বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ।
আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝে নিলাম যে,
মাকস বলা হয় ঐ মাল কে,যা জরিমানা সরূপ অন্যায়ভাবে ব্যবসায়ীদের সম্পদে আরোপ করা হয়।এজন্যই ইমাম যাহবী রাহ উনার অমর গ্রন্থ 'আল-কাবাইর' নামক কিতাবে বলেন,মাকস উসূলকারী জুলমের চুড়ান্ত সীমায় উপনিত। কেননা সে অন্যায়ভাবে উসূল করে আবার এমন কাউকে সে ঐ মাল দেয় যারা অদ্য ঐ মালের হক্বদার নয়।
ইমাম সারখাসী রাহ লিখেন,
والَّذي رُوي من ذمِّ العشَّار محمول على من يأخذ مال النَّاس ظلمًا كما هو في زماننا دون من يأخذ ما هو حقٌّ، وهو الصَّدقة
কুরআন হাদীসের যেখানেই সরকারী খাযানা উসূলকারী সম্পর্কে ভৎসনা বা তিরস্কার বর্ণিত হয়েছে,সেখানে ঐ অর্থই উদ্দেশ্য যে,যারা অন্যায়ভাবে জনগণের মাল উসূল করে।
এবং ঐ সমস্ত লোক সেই ভৎসনার উপযোগী নয় যারা ন্যায়সঙ্গত ভাবে সরকারী খাযানা উসূল করে। বরং তারা তো এতে সদকার সওয়াব পাবে।(মাবসুত-২/১৯৯)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
আমাদের নিকট বিষয়টা প্রায়ই পরিস্কার যে,
ট্যাক্স আর মাকস্ এক নয়।সুতরাং ট্যাক্স জায়েয়। আর মাকস্ নাজায়েয।আরেকটি জিনিষ পরিস্কার হওয়া প্রয়োজন, তা হলো,ট্যাক্স/কর এবং যাকাত এক নয়।বরং দু'টি ভিন্ন ভিন্ন জিনিষ।যাকাত এক বিষয় আর ট্যাক্স অন্য একটি বিষয়।দুটোকে আলাদা আলাদা ভাবে আদায় করতে হবে।এমনকি যাকাতকে ট্যাক্স হিসেবে দিলে যাকাত আদায়-ই হবে না।
ট্যাক্স সম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " (৩৫/১৪) এভাবে বর্ণিত রয়েছে যে,
ذَهَبَ الْفُقَهَاءُ إِلَى أَنَّ لِلإِْمَامِ فَرْض َضَرَائِبَ عَلَى الْقَادِرِينَ لِوُجُوهِ الْمَصَالِحِ الْعَامَّةِ وَلِسَدِّ حَاجَاتِ الْمُسْلِمِينَ
قَال القرطبي: اتَّفَقَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ إِذَا نَزَلَتْ بِالْمُسْلِمِينَ حَاجَةٌ بَعْدَ أَدَاءِ الزَّكَاةِ فَإِنَّهُ يَجِبُ صَرْفُ الْمَال إِلَيْهَا
(١) .(١) القرطبي ٢ / ٢٤٢، وابن عابدين ٢ / ٥٧.
الموسوعة الفقهية الكويتية ٣٥/١٤
ভাবার্থঃমহামান্য ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন যে,
সরকার জনসাধারণের সেবা ও বিভিন্ন প্রয়োজন মিটাতে উপার্জন সক্ষম নাগরিকদের উপর ট্যাক্স অত্যাবশ্যকীয় করতে পারবে,বৈধ রয়েছে।
ইমাম কুরতুবী রাহ উদ্ধৃতিতে বলা হয় যে, তিনি বলেন,সম্পদশালী নাগরিকগণ যাকাত প্রদাণের পরও মুসলিম জনসাধারণের আর্থিক ঘাটতি দেখা দিলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ট্যাক্স প্রদান করা তাদের উপর ওয়াজিব।(তাফসীরে কুরতুবী-২/২৪২
রদ্দুল মুহতার-ইবনে আবেদিন;২/৫৭।)
সম্মাণিত দ্বীনী ভাইয়েরা!
সংক্ষেপে আমরা বুঝলাম যে,আয়কর বা ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে হলে জনগণনের উপর তা আদায় করা ওয়াজিব।যাকাতের মতই আবশ্যক পালনীয়।
যদিও আয়করের বিধান শর্তসাপেক্ষ্য তথা ব্যায়খাত লক্ষণীয় একটি বিষয়।এবং যাকাত থেকে কিছুটা শীতিলযোগ্য।ট্যাক্স কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত একটি বিষয়।তাকে অস্বিকার করা যাবে না।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
কর/খাযনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-সকল প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।
সুতরাং
(১)
ট্যাক্স নিষিদ্ধ নয়,বরং মুকস নিষিদ্ধ।
(২)ইমাম জাসসাস মুকস সম্পর্কে বলেছেন।ট্যাক্স সম্পর্কে নয়।
(৩)ট্যাক্স দিতে হবে।দেওয়া ওয়ািজব।না দিলে গোনাহ হবে।
(৪)এটাও দিতে হবে।