আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
156 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
closed by
এই কথাগুলো কি কেনায়া বাক্য কিনা আমি সেটা জানতে চাচ্ছি।

১/ আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় দুই বছর, ৩-৪ দিন পর আমার স্বামী দেশে আসবেন ( আমাদের বিয়ের ফোনে হয়েছিল। আমাদের বিয়ের পর এই প্রথম তিনি দেশে আসবেন )।
বিয়ের সময় কথা ছিল বিয়ের ৬ মাস পর দেশে আসবে। পাসপোর্ট নিয়ে কিছু সমস্যার কারণে এত দিন আসতে পারেনি।
তার যেহুতু বিয়ের ৬ মাস পর আসার কথা ছিল, এখন সে এই ৬ মাস যাওয়ার পর, বলতো আর ২ মাস পর আসবে, জুলাইয়ের মধ্যে আসবে, জুলাই শেষ হলে আবার বলতো ৬ মাস পর আসবে, এরকম করতে করতে সে আমাকে লাস্ট বলে যে, এই জানুয়ারিতে সে আসবে। এভাবে বার বার আসার কথা বলে সময় ঘুরানোর কারণে আমি তাকে অনেক বার বলছি যে, আমি তোমার জন্য জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। এর পর আর অপেক্ষা করবো না। জানুয়ারির পর আমি চলে যাবো। জানুয়ারির পর আমি আবার বিয়ে করবো। এরকম কথা অনেক বার বলা হইছে।
এ কথা গুলো এমনেই বলতাম তখন আমার মন থেকে এরকম কোনো নিয়ত ছিলো না যে, সে যদি সত্যিই না আসে তাহলে আমি চলে যাবো। এরকম কোনো ইচ্ছা ছিলো না।

পাসপোর্টের সমস্যার কারণে সে জানুয়ারিতে ও আসতে পারে নাই।
এছাড়াও তার কথা ছিল যে, সে দেশে একবারে আসবে, আর বাহিরে যাবে না। কিন্তু কিছু দিন ধরে সে হুট করে বলতেছে যে, আমি দেশে এসে ৬ মাস থেকে আবার ১ বছরের জন্য যাবো।
এটা নিয়ে আমাদের অনেক ঝামেলা হয়, যেহুতু সে আমাকে কথা দিয়া আসছে, একবারেই আসতেছে এখন আবার তার কথা ঘুরয়তাছে।

এ কথা বলায় আমি তাকে অনেক বার বলছি যে তুমি আবার ওই দেশে গেলে আমি তোমার সাথে থাকবো না। আমি আমার আম্মু, শাশুড়ি, নানু উনাদের সামনেও বলেছি, সে ওই দেশে গেলে যাই হোক আমি তার সাথে থাকবো না। দরকার পড়লে আমি আবার বিয়ে করবো। ( এ কথা গুলো বলার কারণ হচ্ছে, সে ওখানে এক খ্রিস্টান মেয়েকে বিয়ে করেছে, তাই আমি তাকে ওই দেশে আর যেতে দিতে চাই না)।
যদিও আমি রাগের বসে এগুলো বলেছি, কিন্তু আমি জানতাম যাই হোক শেষে আমার যাওয়া হবে।

তাকে আমি এভাবেও জিজ্ঞাসা করছি আমি যদি তোমাকে ওই দেশে যেতে না দেই তাহলে কী তুমি আমার সাথে থাকবা না? সে বলছে আমি এক বছরের জন্য যেতেই হবে, এখন তুমি না থাকলে আমার কিছু করার নেই, এটা তোমার ব্যাপার।
আমি এটাও বলছিলাম আমি যদি যেতে না দেই তোমার বাবা ভাই যদি বলে আমাকে তাহলে আনার দরকার নাই তাইলে কি করবা ? সে বলছিল আমি নিজেই তো তোমারে আনবো না। উনারা কি বলবে।

একবার এরকম কথা হইছিল যে, তুমি এরকম করলে আমি তোমাকে নারী নির্যাতনের কেস দিবো, সে বলে কেস দিবা তুমি টাকা পাবা কোথায়? আমি বলছিলাম কেন তোমার কাবিনের টাকা দিয়ে। সে বলে আমি তোমাকে কাবিনের টাকা দিয়ে দিলে তো তোমার উপর আমার আর কোনো অধিকারী থাকলো না। সে বুঝতে চাইছে সে আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করে আমাকে আমার মোহরানা দিয়ে দিবে।

আমার স্বামী আমার খালাতো ভাই হওয়ায় আমার এইসব কথা শুনে বলতো, আমার সাথে তো তুমি থাকবা না, তাহলে তোমার জন্য ছেলে দেখবো?
আবার ওই দেশে যাওয়া নিয়ে আমদের মাঝে ঝামেলা হওয়ায় সে বলছি, আমরা তো এখনও এক সাথে থাকি নাই, এখনও যেহেতু কিছু হয় নাই, তুমি তাইলে জাওগা,
সে আমাকে এরকমও বলছে তুমি যদি আমার খালার মেয়ে না হইতা তাহলে আমি তোমাকে অনেক আগেই ছেড়ে দিতাম। তুমি বেয়াদব হয়ে গেছে, আমি কোনো বেয়াদবের সাথে থাকবো না। পড়ে সমস্যা হওয়ার থেকে দেশে এসে সবার সাথে কথা বলে ঠিক করবো তোমার সাথে থাকবো কি না। তুমি যাওগা, তোমার জন্য ছেলে দেখবো।

এই কথা গুলো দ্বারা কি আমাদের তালাক হয়েছে?
হয়ে থাকলে এখন আমাদের কি করনীয়?

