মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
لِّیَشۡہَدُوۡا مَنَافِعَ لَہُمۡ وَ یَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ فِیۡۤ اَیَّامٍ مَّعۡلُوۡمٰتٍ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ۚ فَکُلُوۡا مِنۡہَا وَ اَطۡعِمُوا الۡبَآئِسَ الۡفَقِیۡرَ ﴿۫۲۸﴾
'তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে প্রদান করেছেন, তার ওপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে। অতঃপর তোমরা তা থেকে নিজেরা আহার করো এবং দুঃস্থ, অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। ’ (সূরা হজ : ২৮)
কুরআন কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে,
وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَکًا لِّیَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ؕ فَاِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ فَلَہٗۤ اَسۡلِمُوۡا ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُخۡبِتِیۡنَ ﴿ۙ۳۴﴾
‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি। যাতে আমি তাদেরকে জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি; সেগুলোর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। ’
(সূরা হজ : ৩৪)
উল্লিখিত দু’টি আয়াত থেকে পরিষ্কার বুঝে আসে কোরবানির পশু হতে হবে গৃহপালিত প্রজাতিভুক্ত। কোরবানি ও হজ সংক্রান্ত হাদিসগুলোতে কোরবানি যোগ্য যেসব পশুর নাম পাওয়া যায়- তার সবগুলোই গৃহপালিত পশু।
উক্ত আয়াতদ্বয় এবং এ সংক্রান্ত হাদিসগুলোর ভিত্তিতে প্রাচীনকালের ইসলামিক স্কলাররা মত ব্যক্ত করেছেন যে, কোরবানির শুদ্ধ হওয়ার জন্য পশু গৃহপালিত প্রজাতির হওয়া শর্ত। কোনো বন্য পশু দিয়ে কোরবানি করলে তা শুদ্ধ হবে না।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বলা হয়েছে, ‘কোনো বন্য পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ নেই। যদি বন্য ও গৃহপালিত পশুর সংমিশ্রণে কোনো পশুর জন্ম হয় তবে তার হুকুম নির্ধারণের জন্য মা পশু ধর্তব্য হবে। যদি মা পশু বন্য হয় এবং পিতা পশু গৃহপালিত হয় তবে তা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। ... আর যদি এমন কোনো বন্য হরিণ দিয়ে কোরবানি করা হয়- যাকে পোষ মানানো হয়েছিল অথবা এমন কোনো বন্য গরু দিয়ে কোরবানি দেওয়া হয় যাকে লালন-পালন করা হয়েছিল তবুও সে কুরবানি জায়েজ হবে না।
অতএব, উপরোক্ত আয়াতের বাহ্যিক অর্থ ও ইসলামিক স্কলারদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বলা যায়, সরকার ও বন বিভাগ কর্তৃক পাহাড়ি গয়ালের আবাদ ও বাজারজাতের অনুমতি থাকা সত্বেও, বন্য পশুর তালিকা থেকে গয়ালের নাম কেটে দেওয়া হলেও এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের লোকালয়ে তা আবাদ হলেও পাহাড়ি গয়াল দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। তবে কোরবানি ব্যাতীত তা জবাই করে খাওয়া জায়েজ। অর্থাৎ গয়ালের গোশত জায়েজ কিন্তু কোরবানি জায়েজ নয়।
★শরিয়তের দৃষ্টিতে হিংস্র ও নোংরা প্রাণি খাওয়া নাজায়েয। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَيُحَرِّمُ عَلَيهِمُ الخَبائِثَ
‘আর তাদের জন্য হারাম করা হয়েছে খাবায়েস (নোংরা বস্তু)।’ [সূরা আরাফ, আয়াত: ১৫৭]
তবে গয়াল হিংস্র ও নোংরা প্রাণির অন্তর্ভুক্ত নয়, বিধায় শরয়ি পন্থায় তা জবাই করা হলে খাওয়া জায়েয আছে।