আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
65 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ।
১)  শরিয়তের সকল বিষয় নিয়ে আমার জ্ঞান নেই , তাই জীবন ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর পেতে আলেমদের সোহবতে থাকতে বলে। আর আমার বিষয়গুলো এমন যে তা এখানে /অনলাইন প্লেটফরমে লিখে বুঝানো অনেক সময় সাপেক্ষ হয়ে যায় এবং আমার অবস্থাটাও বুঝিয়ে উঠতে পারিনা ক্লিয়ারভাবে।

 তাই অফলাইনে আলেম/মুফতিদের সাথে যোগাযোগ করতে চাই কিন্তু আমি মেয়ে মানুষ কিভাবে তাদের খোঁজ পাবো? আমি আমার ছোট ভাইয়ের মাদ্রাসার মুফতির কাছেও গেছিলাম উনি উত্তর দিলেও তা ব্যাখ্যাসহ দেন না তাছাড়া উনি মাদ্রাসা পরিচালনা করেন তাই অতো সময় করে আমার কথাও শুনার সময় হয় না,তাই উনার উত্তরে আমি সেটিস্ফাই হতে পারিনা। এছাড়াও আমাদের এখানে চট্টগ্রামের বিখ্যাত আলেম মুফতি এযেহারের মাদ্রাসাও আছে কিন্ত ওখানেও আমার জানা নেই কে আমাকে সাহায্য করতে পারবে, আমি পর্দা করে গেলেও সেখানে কোনো মুফতির খোঁজ নিতে আমার লজ্জা কাজ করে। তাছাড়া আছে, মসজিদের ইমাম কিন্তু আমি জানি না তিনি কেমন ইমাম মানে বিজ্ঞ,হক্কানি,সকল বিষয়ে জ্ঞান আছে কিনা? আর উনাকে কেমনে পেতে পারি তাও জানিনা, মসজিদে মেয়ে মানুষের ঢুকতে লজ্জাও লাগে।
এমতা অবস্থায়, আমার স্থানীয় ঠিকানা অনুযায়ী কোন আলেমের সোহবতে যাব?? আমার ঠিকানা - লালখান বাজার, চট্টগ্রাম। এ ঠিকানা / চট্টগ্রাম অনুযায়ী কোন আলেমের সোহবতে যেতে পারি পরামর্শ দিবেন দয়া করে।।।।

২)আমার আম্মু বেশিরভাগ সময় জুলুম করে আমাদের উপর। অর্থাৎ, মারে না কিন্তু কথাতে,উঠতে - বসতে ঝামেলা সৃষ্টি করে, ঝগড়া বাদিয়ে পেলে স্বাভাবিক বিষয় নিয়েও। ঘরে তখন ফেতনা আর ফেতনার মধ্যে থাকতে হয় । আমি চুপ থাকার চেষ্টা করি।যাতে উনি যা করার করুক আমি যেন নিজেকে গুনাহগার না বানিয়ে ফেলি। তবুও মাঝে মাঝে ধৈর্য হারা হয়ে মুখে মুখে কথা বলে ফেলি আবার অপরাধবোধ করি। এমন ফেতনার মধ্যে যেতে হয় অনেক মুহূর্ত আর আমার অনেক কষ্ট হয়ে যায়।
তখন এমন পরিস্থিতিতে আমি আমার নিকট বান্ধবীদের শেয়ার করি এগুলো।এখন এটা কি আমি আম্মুর গীবত করছি??? গুনাহ হবে??? আমি শুনেছিলাম কষ্ট পেলে সেই কথাগুলো অন্যকে শেয়ার করা গিবত হয় না। সেটা কি সত্য???

