আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
ইদানীং এক শ্রেণীর মানুষের কাছে কুরবানির পশুর ছবি ও বেশি বেশি জবাই ও কসাইগিরির ছবি দেয়া অনেক উত্তম কাজ। এতে নাকি ভিন্নমতালম্বীদের পশ্চাতে বেশি আঘাত করা হয়। মূলত ভিন্ন ধর্ম ও মতালম্বীদের টার্গেট করে তাদের খোচা মেরে এ ধরণের পোস্ট বেশি করা হয়। অথচ, আমার কাছে এগুলো অত্যন্ত নিকৃষ্ট কাজ লাগে। কারণ,


১। কুরবানি আমার কাছে আনন্দের পাশাপাশি বেদনার ও বিষয়। কারণ, পশুর যন্ত্রণা আমি সহ্য করতে পারিনা। আল্লাহর রাস্তায় ত্যাগ অবশ্যই খুশির বিষয় কিন্তু তাতে ব্যথিত হওয়া টা ও উচিত মনে করি।


২। এভাবে বেশি বেশি কুরবানির ছবি পোস্ট করা, কসাইগিরির ছবি পোস্ট করা নৃশংসতা কে প্রমোট করে মনে হয়।
৩। রাসুল (সা.) বা সাহাবিগণ বিধর্মীদের খোচা দেয়ার উদ্দেশ্যে কিছু করেছেন বলে জানা নেই।

এজন্য কুরবানি আমি প্রকাশ্যে দিব কিন্তু ফেসবুকে প্রচার করার বিরোধী কারণ এতে অমুসলিমরা ইসলাম কে নৃশংস ভাবতে পারে।

একজন একটা পোস্ট দিয়েছে এমন:


কুরবানির পশু, মাংসের ছবি ইত্যাদি বেশি বেশি পোস্ট করুন। শাহবাগীদের পশ্চাতদেশে আগুন লাগিয়ে দিন।
হালালে আবার সরম কিসের??
গরীব দু:খীর কষ্ট পাওয়ার অযুহাত দেখালে বলবেন, "ইসলাম কুরবানির পশুর মাংস গরীব দু:খীদের সাথে ভাগাভাগি করে খাওয়ার শিক্ষাই দিয়েছে। আমরাও তাদেরকে দিয়ে এবং সাথে নিয়েই খাই।
আলহামদুলিল্লাহ।


এ পোস্টের প্রথম তিনটা লাইন যথেষ্ট আপত্তিজনক। যা ইসলামের শিক্ষার সাথে যায়না বলে মনে করি।


আমার প্রশ্ন:

১। উপরোক্ত পোস্ট বা চিন্তাধারা বা কার্যকলাপ কি ইসলাম অনুমোদন করে?

২। আমার চিন্তাধারা কি ইসলাম সমর্থন করে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামের মৌলিক বিধান হচ্ছে, জড়বস্তুর ছবি তোলা ও আঁকায় শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। আর প্রাণীর ছবি প্রয়োজন ছাড়া তোলা, সংরক্ষণ করা, প্রকাশ করা, ব্যবহার করা হারাম।  

তবে শরীয়তে ছবি বলতে কী বোঝায়, এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও বিশ্লেষণ রয়েছে। 

আরো জানুনঃ  

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তোলা, কম্পিউটার ও মোবাইলে সংরক্ষিত ছবিও ‘নিষিদ্ধ ছবি’র অন্তর্ভুক্ত বিধায় এটিও হারাম। 

সহিহ হাদিসে এসেছে,
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِي النَّارِ يُجْعَلُ لَهُ بِكُلِّ صُورَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسٌ فَيُعَذِِّبُهُ فِي جَهَنَّمَ
প্রত্যেক ছবিনির্মাতা জাহান্নামে যাবে, তার নির্মিত প্রতিটি ছবি পরিবর্তে একটি করে প্রাণ সৃষ্টি করা হবে, যা তাকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে। (বুখারী ২২২৫, ৫৯৬৩, মুসলিম ৫৬৬২)

হাদিস শরীফে এসেছে,
قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى ﷺ يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

আ’মাশ তিনি  মুসলিম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুকের  সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিন ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ্  রাযি.-এর নিকট শুনেছি, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তাআলা কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।’ (বুখারী ২/৮৮০)

আরো জানুনঃ

তবে কিছু কিছু বিশেষজ্ঞের মতে তা জায়েয। 
তাদের বক্তব্য হলো কম্পিউটার ও মোবাইল স্ক্রীনে থাকা প্রাণীর (অশ্লীল ও নারীর ছবি ছাড়া) ছবি প্রিন্ট করার আগ পর্যন্ত জায়েজ বলেছেন জামিয়া বিন্নুরিয়া পাকিস্তানের ফাতওয়া বিভাগ।

কম্পিউটার স্ক্রীনে বা মোবাইল স্ক্রীনে ছবি না রাখাটাও তাক্বওয়ার দাবী। 
 
আরো জানুনঃ 
,
★উপরোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলবো যে কুরবানী উপলক্ষে বা অন্য যেকোনো সময়  এভাবে প্রানীর ছবি পোস্ট না করাই সতর্কতা।

তবে কুরবানী বিরোধীদের জবাব দেয়ার লক্ষ্যে এভাবে ছবি পোস্ট করাকে অনেক ইসলামী স্কলারগন সমর্থন দিয়েছেন।
তাই এটিকে নাজায়েজ বলা যাবেনা।

হ্যাঁ,এক্ষেত্রে কাহারো দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে,সেটা আলাদা বিষয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...