আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
128 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আমি পরিবারের ছোট মেয়ে হওয়ায় আমার আদর-যত্ন আলাদা রকমের ছিলো। আমি কখনও নিজের প্লেট ধুয়েও খাইনি,গোসলটাও আম্মু করিয়ে দিতেন। আমার বিয়ে হয় ১৬ বছর বয়সে আমি তখন মোটামুটি দ্বীন পালন করতাম ১৭ বছর থেকে আমি পরিপূর্ণ খাস পর্দা শুরু করি। আমার শাশুড়ি আমাকে বিয়ের পর থেকেই অপছন্দ করতে শুরু করেছেন অথচ আমাকে তার ছেলের বউ বানানোর জন্য পায়ে পায়েও ঘুরেছেন। সে নিজেই সব কাজ করবে,আমার কিছুই করতে হবে না শুধু তার ছেলের কথা মেনে চললেই সে খুশি; এ কথার উপর বারবার তিনি জোর দিয়ে দিয়ে বিয়েতে আমার বাবা-মা কে রাজি করেছেন। কাবিন হতেই তারা বিভিন্ন রঙ-তামাশা দেখিয়েছেন। আমি আমার জায়গা থেকে শক্ত থাকায় বিয়ে নিয়ে আর কোনো ঝামেলা হয় নি আলহামদুলিল্লাহ। আমি শশুড়বাড়ি এসেছি পর থেকেই আমার শাশুড়ি আমাকে মোটেও সহ্য করতে পারেন না। আমি কিছুই পারি না তবুও চেষ্টা করি সব করার,উনি যা ই বলেন আমি করে দিই বারণ করি না। তবুও আমার কাজের ভুল ধরেই যান। আমার আম্মু আব্বু দুইজন ই বলেছেন আমার মেয়ে বাড়িতে কিছু করেনি আপনার এখানে এসে কাজ করছে তাকে শিখতে দিন। কাজ করতে করতে শিখে যাবে। তবুও শাশুড়ী আমার কাজ নিয়ে খুব বাজে বাজে ভাষায় গালাগালি করেন এবং আমি কোনো পুরুষ মানুষের সামনে যাই না,ভাসুরদের সামনে যাই না,কোনো পুরুষলোক দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলেও আমি দরজা খুলে একটু দেখি না এসব নিয়ে আমাকে অপমান করেন সব সময়। এলাকায় আমার বদনাম করে বেড়ান আমি সারাদিন ঘরে থাকি কোনো কাজ করি না। আমি যা ই করি সেগুলো নাকি কাজ না। শুধু বলে আমি কিছুই করি না। আমার পড়ালেখার অনেক প্রেশার মাদ্রাসার পাশাপাশি অনার্স পড়ছি আমার অনেক সময় লাগে এই দুই একাডেমি সামলাতে। এসব কিছুর মাঝেও আমি সবার হক্ব পালনের চেষ্টা করি কিন্তু তবুও মন পাই না শাশুড়ীর। কাপড় একদম ধুতে জানি না এই কাজে আমার স্বামী নিজ থেকেই সাহায্য করেন। এখন কেনো তার ছেলে আমাকে সাহায্য করেন এটা তার সহ্য হয় না। ঘরের ময়লাগুলো আমার স্বামী বাহিরে ফেলে আসেন,কাপড় ধুয়ে দেন,ছাদে শুকাতে নিয়ে যান-নিয়ে আসেন। ছাদে অনেক মানুষ থাকে তাই আমি এই দিকগুলো থেকে বেচে থাকি তাকেই করে দিতে বলি সে করে দেয়। ছাদে পুরুষ মানুষ যাওয়া আসা করেন তাই নিজের কাপড়গুলো ঘরেই শুকাই আর এই জন্য শাশুড়ি আমাকে মেল্লেস শব্দ ব্যবহার করে গালাগালি করেন,সাথে আমার বাবা-মাকেও তুলে কথা বলেন। আমি কিছুদিন আগে এই প্রথমবার তার কথার জবাব দিয়েছি ৬ বছর যাবৎ তার কটু কথা আমি সহ্য করে যাচ্ছি। সেদিন আর সহ্য করতে না পেরে কথার জবাব দিয়েছি আমি বলেছি " আম্মা আপনি আমার সাথে অযথা ঝগড়া করতে আসবেন না। আমি আপনাকে অনেক সম্মান করি কিন্তু এখন দেখি আপনি সম্মানের যোগ্যই না। আপনি একটা খারাপ মহিলা (কথাটা আমি সাধারণ খারাপ আচরণের জন্য বলেছি কিন্তু উনি কিভাবে নিয়েছেন আমি জানি না। আমি আঞ্চলিক ভাষা জানি না আমি ছোটবেলা থেকেই মার্জিত ভাষায় কথা বলি তাই এই শব্দগুলো কারো কারো পছন্দ হয় না বা ডাবল মিনিং ধরে নেন)। এরপর বললাম আমার আপনার সাথে আর কোনো কথা নাই যান,চলে যান আপনি কোনো কথা বলতে চাই না।" আমি ঝগড়া করতে চাইনি এরপর সে বারবার বলছিলো "এটাই তোর পর্দা? ×৩" এরপর বলে এখনই এমন? আমি বললাম কি করেছি আমি?

