জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো সোজা হয়ে দাড়িয়ে মুখে তাকবিরে তাহরিমা বলে তারপর রুকুতে গিয়ে ইমামকে সামান্য সময়ের জন্য পেলেই তবে সে উক্ত রাকাত পাবে।
নতুবা তাকে উক্ত রাকাত পায়নি বলেই গন্য করা হবে।
এখানে ইমামকে এক তাসবীহ পরিমাণ পাওয়া জরুরি নয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن أبي هريرة أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال من أدرك ركعة من الصلاة فقد أدركها قبل أن يقيم الإمام صلبه
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি নামাযের রুকু পেয়ে যায় ইমাম তার পিঠ সোজা করার পূর্বে, সে ব্যক্তি উক্ত রাকাত পেয়ে গেল।
{সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৪০৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৩২৯, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৫, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২০৬৯৩, নসবুর রায়াহ, হাদীস নং-৩২৭}
عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رُفَيْعٍ عَنْ رَجُلٍ عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ :« إِذَا جِئْتُمْ وَالإِمَامُ رَاكِعٌ فَارْكَعُوا ، وَإِنْ سَاجِدًا فَاسْجُدُوا ، وَلاَ تَعْتَدُّوا بِالسُّجُودِ إِذَا لَمْ يَكُنْ مَعَهُ الرُّكُوعُ
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন তোমরা আস আর ইমাম রুকু অবস্থায় থাকে, তাহলে তোমরা রুকু কর। আর যদি সেজদা অবস্থায় থাকে, তাহলে সেজদা কর। তবে সেজদা দ্বারা তা রাকাতের মাঝে গণ্য করো না, যদি না এর সাথে রুকু থেকে থাকে। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৪০৯, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২০৬৯৫}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ : مَنْ أَدْرَكَ الإِمَامَ رَاكِعًا ، فَرَكَعَ قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ الإِمَامُ رَأْسَهُ فَقَدْ أَدْرَكَ تِلْكَ الرَّكْعَةَ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ইমামকে রুকু অবস্থায় পাবে, তারপর সে ইমাম মাথা উঠানোর আগে তার সাথে রুকু করে, তাহলে উক্ত রাকাত পেয়ে গেছে। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৪১৩}
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ يَعْنِى ابْنَ مَسْعُودٍ قَالَ : مَنْ لَمْ يُدْرِكِ الإِمَامَ رَاكِعًا لَمْ يُدْرِكْ تِلْكَ الرَّكْعَةَ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি ইমামের সাথে রুকু পায়নি, সে উক্ত রাকাত পায়নি। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৪১১}
عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ قَالَ : خَرَجْتُ مَعَ عَبْدِ اللَّهِ يَعْنِى ابْنَ مَسْعُودٍ مِنْ دَارِهِ إِلَى الْمَسْجِدِ ، فَلَمَّا تَوَسَّطْنَا الْمَسْجِدَ رَكَعَ الإِمَامُ ، فَكَبَّرَ عَبْدُ اللَّهِ وَرَكَعَ وَرَكَعْتُ مَعَهُ ، ثُمَّ مَشَيْنَا رَاكِعَيْنِ حَتَّى انْتَهَيْنَا إِلَى الصَّفِّ حِينَ رَفَعَ الْقَوْمُ رُءُوسَهُمْ ، فَلَمَّا قَضَى الإِمَامُ الصَّلاَةَ قُمْتُ وَأَنَا أَرَى أَنِّى لَمْ أُدْرِكْ ، فَأَخَذَ عَبْدُ اللَّهِ بِيَدِى وَأَجْلَسَنِى ، ثُمَّ قَالَ : إِنَّكَ قَدْ أَدْرَكْتَ
হযরত জায়েব বিন ওহাব থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একদা আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর সাথে তাঁর ঘরে থেকে মসজিদের দিকে বের হলাম। তারপর যখন আমরা মসজিদের মাঝে পৌঁছলাম তখন ইমাম রুকু করে ফেলে। তখন আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ তাকবীর বলে রুকু করলেন। আর আমিও তার সাথে রুকু করলাম। তারপর আমরা রুকু অবস্থায় চলতে লাগলাম। অবশেষে আমরা মুসুল্লিদের মাথা উঠানোর সময় কাতারের সাথে মিলিত হলাম। তারপর যখন ইমাম সাহেব নামায শেষ করল। আমি দাঁড়ালাম। কারণ আমার ধারণা ছিল আমি [এক] রাকাত পায়নি। তখন আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ আমার হাত ধরে বেিসয়ে দিলেন। তারপর বললেনঃ তুমিতো রাকাত পেয়েছো। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৬৯০,২৪১৮, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৯৩৫৫, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৬৩৭, মারেফাতুস সুনান ওয়ালা আসার, হাদীস নং-৮৬৫}
★নামাযের শুরুতে যে তাকবীর বলে নামাযে প্রবেশ করা হয়, সেটি হল তাকবীরে তাহরীমা। এটি ফরজ। আর এ তাকবীর আদায়ের স্থান হল দাঁড়িয়ে বলা। সুতরাং কোন ব্যক্তি সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে রুকুতে যেতে যেতে তাকবীর বলতে থাকে, তাহলে মূলত সেটি তাকবীরে তাহরীমা হচ্ছে না। তাকবীরে ইন্তিকালিয়া হয়ে যাচ্ছে। আর তাকবীরে তাহরীমা না হলে নামায হয় না। সে হিসেবে উক্ত ব্যক্তির নামায হবে না।
আগে সোজা দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলার পর রুকুর তাকবীর বলে রুকুতে যাবে। যেতে যেতে বলবে না।
,
★রাকাত পাওয়ার জন্য রুকু পাওয়া জরুরি। আর রুকু পাওয়ার জন্য অল্প সময় ইমামের সাথে রুকুতে শরিক হওয়াই যথেষ্ট। ইমামকে এক তাসবীহ পরিমাণ পাওয়া জরুরি নয়। তবে ইমামের সাথে রুকুতে শরিক হওয়ার পর অন্তত এক তাসবীহ পরিমাণ বিলম্ব করে উঠবে।
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৫৩৪; শরহুল মুনইয়াহ ৩০৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/১২৬,
হাদীস শরীফে এসেছে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَا أَدْرَكْتُمْ فَصَلُّوا، وَمَا فَاتَكُمْ فَاقْضُوا.
অর্থাৎ তোমরা ইমামকে যে অবস্থায় পাও নামাযে শরীক হয়ে যাও, আর যতটুকু ছুটে গেছে তা (জামাত শেষে) আদায় কর। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩৬
সুতরাং ইমামকে যে অবস্থায়ই পাওয়া যাক নামাযে শরীক হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ইমামকে রুকু অবস্থায় পাক বা রুকু থেকে দাঁড়ানো অবস্থায়- উভয় ক্ষেত্রে হাত বাঁধতে হবে না। বরং দু’হাত তুলে তাকবীরে তাহরিমা বলে হাত না বেঁধে রুকুর তাকবীর বলে রুকুতে যাবে বা ইমাম দাঁড়িয়ে গেলে হাত না বেঁধে ইমামের সাথে নামাযে শরীক হবে।
,