিত্তে যদি কমিয়ে দেয়,সেক্ষেত্রে তাহা ভিন্ন ব্যপার।

তবে সেই কমিয়ে দেয়া টাকা হতেও কম দেয়া আপনার মার উপর চরম পর্যায়ের জুলুম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...