২/ আমি আজকে কাজী অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমাকে তালাকের অনুমতি দেওয়া আছে। এখন আমি যত দূর জানি আমার হাসবেন্ড জেনে আমাকে এই অনুমতি দেননি, কাজী এটা লিখেছে, উনি এই বিষয়ে কিছু জানেন ও না।
এখন আমি যদি তাকে জিজ্ঞেসা করি , সে আমাকে এই অনুমতি জেনে দিয়েছে কি না, সে যদি মানা করে, তাহলে কি আমার উপরের কথা দ্বারা তালাক হবে?
আর আমি যদি বলি আমার এই অনুমতি চাই না, তখন সে যদি আমাকে বলে, আমি তোমাকে এই অনুমতি দিতেছি না। তাহলে কি কাবিনে যে কাজী অনুমতি উল্লেখ করেছেন সেটা বাদ হয়ে যাবে?

৩/ আমাদের যেহুতু ফোন বিয়ে হয়েছে। আজকে আমি কাজী কে জিজ্ঞাসা করলাম আমাদের বিয়েটা কি জায়েজ ছিল? উনি বলে আমাদের কাজ বিয়ে পড়ানো আপনি কোনো মুফতি থেকে এটা জেনে নিবেন, বা দেশে আসলে আবার বিয়ে করে নিয়েন। এখন আমার কথা হচ্ছে বিয়ে যদি জায়েজ না হয়ে থাকে তাহলে তো আমি এত দিন জিনার মধ্যে ছিলাম। এক্ষেত্রে এখন আমার করনীয় কি?

আমাদের বিয়েতে ওর বাবা, মা আমার বাবা, মা আমার এখানে উপস্থিত ছিলেন, একজন উকিল হিসেবেও ছিলেন। সবাই আমার এখানে ছিলেন। ওকে শুধু ভিডিও কল দেওয়া হয়। ওর ওখানে কেও ছিল না। শুধু ও একা ছিল। উকিল, ওর বাবা মা আমার বাবা মা সাক্ষী সবাই আমার এখানে উপস্থিত ছিলেন , ওর ওখানে কেও ছিলো না।
আমাদের কাবিন আর বিয়ে দুইটাই হয়েছিল। সে ভিডিও কলে কবুল বলেছিল। আর একটা অঙ্গীকার নামা ছিল যেখানে ও ওর বাবাকে আমার সাথে বিয়ের অনুমতি দিচ্ছে সে কাগজটা তাকে পিডিএফ করে পাঠানো হয়েছিল তারপর সে ওখান থেকে সিগনেচার করে আবার কাজীর এখানে পিডিএফ করে পাঠিয়েছিল।


আমাদের বিয়ে কি হয়েছে?

আমাদের বিয়ে কি হয়েছে?

৪/আর ফোনের এই বিয়েটা যদি ইসলামের শরিয়ত অনুযায়ী জায়েজ না হয়ে থাকে, তাহলে তো আমাদের বিয়েই হয়নি । তাহলে আমাদের উপরের কথা দ্বারা কি তালাক হবে?
closed

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
selected by
 
Best answer
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মুবাইল কলের মাধ্যমে বিবাহ সংগঠিত হবে না।
কেননা শরীয়তে যেসব ক্ষেত্রে লেনদেন বৈধ হওয়ার জন্য সাক্ষ্যকে শর্ত করা হয়েছে,সেক্ষেত্রে সাক্ষীগণের শোনা শর্ত।কিন্তু এখানে সাক্ষীদয়ের শ্রবণ পাওয়া যাচ্ছে না,বিধায় সর্বসম্মতিক্রমে বিবাহ সংগঠিত হবে না।আল্লামা হাসক্বফী রা বলেনঃ
(وَ) شُرِطَ (حُضُورُ) شَاهِدَيْنِ(حُرَّيْنِ) أَوْ حُرٌّ وَحُرَّتَيْن (مُكَلَّفَيْنِ سَامِعَيْنِ قَوْلَهُمَا مَعًا)
দুজন স্বাধীন পুরুষ অথবা একজন স্বাধীন পুরুষ ও দুজন স্বাধীন মহিলা সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকতে হবে,যারা শরীয়তের বিধি-বিধান পালনে দায়বদ্ধ থাকবে,এবং একসাথে উভয় (স্বামী-স্ত্রী) র ইজাব-কবুল শ্রবণ করবে।(আদ্দুরুল মুখতার-৩/২২) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2679

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
মুবাইল কলে সাধারণত বিবাহ হয় না। তবে প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে যেহেতু ছেলে একটি কাগজে তার বিয়ের দায়িত্ব তার বাবাকে অর্পন করেছে, তাই তার বাবা উকিল হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং আকদের অনুষ্টানে ছেলের বাবা যদি ছেলের পক্ষ থেকে ইজাব কবুলের কোনো একটি করে নেয়, এবং সেখানে দুইজন সাক্ষী উপস্থিত থাকে, তাহলে বিবাহ হয়ে যাবে,নতুবা বিবাহ হবে না।

বিবাহ হয়েছে কি না?যদি সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না যায়, তাহলে নতুন করে বিয়ে করে নিতে হবে।

যদি ধরে নেয়া হয় যে, বিয়ে বিশুদ্ধ হয়েছে, তাহলে প্রশ্নের বিবরণমতে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবে না। কেননা স্বামী সেই অধিকার দেয়নি, বরং কাজী সাহেব নিজ পক্ষ থেকে অনুমতি দিয়ে কাবিননামায় লিখেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়।

যদি ধরে নেয়া হয় যে, বিবাহ বিশুদ্ধ হয়েছে, তাহলে প্রশ্নের বিবরণমতে স্বামী-স্ত্রীর উক্ত কথোপকথন দ্বারা তালাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...