আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (17 points)
আসসসালামু আলাইকুম,

কুরবানীর সকল মাংশ সদকাহ করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাচ্ছিলাম। আমরা জানি কুরবানীর মাংশের কিছু অংশ নিজে খাওয়া, কিছু অংশ আত্বীয় সজন ও গরীব মিসকিন দের দান করে দেওয়া উত্তম। কিন্তু পুরো কুরবানী সদকা করে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধান কি হবে?

উদাহরণ স্বরুপ, শায়েখ আহমদউল্লাহ'র আসসুন্নাহ ট্রাস্টের মাধ্যমে অনেকেই কুরবানীতে অংশ নেন। সেখানে পশুর দাম ও প্রসেসিং ফি জমা দিতে হয়। তারা পশু কিনে তাদের তত্যাবধায়নে বিভিন্ন অঞ্চলে তা কুরবানী করে গরীব ও মিসকিন দের মাঝে বিলিয়ে দেন। শায়েখ আহমদউল্লাহ এটাতে তিনি উৎসাহ প্রদান করেন।

আরেকদিকে পাকিস্তানী স্কলার মুফতি তারিক মাসুদ সাহেবের এক বয়ানে তাকে বলতে শুনলাম, "কুরবানীর মাংশ আল্লাহ তালা খাওয়ার হুকুম দিয়েছেন। এই জন্য সকল মাংশ দান করে দেওয়া উচিত হবে না। কিছু হলেও নিজের জন্য রাখতে হবে।"

এখন যদি কোন ব্যক্তির কাছে দুইটা অপশনই থাকে, সে চাইলে নিজের বাড়ীতে কুরবানী করতে পারে আবার চাইলে পুরাটা সদকা করে দিতে পারে। তাহলে সেই ব্যক্তি কোনটাকে পছন্দ করবে এবং কোনটার উপার আমল করবে?
বা কারো বাড়ীতে যদি দুইটা কুরবানী পশু কেনার ব্যবস্থা থাকে এবং একটি বাড়ীতে কুরবানী করে এবং আরেকটি পুরাটাই সদকা করে দেয় তাহলে সেইটার হুকুম কি হবে? এবং দুইটা অপশনের মাঝে উত্তম কোনটা হবে?

আরেকটি সম্পুরক প্রশ্ন করতে চাই, কোন মাদ্রাসায় যেখানে ধনী এবং গরীব ও এতিম উভয় প্রকারের ছাত্র পড়াশোনা করে সেখানে কুরবানীর মাংশ দান করা কি ঠিক হবে?

1 Answer

0 votes
by (559,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজে খাওয়া,এক ভাগ গরিব মিসকিন,আরেক ভাগ আত্মীয়স্বজনকে দেয়া মুস্তাহাব।

তবে তিনভাগ না করে পুরো গোশত বা অধিকাংশ গোশত নিজে খাওয়াও জায়েজ আছে।
কেননা তিন ভাগ করা এটি আবশ্যকীয় বিধান নয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، - وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ وَابْنِ نُمَيْرٍ - قَالُوا حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ أَبِي سِنَانٍ، - وَهُوَ ضِرَارُ بْنُ مُرَّةَ - عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُورِ فَزُورُوهَا وَنَهَيْتُكُمْ عَنْ لُحُومِ الأَضَاحِيِّ فَوْقَ ثَلاَثٍ فَأَمْسِكُوا مَا بَدَا لَكُمْ وَنَهَيْتُكُمْ عَنِ النَّبِيذِ إِلاَّ فِي سِقَاءٍ فَاشْرَبُوا فِي الأَسْقِيَةِ كُلِّهَا وَلاَ تَشْرَبُوا مُسْكِرًا "

আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বাহ, মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু নুমায়র ও মুহাম্মাদ ইবনুল মুসান্না (রহঃ) [শব্দগুলোর আবূ বাকর ও ইবনু নুমায়র এর] ... ইবনু বুরায়দাহ (রহঃ) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বুরায়দাহ ইবনু হুসায়ব ইবনু আবদুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদেরকে কবর বিয়ারাত করতে নিষেধ করতাম। (এখন অনুমতি দিচ্ছি) তোমরা কবর যিয়ারাত করতে পার। আমি ইতোপূর্বে তিনদিনের বেশী কুরবানী গোশত রাখার ব্যাপারে তোমাদেরকে নিষেধ করতাম। এখন তোমাদের যতদিন ইচ্ছা রাখতে পার। এছাড়া আমি তোমাদেরকে পানির পাত্রে নবীয তৈরি করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা যে কোন পানির পাত্রে তা তৈরি করতে পার। তবে নেশার বস্তু (মাদকদ্রব্য) পান করো না।

(মুসলিম শরীফ ২১৫০.ইসলামী ফাউন্ডেশন ২১২৯, ইসলামীক সেন্টার ২১৩২)

ইমাম আহমাদ বলেন: আমাদের অভিমত হল আব্দুল্লাহ্ বিন আব্বাস (রাঃ) এর হাদিস: "সে নিজে এক তৃতীয়াংশ খাবে, এক তৃতীয়াংশ খাওয়াবে (যে চায়); আর এক তৃতীয়াংশ মিসকীনদেরকে দান করবে।" হাদিসটি আবু মুসা আল-ইসফাহানি "আল-ওয়াযায়িফ" নামক গ্রন্থে বর্ণনা করার পর বলেন: এটি হাসান হাদিস এবং ইবনে মাসউদ (রাঃ) ও ইবনে উমর (রাঃ) এর অভিমত। সাহাবীদের মধ্যে অন্য কেউ এ দুইজনের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন মর্মে জানা যায় না।[আল-মুগনী (৮/৬৩২)]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কুরবানীর গোশত তিন ভাগ করা মুস্তাহাব।

কেহ যদি সম্পূর্ণ নিজে খায়,সেটাও যেমন জায়েজ।
তদুপরি কেহ যদি সম্পূর্ণ গরিবদের দিয়ে দেয়,সেটাও জায়েজ।
এক্ষেত্রে কেহ যদি সম্পূর্ণ গোশত গরিবদের দিয়ে দেয়,সেক্ষেত্রে তার বাসাতে যেকোনোভাবেই গোশত থাকেই,সুতরাং এতে সমস্যা নেই।

★উল্লেখ্য, ঈদুল আযহার দিন গুলি যেহেতু আল্লাহর মেহমানদারির দিন,তাই তার বাসায় যদি অন্য কোনো ভাবে এই কয়দিনে গোশত ম্যানেজ না হয়,একেবারে গোশত ছাড়াই খাবার খেতে হয়,সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণ গোশত গরিবদের না দিয়ে নিজে কিছু রাখার পরামর্শ থাকবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

নুবাইশা আল-হুযালী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
أَيَّامُ التَّشْرِيقِ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ وَذِكْرٍ لِلَّهِ

“আইয়্যামে তাশরীক পানাহার ও আল্লাহর যিকিরের দিন”।[সহীহুল জামে হা/২৬৮৯-নুবাইশা আল হুযালী রা. থেকে বণিত]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন:
لا تَصُومُوا هَذِهِ الأَيَّامَ فَإِنَّهَا أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ
“তোমরা এই দিনগুলোতে রোযা রাখিও না। কেননা, এগুলো পানাহারের দিন।” (সহীহল জামে, হা/৭৩৫৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...