1 Answer

0 votes
by (544,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি নিজের কোনো মাহরাম পুরুষ (বাবা/চাচা/দাদা/স্বামী/ছেলে) এর মাধ্যমে বিজ্ঞ আলেম থেকে মাসয়ালা জেনে নিবেন।

এক্ষেত্রে কোনো মাসয়ালা জানা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে আই ফাতওয়া থেকে প্রশ্নের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।

(০২)
‘গীবত’-এর পরিচয় প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণকে লক্ষ্য করে বলেছেন,
«أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟» قَالُوا: اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: «إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ»
“তোমরা কি জান ‘গীবত’ কী? তাঁরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, তোমার ভাই যে কথা অপছন্দ করে তার সম্পর্কে সে কথা বলার নাম গীবত। জিজ্ঞেস করা হলো, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে তবেই তুমি তার ‘গীবত’ করলে। আর যদি না থাকে তাহলে তুমি তাকে অপবাদ দিলে”। (সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৪৮২৮)


عَنْ أَبِي سَعْدٍ، وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا “، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا؟ قَالَ: ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَزْنِي فَيَتُوبُ فَيَتُوبُ اللهُ عَلَيْهِ “وَفِي رِوَايَةِ حَمْزَةَ ” فَيَتُوبُ فَيَغْفِرُ لَهُ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لَا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَهَا لَهُ صَاحِبُهُ  

হযরত আবু সাঈস এবং জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ গীবত করা ব্যভিচার করার চেয়েও জঘন্য। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত করা ব্যভিচারের চেয়ে জঘন্য হয় কি করে? রাসূল সাঃ বললেনঃ নিশ্চয় ব্যভিচারকারী ব্যভিচার করে তওবা করে থাকে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে তাকে ক্ষমা করে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬৩১৫, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫৯০}

ছয়টি কারণে গীবত করা জায়েজ আছে। 

 الأول: التظلم. يجوز للمظلوم أن يتظلم إلى السلطان والقاضي وغيرهما ممن له ولاية أو له قدرة على إنصافه من ظالمه، فيذكر أن فلانا ظلمني وفعل بي كذا وأخذ لي كذا ونحو ذلك. 

(এক) জালিমের জুলুম থেকে বাঁচতে বিচারকের নিকট জালিমের বিরুদ্ধে নালিশ/গিবত করা বৈধ।যেমন মজলুম ব্যক্তি বিচারকের নিকট গিয়ে বলল,অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম-নির্যাতন করেছে।এবং আমার সাথে সে এমন এমন ব্যবহার করেছে।আমার অমুক অমুক জিনিষ সে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

 الثاني: الاستعانة على تغيير المنكر ورد العاصي إلى الصواب. وبيانه أن يقول لمن يرجو قدرته على إزالة المنكر: فلان يعمل كذا فازجره عنه ونحو ذلك، ويكون مقصوده إزالة المنكر، فإن لم يقصد ذلك كان حراما. 

(দুই) মন্দকে পরিবর্তন করতে এবং গোনাহগারকে নেকির দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে কারো গীবত করা।যেমন এমন কারো কাছে গিয়ে গিবত করা,যে ব্যক্তি ঐ মন্দকাজ সম্পাদনকারীকে ধমক দিতে পারে, ইত্যাদি ইত্যাদি।শর্ত এই যে, মন্দকে বিদূরিত করার উদ্দেশ্যই থাকতে হবে।উদ্দেশ্য যদি অন্য কিছু হয় তখন কিন্তু গীবত করা জায়েয হবে না বরং হারাম হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ   

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হ্যাঁ, এতে আপনার আম্মুর গীবত হচ্ছে,যাহা জায়েজ নয়।

হ্যাঁ যদি কেহ এমন থাকে,যে আপনার আম্মুকে বুঝিয়ে সংশোধন করতে পারবে,সেক্ষেত্রে (আপনার আম্মুর সংশোধন এর জন্য) শুধুমাত্র সেই ব্যাক্তিকে বলা জায়েজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (7 points)
reshown by
১ নম্বর উত্তর অনুযায়ী, আমার কোনো মাহরাম তেমন নেই, যিনি আছেন আব্বু।  আর ভাই নাবালেগ,এবং আব্বু যাবেন না আমার এ কাজ করতে।  তাছাড়া আমি কিছুটা ওয়াসওয়াসায়ও আক্রান্ত তাই সরাসরি আলাপ করতে চাইছি। এক্ষেত্রে কি করবো???   এবং আপনারা যেহেতু আলেম তাই ঠিকানা অনুযায়ী এখানের কোনো আলেম/মুফতির খোঁজ জানা থাকলে একটু কষ্ট করে জানাবেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...