আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
136 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (14 points)
recategorized by
১।চট্টগ্রাম এলাকায় এখন গয়াল পাওয়া যায়।আগে এরা শুধু বণ্য প্রাণী হিসাবেই ছিল।এখন এইটা লালন পালন করা যায় আর সরকার এইটার খামার করারও অনুমতি দিয়েছে।গৃহুয়ালিত গয়াল খাওয়া কি হারাম নাকি হালাল??এইটা দিয়ে কি কুরবানি করা জায়েজ হবে??

২।মুয়াবিয়া সুদখোর ছিলেন?এই হাদীসটা দিয়ে আসলে কি বুঝতেছি?

গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
অধ্যায়ঃ ২৩/ মুসাকাত ও মুযারাত (বর্গাচাষ) (كتاب المساقاة والمزارعة)
হাদিস নম্বরঃ ৩৯১৬


১৩. সুদ
৩৯১৬। উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর কাওয়ারীরী (রহঃ) ... আবূ কিলাবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শামে (সিরিয়ায়) এক মজলিসে উপস্থিত ছিলাম। তথায় মুসলিম ইবনু ইয়াসার (রাঃ)ও ছিলেন। এমন সময় আবূল আশ’আস আগমন করলেন। তারা বলল, আবূল আশ’আস, আমিও বললাম, আবূল আশ-আস (এসেছেন)। অতঃপর তিনি বসলেনঃ আমি তাঁকে বললাম, আমাদের ভাইদের নিকট উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) এর হাদীসটি শোনান। তিনি বললেন, আচ্ছা; আমরা একবার এক যুদ্ধে অবতীর্ণ হই। মুআবিয়া (রাঃ) ছিলেন সেনাপতি। প্রচুর পরিমাণ গনীমত আমাদের হস্তগত হয়। আমাদের এই গনীমতের মধ্যে রূপার একটা পাত্রও ছিল। মুআবিয়া (রাঃ) সেটি লোকদের বেতন-ভাতার বিনিময়ে বিক্রি করার জন্য একজনকে আদেশ দান করেন। লোকজন এ ব্যাপারে সকলেই আগ্রহ প্রকাশ করল।

উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি দণ্ডায়মান হন এবং বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিষেধ করতে শুনেছি- স্বর্ণের বিনিময়ে স্বর্ণ, রৌপ্যের বিনিময়ে রৌপ্য, গমের বিনিময়ে গম, যবের বিনিময়ে যব, খেজুরের বিনিময়ে খেজুর ও লবনের বিনিময়ে লবন বিক্রি করতে, পরিমাণে সমান সমান ও নগদ নগদ ব্যতিরেকে। যে অতিরিক্ত দিবে বা অতিরিক্ত গ্রহণ করবে সে সুদের কাজ কারবার করল।

এরপর লোকজন যা কিছু নিয়েছিল তা ফেরত দিল এবং মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট এ সংবাদ পৌছে দিল। তিনি ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, মানুষের একি অবস্থা হল, তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমন বহু হাদীস বর্ণনা করেন যা আমরা তাঁর থেকে শুনি নাই অথচ আমরা তাঁর নিকট উপস্থিত থাকতাম এবং তাঁরই সান্নিধ্য লাভ করতাম। এরপর উবাদা (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং বর্ণনার পুনরাবৃত্তি করে বললেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা কিছু শুনেছি তা অবশ্যই বর্ণনা করব, যদিও মুআবিয়া (রাঃ) তা অপছন্দ করেন অথবা বলেছেন যে, যদিও মুআবিয়া তাতে অপমানিত বোধ করেন। আমি পরোয়া করি না যে, তার বাহিনীতে এক কালো রাত্র না থাকি। হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, তিনি এ কথাই বলেছেন কিংবা এর অনুরূপ কিছু।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

لِّیَشۡہَدُوۡا مَنَافِعَ لَہُمۡ وَ یَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ فِیۡۤ اَیَّامٍ مَّعۡلُوۡمٰتٍ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ۚ فَکُلُوۡا مِنۡہَا وَ اَطۡعِمُوا الۡبَآئِسَ الۡفَقِیۡرَ ﴿۫۲۸﴾ 

'তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে প্রদান করেছেন, তার ওপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে। অতঃপর তোমরা তা থেকে নিজেরা আহার করো এবং দুঃস্থ, অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। ’ (সূরা হজ : ২৮)

কুরআন কারিমে আরও ইরশাদ হয়েছে,

وَ لِکُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَکًا لِّیَذۡکُرُوا اسۡمَ اللّٰہِ عَلٰی مَا رَزَقَہُمۡ مِّنۡۢ بَہِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ ؕ فَاِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ فَلَہٗۤ اَسۡلِمُوۡا ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُخۡبِتِیۡنَ ﴿ۙ۳۴﴾ 

‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি। যাতে আমি তাদেরকে জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি; সেগুলোর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। ’ 
(সূরা হজ : ৩৪)

উল্লিখিত দু’টি আয়াত থেকে পরিষ্কার বুঝে আসে কোরবানির পশু হতে হবে গৃহপালিত প্রজাতিভুক্ত। কোরবানি ও হজ সংক্রান্ত হাদিসগুলোতে কোরবানি যোগ্য যেসব পশুর নাম পাওয়া যায়- তার সবগুলোই গৃহপালিত পশু।

উক্ত আয়াতদ্বয় এবং এ সংক্রান্ত হাদিসগুলোর ভিত্তিতে প্রাচীনকালের ইসলামিক স্কলাররা মত ব্যক্ত করেছেন যে, কোরবানির শুদ্ধ হওয়ার জন্য পশু গৃহপালিত প্রজাতির হওয়া শর্ত। কোনো বন্য পশু দিয়ে কোরবানি করলে তা শুদ্ধ হবে না। 

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বলা হয়েছে, ‘কোনো বন্য পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ নেই। যদি বন্য ও গৃহপালিত পশুর সংমিশ্রণে কোনো পশুর জন্ম হয় তবে তার হুকুম নির্ধারণের জন্য মা পশু ধর্তব্য হবে। যদি মা পশু বন্য হয় এবং পিতা পশু গৃহপালিত হয় তবে তা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। ... আর যদি এমন কোনো বন্য হরিণ দিয়ে কোরবানি করা হয়- যাকে পোষ মানানো হয়েছিল অথবা এমন কোনো বন্য গরু দিয়ে কোরবানি দেওয়া হয় যাকে লালন-পালন করা হয়েছিল তবুও সে কুরবানি জায়েজ হবে না।

অতএব, উপরোক্ত আয়াতের বাহ্যিক অর্থ ও ইসলামিক স্কলারদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বলা যায়, সরকার ও বন বিভাগ কর্তৃক পাহাড়ি গয়ালের আবাদ ও বাজারজাতের অনুমতি থাকা সত্বেও, বন্য পশুর তালিকা থেকে গয়ালের নাম কেটে দেওয়া হলেও এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের লোকালয়ে তা আবাদ হলেও পাহাড়ি গয়াল দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। তবে কোরবানি ব্যাতীত তা জবাই করে খাওয়া জায়েজ। অর্থাৎ গয়ালের গোশত জায়েজ কিন্তু কোরবানি জায়েজ নয়।

★শরিয়তের দৃষ্টিতে হিংস্র ও নোংরা প্রাণি খাওয়া নাজায়েয। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَيُحَرِّمُ عَلَيهِمُ الخَبائِثَ

‘আর তাদের জন্য হারাম করা হয়েছে খাবায়েস (নোংরা বস্তু)।’ [সূরা আরাফ, আয়াত: ১৫৭]

তবে গয়াল হিংস্র ও নোংরা প্রাণির অন্তর্ভুক্ত নয়, বিধায় শরয়ি পন্থায় তা জবাই করা হলে খাওয়া জায়েয আছে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
গয়াল এর গোশত খাওয়া হালাল।
তবে এইটা দিয়ে কুরবানি করা জায়েজ হবেনা।

(০২)
যেহেতু সেই সময় পর্যন্ত তার কাছে উক্ত হাদীস পৌছেনি,তাই এমনটি হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য সুত্রে হাদীস জানার পর এমনটি আর হয়নি।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...