আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
87 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
১। আমার এক বন্ধু রূপালি ব্যাংকের লিগাল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। তার উপার্জন কি হালাল? আর সে অবিবাহিত। তার কাছে মেয়ে বিয়ে দেয়া যাবে?
২। স্বামী যদি হারাম ইনকাম করে তবে তার অধীনস্থ স্ত্রী ও সন্তানদের ইবাদত কি কবুল হবে? তারাও কি হারাম রিজিকের অন্তর্ভুক্ত হবে।


৩। মৃত মানুষকে স্বপ্নে দেখার ব্যাখ্যা কি? আমি ঘুমের মধ্যে একবার আমার মৃত বাবাকে স্বপ্নে দেখি। সারমর্ম হচ্ছে: আমার বাবার আচরণে আমি ভয় পাচ্ছি, কখনো রেগে যাচ্ছি। আমার মা আমার বাবার পক্ষে। আমার বাবা আমার এক বন্ধুর স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে আমি ওই বন্ধুকে ডেকে এনে বলি ওরে (আমার বাবাকে) গলায় পাড়া দিয়ে মার। এই কথা টা আমি ঘুমেও চিৎকার করে বলি। আর কাপতে থাকি। অত:পর তিনবার আউযুবিল্লাহ পড়ে নিই। কিন্তু এরপরেও স্বপ্নের মধ্যে থাকি। এর ব্যাখ্যা কি হবে। উল্লেখ্য:

১। আমি বিবাহিত। রিজিক নিয়ে পেরেশানি। কোন চাকরিই থাকেনা। আর গায়েবি ভাবে আমার এমন ভুল হয় যে চাকরিই চলে যায়।

২। আগে দ্বীনদার ছিলাম। এখন নামাজ কালাম পড়িনা। উলটো কুফরি বাক্য মুখে চলে আসে।

৩। এক রাক্বী থেকে জানতে পারি আমার উপর খারাপ জ্বিনের বদনজর আছে। আমি কেন জানি কাউকেই নিজের ভাল কোন কথা বলতে পারিনা। সেটা উলটো খারাপ হয়ে যায়। রাক্বী যখন কুরান তিলাওয়াত করছিল তখন আমার ঘুম চলে আসছিল আর শরীর এমন ভাবে ছেড়ে দিচ্ছিল যে পরে অনেক আরাম লাগত। মনে হত হাওয়ায় ভাসছি। শরীর পাতলা লাগত।

৪। আমি প্রায়ই ঘুমের মধ্যে চিৎকার করি আর কাপাকাপি করি। আর উলটা পালটা স্বপ্ন দেখি। আর ঘুমের মধ্যে স্ত্রী কে মারি। কান্না করি। কুকুরের মত স্বপ্ন দেখি।

 ৫। কিছুদিন আগে মনে হল আমি ঘুমের মধ্যে সালাম ফেরাচ্ছি। সম্ভবত নামাজ পড়ার স্বপ্ন দেখছিলাম

৬। আরো কয়েকমাস আগে আমি এলাকার মসজিদ সুন্দর করে সাজাতে ও মুসল্লিদের নামাজ পড়তে দেখেছিলাম যার ব্যাখ্যায় আপনারা বলেছিলেন আমার পরবর্তী জীবন কল্যাণকর হবে।


এখন আমার মূলত কি সমস্যা আর স্বপ্ন গুলো কি মিন করছে?
by (58 points)
উত্তরের অপেক্ষায়

1 Answer

0 votes
by (559,290 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে সহযোগিতা করা সবই হারাম।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨] 

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮] 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠] 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০] 

হাদিস শরিফে  এসেছে-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.

আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

ব্যাংকের অবস্থা এই যে, তার পূর্ণ সম্পদ কয়েকটি বিষয়ের সমষ্টি। যথা-

১-মূলধন।
২-সঞ্চয়কারীদের জমাকৃত টাকা।
৩-জায়েজ ব্যবসার আমদানী।
৪-সুদ এবং হারাম ব্যাবসার আমদানী।

এ চারটি বিষয়ের মাঝে কেবল ৪র্থ সুরতটি হারাম। বাকিগুলো যদি কোন হারাম কাজ না হয় তাহলে মূলত জায়েজ।
,
যেসব ব্যাংকে প্রথম ৩টি বিষয়ের লেনদেন অধিক। আর ৪র্থ বিষয়টি তথা হারাম লেনদেনের লভ্যাংশ কম সেসব ব্যাংকে সেসব ডিপার্টমেন্টে চাকরী করা যাতে হারাম কাজ করতে না হয় তাহলে তা জায়েজ হবে। এবং বেতন নেওয়াও জায়েজ হবে। তবে উত্তম হল এ চাকরীও ছেড়ে দেয়া।
,
কিন্তু যদি হারাম আমদানী বেশি হয় হালালের তুলনায়, বা হারাম কাজে জড়িত হতে হয় তাহলে উক্ত ব্যাংকে চাকরী করা জায়েজ নয়। এ থেকে বেতন নেওয়াও জায়েজ নয়। বেতন নিলে তা হারাম হিসেবে গণ্য হবে। {ফাতওয়ায়ে উসমানী-৩/৩৯৪-৩৯৬}
,
ব্যাংকে চাকুরী সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির উপার্জন হারাম।

এক্ষেত্রে তার সাথে মেয়ে বিয়ে দেয়ার বিধান জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/95781/
https://ifatwa.info/75696/

(০২)
স্বামীর ইনকাম হারাম হলে এক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য মাসয়ালাঃ
স্বামীর উপার্জন ছাড়া নিজস্ব হালাল সম্পদ দিয়ে চলা যদি স্ত্রীর পক্ষে সম্ভব হয়, তাহলে স্বামীর হারাম টাকা নেয়া বৈধ হবে না।

আর যদি স্ত্রীর আলাদা কোন উপার্জন না থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় অর্থ নেয়া জায়েজ হবে। সেই সাথে স্বামীকে সর্বদা হারাম ছেড়ে দিয়ে হালাল উপার্জন করতে তাকিদ দিতে থাকবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আবশ্যকীয় প্রয়োজন অতিরিক্ত রিজিক/টাকা না নিলে বরং আবশ্যকীয় প্রয়োজনের জন্য স্ত্রী মেয়ে সন্তান ও নাবালেগ ছেলে সন্তানের ইবাদত কবুল হবে।

(০৩)
এক্ষেত্রে করনীয় জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/8929/

(৪-৬)
এটির চিকিৎসা কোরআনে কারিম তিলাওয়াত ও জিকির-আজকারের মাধ্যমে, দোয়া দরুদ, চার কুল পাঠ ও আয়াতুল কুরসি পাঠসহ সুন্নাহভিত্তিক অন্যান্য আমলের মাধ্যমে করতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا الْمُفَضَّلُ بْنُ فَضَالَةَ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ كُلَّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ ثُمَّ نَفَثَ فِيْهِمَا فَقَرَأَ فِيْهِمَا(قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ)وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ) وَ (قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ) ثُمَّ يَمْسَحُ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, প্রতি রাতে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সূরাহ ইখ্লাস, সূরাহ ফালাক ও সূরাহ নাস পাঠ করে দু’হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখ ভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন। [বুখারী শরীফ ৫০১৭.৫৭৪৮, ৬৩১৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৬৪৮)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার প্রতি পরামর্শঃ-
আপনি পাক বিছানায় ঘুমানোর চেষ্টা করবেন।
আপনি যেই অবস্থায় থাকুন না কেনো,প্রত্যেক রাতে ঘুমানোর আগে অযু করবেন,আয়াতুল কুরসী পড়বেন,তিন কুল তিনবার পড়ে পুরো শরীর তিনবার ফুক দিবেন।
,
ইনশাআল্লাহ আর কোনো সমস্যা হবেনা। 

আরো করনীয় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...