আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)

নিম্নলিখিত দৃশ্যের উপর ভিত্তি করে আমি আপনার কাছ থেকে একটি পরামর্শ চাই:

ডাঃ '' একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। উন্নত দেশে ওষুধ রপ্তানি করে এমন একটি অন্যতম সেরা কোম্পানির সঙ্গে তিনি ব্যবসায়িক চুক্তি করেন। চুক্তি অনুসারে, তিনি একটি নির্দিষ্ট রোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট ওষুধ লিখবে যা পূর্বোক্ত নামকরা কোম্পানি তৈরি করে। ওষুধের দাম অন্যান্য কোম্পানির দামের মতো এবং গুণমান অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় উন্নত বা অনুরূপ। চুক্তি হিসেবে ওই কোম্পানি থেকে চিকিৎসক মাসিক বেতন পাবেন।

চুক্তির শর্তাবলীঃ

০১। চিকিৎসক প্রেসক্রিপশনে রোগের অবস্থা অনুযায়ী ওষুধ লিখবেন।

০২। রোগীর শারীরিক অবস্থা সর্বদা অগ্রাধিকার পাবে।

০৩। চুক্তির উপর চিকিৎসকের নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

০৪। ওষুধের দাম বাড়লে, চুক্তির পুনঃমূল্যায়নের পর চিকিৎসক রোগীর উন্নতির জন্য বিকল্প ওষুধ বিবেচনা করবেন। দেশের বেশির ভাগ স্বনামধন্য কোম্পানী যদি কোন সুনির্দিষ্ট কারনে দাম বাড়ায়, তাহলে চিকিৎসক রোগীর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ওষুধ বেছে নেবেন। চিকিৎসক গ্রহণযোগ্য মূল্য (যা অধিকাংশ কোম্পানি ধার্য করবে) এবং গুণগতমান বিবেচনা করবেন। দামের কারণে গুণগত মানের সঙ্গে আপস করা হবে না। দাম মানের ভারসাম্য বজায় রাখা হবে। সেক্ষেত্রে পূর্বসম্মত ওষুধের দাম গুণগত মান সন্তুোষ্নক হলে তাই বহাল থাকবে।

০৫। যে কোনো পক্ষের চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার স্বাধীনতা রয়েছে।

০৬। যেহেতু এই ধরনের চুক্তির বিষয় হাসপাতাল কতৃপক্ষকে জানানোর কোন বিধান হাসপাতালের নীতিমালায় নেই, তাই এই বিষয়টি অবহিত করার ব্যাপারে চিকিৎসক বাধ্য নন। হাসপাতালের গঠনতন্ত্রে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উল্লেখ করা হয়নি যে এমন একটি বিষয়  অবহিত করতে হবে। এমনকি, চাকুরীর  চুক্তিতেও  প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বলা নেই যে কর্মচারীকে অবশ্যই এই ধরনের সম্পর্ক ঘোষণা করতে হবে। তাই এই সম্পর্ক ঘোষণার ব্যাপারে চিকিৎসকদের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

০৭। ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য কোনো বাধ্যবাধকতার (নিয়ম/নীতিমালা) জন্য চিকিৎসক দায়ী থাকবেন না।

 

যদি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি উপরোক্ত শর্তগুলির সাথে একমত হয়, তাহলে ব্যবসায়িক চুক্তি করা যাবে কি? উপার্জিত অর্থ হালাল হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ- 

ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

https://www.ifatwa.info/13447 ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ঔষধ কোম্পানি তাদের ঔষধের নাম লেখার জন্য ডাক্তারদের যে দামি-দামি জিনিস পত্র, নগদ অর্থ ইত্যাদি দেওয়া হয় তাও শরিয়ত সম্মত নয়। কারণ এটিও শরিয়তের দৃষ্টিতে বিনিময়হীন উৎকোচের শামিল। কেননা রোগির জন্য কোন গ্রুপের এবং কোন কোম্পানীর ওষুধ সর্বাধিক কার্যকরী তা লিখে দেয়া একজন চিকিৎসকের পেশাগত দায়িত্ব। অবশ্য বিভিন্ন ছোটখাট স্টেশনারি সামগ্রী নেয়া যেতে পারে।
যেমন : কলম, প্যাড ইত্যাদি। এগুলোতে ঔষধ কোম্পানির ট্রেডমার্ক এবং উৎপাদিত পণ্যের ট্রেড নাম ছাপানো থাকে। মূলত এগুলো কোম্পানির বিজ্ঞাপনের কাজ দেয়। তাছাড়া পণ্যগুলো এজন্যে নয় যে, সেগুলো বিক্রি করে অনেক টাকা উপার্জন করা যাবে। তাই এসব বিবেচনায় স্টেশনারি সামগ্রী গ্রহণ করা বৈধ।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
যদি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি উপরোক্ত শর্তগুলির সাথে একমত হয়,সেক্ষেত্রেও তাদের সাথে এভাবে ব্যবসায়িক চুক্তি করা যাবেনা।

 এক্ষেত্রে চুক্তি অনুযায়ী তাদের কোম্পানির ঔষধ লেখার বিনিময়ে উপার্জিত অর্থ হালাল হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...