বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনার প্রশ্নের জবাবের পূর্বে লিম্নোক্ত ফাতাওয়াটি লক্ষণীয়--
যখন সারা ওয়াক্ত ব্যাপী উযর দেখা দিবে,তখন আপনি মা'যুর হিসেবে গণ্য হবেন।
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়াজ জন্য শর্ত হলো,
شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-
শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)
সুতরাং যদি কোনো একদিন কোনো একটি নামাযের সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,বায়ু উযরের কারণে ফরয নামায পড়া আপনার জন্য সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। অন্যথায় শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।
কেউ শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হলে,তার জন্য প্রতি ওয়াক্তে একটি ওজুই যথেষ্ট।আর শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত না হলে,তখন প্রতি নামাযের জন্য পৃথক পৃথক ওজু করতে হবে।নামাযে যখনই ওজু চলে যাবে,তখন আবার ওজু করে নামাযকে পড়তে হবে।
মা'যুরের বিধান সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-
কিন্তু যদি উযর কখনো কমে আসে,সারা ওয়াক্ত ব্যাপী না থাকে,বরং কমপক্ষে এতটুকু সময় পাওয়া যায় যে,উক্ত ওয়াক্তের ফরয সুন্নত নামায পড়া যায়,তাহলে তখন ঐ ব্যক্তি মা'যুর হিসেবে গণ্য হবে না।সুতরাং তখন হুকম হলো,প্রয়োজন হলেও বারবার ওজু করে নামাযকে সম্পন্ন করবে।
সুতরাং,
যখন আপনার এ রোগ কমে আসবে,তখন আপনি প্রয়োজনে বারংবার অজু করে ঐ নামাযকে সম্পন্ন করবেন।অজুকে ধরে রাখার কৌশল হিসেবে প্রয়োজনে চেয়ারে বসে নামায পড়তে পারেন।
যদি আপনি মা'যুর প্রমাণিত না হন,
তাহলে আপনার জন্য পরামর্শ হল,
মসজিদে জুম্মার নামায পড়ার পর মসজিদের বাথরুম ইত্যাদিতে যেয়ে দেখবেন,বা প্রয়োজনে চেয়ারে বসে নামায পড়তে পারেন।যদি এই গুলোর কোনো একটিও সম্ভব না হয়,তাহলে আপনি তাহারাত সম্পর্কে ঈয়াকিন বিশ্বাস অটুট রাখার জন্য উক্ত অসুস্থতা কমার পূর্ব পর্যন্ত ঘরে যোহর পড়তে পারবেন।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
প্রস্তাবের পর ইস্তেঞ্জার বিধান হল,প্রস্রাব পায়খানার স্থানকে নাজাসত মুক্ত রাখা,পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা।সুতরাং প্রস্রাবের পর যত সময় ধরে টিস্যু ধরে রাখলে, লজ্জাস্থান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যাবে,তত সময় পর্যন্ত উক্ত স্থানকে টিস্যু ইত্যাদি রেখে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।তবে যদি কারো বাস্তবে কিছু না আসে,বরং অন্তরে সর্বদা সন্দেহ জাগ্রত হয়,তাহলে এমতাবস্থায় প্রস্রাবের পর হাতে যৎসামান্য পানি নিয়ে কাপড়ে ছিটিয়ে দিতে হবে।যাতেকরে ওয়াসওয়াসা দূর হয়ে যায়।
ইস্তেঞ্জার পদ্ধতি নিয়ে ফুকাহায়ে কেরাম পরামর্শ দেন,যে প্রস্রাবের পর লিঙ্গকে পিছন থেকে সামনের দিকে হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্টাঙ্গুলি দ্বারা নিংড়ানো।এদ্ধারা প্রস্রাবের নালিতে আটকে যাওয়া সমস্ত প্রস্রাব বের হয়ে যায়।
(২)
সর্বদা অজু করে পবিত্র থাকবেন।প্রস্রাব-পায়খানা সযত্নে করবেন।পরিমিত পানি পান করবেন।
(৩)
যেহেতু কাপড় পূর্ব থেকেই পবিত্র,সুতরাং এরকমভাবে কাপড় নাপাক হওয়ার সন্দেহ কাপড়কে নাপাক করবে না।কেননা, ফিকহের মূলনীতি হলো, "সন্দেহ পূর্ব ইয়াকিন-বিশ্বাসকে দূরবিত করে না।"
(৪)
জ্বী,এড়িয়ে যেতে পারেন।এজন্যই ফুকাহায়ে কেরাম,পানি দ্বারা লজ্জাস্থানের উপর ছিটকানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
(৫)
কিছু বের হলে বা কিছু বের হওয়ার অনুভূতি সৃষ্টি হলে,যদি কাপড়ে এর প্রমাণ পাওয়া যায়,তাহলে অজু চলে যাবে,এবং এক দিরহামের বেশী হলে,উক্ত কাপড় পরিহিত অবস্থায় নামায বিশুদ্ধ হবে না।তবে যদি কাপড়ে কোনো প্রমাণ না পাওয়া যায়,তাহলে অজুও ভঙ্গ হবে না।এবং নামাযেও কোনো প্রকার সমস্যা হবে না।
(৬)
প্রস্রাব হিসেবেই ধরে নেয়া হবে।প্রস্রাব বলেন আর মযি বলেন,উভয়ের বিধান একই।অর্থাৎ এক দিরহামের কম হলে উক্ত কাপড় দ্বারা নামায হবে।নতুবা নামাযই হবে না।