পারিবারিক ঝামেলা ও রিযিকের ব্যবস্থা নিয়ে

Question

الســـــــــــــــلام عليكم ورحمة اللّٰه وبركاته  আমার এক পরিচিত বোনের পরিবারে খুবই আর্থিক সমস্যা। তার আব্বুর কোনোরকম ইনকাম নেই বললেই চলে কারণ সে চাকরী করে না। ব্যবসা করতেন। ব্যবসাতে লস খেয়ে এখন কোনো ইনকামই নেই। কোনো কাজ করতে গেলে সেটা সফল ও হয় না। এই কারণে তার আব্বু সারাক্ষণ বিক্ষিপ্ত মেজাজে থাকেন। সারাক্ষণ ঘরের মধ্যে স্ত্রী মেয়েদের সাথে চিল্লাফাল্লা করেন। আর শুধু বলেন ভাগ্য খারাপ। আল্লাহ'র শুকরিয়া আদায় করার পরেও বলতে থাকেন 'ভাগ্য খারাপ', 'আল্লাহ ভাগ্যে কিছুই দেন নি' 'সবাই কত উন্নতি করে আমার কিছু হয় না' এই জাতীয় কথা বলেন। আর যেকোনো কাজ করার আগেই ধরে নেন সেটা আর হবে না। সবকিছুই নেগেটিভলি নেন। স্ত্রী সন্তানদের কপালের দোষ দেন। সে ভাবে তার স্ত্রী সন্তানদের কপালে ভালো কিছু থাকলে তার ও ভালো হতো। এসব ব্যবহারের জন্য সে তার স্ত্রী ও সন্তানদের  মন থেকে উঠে যাচ্ছেন দিন কে দিন। মেয়েরা তো তার বাবার সাথে একান্ত প্রয়োজন ব্যতীত কথাই বলে না। এখন স্ত্রী ও তাই করেন। স্ত্রী ভালো কিছু বললেও তার স্বামী চিল্লাফাল্লা করে। আর অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে। এমনকি ফজরের নামাজের সময় অব্ধি উনার স্ত্রী উনাকে ডেকে দেন এই ভয়ে যে না জানি আবার কি বকাবাদ্য করে। প্রশ্ন হচ্ছে,

১। ভদ্রলোকের সারাদিন ভাগ্যের উপর এমন দোষারোপ করার জন্য কি উনার গুনাহ হচ্ছে?
২। তার কোনো কাজেই সফল না হওয়ার কারণ কি হতে পারে? আল্লাহ কি কোনোভাবে নারাজ?
৩। উনার স্ত্রী যে নামাজে উনাকে ডেকে দেয় না, এতে স্ত্রীর গুনাহ হচ্ছে? সাথে মেয়েদের ও?

৪। কিভাবে আমল করলে রিযিক বৃদ্ধি  হবে?

আরেকটা প্রশ্ন হচ্ছে, তাফসীরের কিতাব কি ওযু ছাড়া স্পর্শ করা যাবে???

Answer 1

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

(১)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন- 

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -(ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.

আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)। 

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- 58 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

জীবন,মৃত্যু,রিযিক সবকিছুই তাকদীরে লিখিত রয়েছে। ফয়সালা তাকদীর অনুযায়ী-ই হবে। সুতরাং আফসোস করার কিছু নেই,যা প্রাপ্য সেটাই অর্জিত হবে। নিজ ভাগ্যকে দোষারোপ করা,নিজেকে বা পরিবারের লোকদের বদনসিব মনে করা গোনাহ। 

(২)

আল্লাহর হুকুম নেই, তাই তিনি সফল হচ্ছেন না। যখন আল্লাহর হুকুম হবে, তখন অবশ্যই সফল হবেন। আল্লাহর কাছে সফলতা চেয়ে দু'আ করতে হবে।

(৩)

স্ত্রী বা মেয়েদের জাগিয়ে দেয়া উচিৎ। তবে গালিগালাজের ভয়ে জাগিয়ে না দিলে গোনাহ হবে না,ইনশা'আল্লাহ।

(৪)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ـ ﻳﻘﻮﻝ : " ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﻮﺍﻗﻌﺔ ﻛﻞ ﻟﻴﻠﺔ ﻟﻢ ﺗﺼﺒﻪ ﻓﺎﻗﺔ ﺃﺑﺪًﺍ "

তরজমাঃ- তিনি বলেন, নবীজী ﷺ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে সূরা ওয়াকেয়া তিলাওয়াত করবে; সে কখনও অভাব-অনটনে পতিত হবেনা।’ (শু‘আবুল ঈমান, হাদীস নং-২৪৯৯), বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 459