আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
145 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (21 points)
আসসালামু আলাইকুম,
নীলক্ষেত মেডিক্যালের বই বিক্রি করা হয়।তার অধিকাংশই ছাপানো হয় পিডিএফ থেকে।এর মধ্যে কিছু বই বাংলাদেশে আসে না আর কিছু বই আসলেও অনেক দাম পড়ে-১০০০০ এর নীচে নেই তার উপর বা অনেক উপর।আমি আগে ভাবতাম ওনারা হয়তো পারমিশন নিয়েই ছাপান কিন্তু গত কদিন আগে আমি একটা বই নিতে যাই,তো ওনারা আমাকে বলেন এই বইটার মেইন কপি বাংলাদেশে আসেনা, আমরা প্রিন্ট করে বিক্রি করি।(মেইন বইটার দাম-২০৮ ডলার,শিপমেন্ট সহ ৩৭৮ ডলার হবে) আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে তখন ওনি আমাকে অন্য লাইব্রেরিতে পাঠান,আমি ওখানে গেলে ওনি বলেন ছাপানোর দাম কত পড়বে সেটা পিডিএফ দেখে বলতে হবে।ওনি পিডিএফ খুঁজে না পেলে আমাকে বলেন আমি বলি আমার কাছে আছে আপনি পেইজ নাম্বার দেখতে পারেন,তো ঘটনাক্রমে বুঝাগেল ওনারা চুরি করে বইটা ছাপান পিডিএফ  থেকে বা এর একটা মেইন কপি এনে সেটা স্কেন করে পিডিএফ বানিয়েছেন কারণ এই বইগুলির যে পিডিএফ পাওয়া যায় তা মেইন টেক্সটের মতো না,পড়ার সুবিধার্থে পেইজ নাম্বার বেশি আর কোন পিডিএফ ছাপানোর অনুমতিও দেওয়া হয়না।এখন বইটা ওনার থেকে নেওয়া কি জায়েজ হবে।সব লাইব্রেরিতেই এমন।

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে,তার আবিস্কৃত জিনিষ অস্তিত্বমান বস্তু হোক বা অস্তিত্বহীন, নিঃসন্দেহে সেইব্যক্তি অন্যের তুলনায় তা থেকে উপকৃত হওয়ার, প্রস্তুত করার এবং মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করার বেশী অধিকারী।

কেননা, আবু দাউদ শরীফে হযরত আসমুর ইবনে মুদরাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, 'আমি নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে তার হাতে বাইআত গ্রহণ করি।এ সময় নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,' যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হল, যে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয় নাই,তাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির।(যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।)আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)
,
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যাতিত তাহার পিডিএফ ছাপিয়ে বিক্রয় করা জায়েজ নেই।
এটা কর্তৃপক্ষের সাথে ধোঁকা দেওয়ার শামিল।
 
শরীয়তের বিধান হলো  কাউকে কোনোভাবেই ধোকা দেওয়া জায়েজ নেই।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি কোনো বই বা কিতাবের প্রকাশনীর সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ সম্ভব না হয়, এবং তার কোনো কপিও বাজারে না পাওয়া যায়,তাহলে উক্ত কিতাবের পিডি এফ থেকে নিজের জন্য ছাপানো যাবে।এবং কিতাবটি মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট হলে বানিজ্যিক ভাবেও ছাপানো যাবে।তবে এর পূর্বে প্রকাশীর সাথে যোগাযোগের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।

আরো জানুনঃ 

অপারগ অবস্থায় পরবর্তীতে মালিককে মূল্য পৌছানোর শর্তে বা অনুমতি নেয়ার শর্তে ফটোকপি করা যেতে পারে।
কোনো বই বা কিতাব পুরাতন হোক,সংরক্ষিত প্রকাশনায় প্রকাশকের অনুমতি ব্যতীত ঐ প্রকাশনার কোনো কপি করা যাবে না।

বিস্তারিত জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
https://www.ifatwa.info/1403 ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে 

প্রকাশনা স্বত্ব সংরক্ষিত এমন বইয়ের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমতি ব্যতীত কোনো প্রকার কপি বা পিডিএফ ফাইল তৈরী করা ও বিক্রি করা কখনো জায়েয হবে না।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে 

 (১) যেহেতু স্বত্ব সংরক্ষিত বইয়ের সাথে লিখক প্রকাশকের হক্ব জড়িত।তাই যথাযথ অনুমতি ব্যতীত এ জাতীয় বইয়ের ফটোকপি ক্রয় করাও জায়েয হবে না।এবং এতে বরকতও থাকবে না। 

 (২) যেহেতু বইয়ের গায়ে লিখাই থাকে যে,স্বত্ব সংরক্ষিত। তাই এটাই স্বাভাবিক যে,তা অনুমতি ব্যতীত ই কপি করা হয়েছে।কেননা গ্রন্থাকার এটাই চান যে,কেউ উনার কিতাব পড়তে চাইলে ক্রয় করে পড়ুক।হয়তো এতে উনার আর্থিক কিছু স্বার্থ জড়িত রয়েছে,বিধায় তিনি বইয়ের সাথে লিখেই দিয়েছেন যে,স্বত্ব সংরক্ষিত।তবে ব্যতিক্রমও থাকতে পারে। সুতরাং আমাদের জন্য উচিৎ,যতক্ষণ পর্যন্ত স্পষ্টভাবে অনুমোদনের বিষয়টি না আসছে,ততক্ষণ পর্যন্ত এত্থেকে বেঁচে থাকা।  

(৩) অন্য কোনো ভাবে এই প্রয়োজন মিটানো সম্ভব না হলে,এই শর্তে হয়তো জায়েয হতে পারে যে,ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী হলে উনি প্রকাশক/লিখকের নিকট এর যথাযথ মূল্য পরিশোধ করে দিবেন।
বা অনুমতি নিবেন। 
,
সেই হিসেবে সেই কপি ক্রয় করা জায়েজ হবে।
,
(আরেকটি বিষয় সেটি হলো কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে যদি কোনোভাবেই সেটির মুল কপি বাজারে না পাওয়া যায়,বা সেটি ক্রয় করা দুঃসাধ্য হয়ে যায়,তাহলে বিশেষ প্রয়োজনে সেটি ক্রয় করা যাবে।
এটি কিছু আলেমদের মত।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...