শাশুড়ি বলেন বারবার করে পোক করছিলেন আমাকে। তাই আমি বলেছিলাম আমি তো এ বাড়িতে নিজ ইচ্ছায় আসিনি যে আপনার গালাগাল খেয়ে পড়ে থাকবো এখানে। আমাকে যেভাবে এনেছিলেন সেভাবে আমার বাড়িতে সসম্মানে দিয়ে আসেন এখানে থাকার জন্য মরে যাইনি আমি। প্রতি উত্তরে শাশুড়ি বললেন এজন্যই এমন করছিস? আমি রাগের মাথায় বলেছিলাম কি করেছি আমি? খাবারে কি বিষ দিয়েছি সবার?

এরপর বললেন, তোদের রান্না-বান্না আমি করে দিব সব কাজ আমি করবো আমি কি তোদের বান্দী?

উত্তরে বলেছিলাম, আমার হাত আছে পা আছে চোখ আছে, আমি রানতে জানি,খেতে জানি,খাওয়াইতে জানি,কামাইতেও জানি। আপনাকে কে বলছে আমাদের কাজ করে দেন?

আমি কখনোই শাশুড়ী কাজ করতে বলিনি। সে নিজ থেকেই এসে কাজ করে আবার আমি গেলে আমার কাজের ভুলত্রুটি ধরে গালাগালি করেন।রমজানে তার খাবারের কষ্ট যেন না হয় তাই আমি আর রান্না করিনি ভেবেছি প্রথমদিন থেকেই যেহেতু শাশুড়ী রান্না করে আমাকে রান্না করতে দেয় না তাহলে হয়তো আমার রান্না খেতে চাইছেন না। তার যেভাবে ভালো সেভাবে রান্না করুক তাহলে। আবার উনাকে হেল্প করতে গেলে বলে চলে যা,লাগবে না,আবার একা একা বকাবকিও করে।

তর্কাতর্কির পর আর উত্তর না দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন আর বলছিলেন আর কারো সাথে কোনো সম্পর্ক নাই,আমার জানা আছে কোন বউ কতোটুকু করবে। অথচ আমি তাকে নিজের মায়ের মতোই ভাবতাম কিন্তু সে আমাকে কখনোই তার মেয়ের মতো দকেহে নাই। উলটা পালটা গালাগাল আর মানুষের সামনে অপমান।

ভিন্ন করে দিয়েছেন এর মাঝেও নানানকাহিনী। এখন ১ মাস পর আমার স্বামী বাজার নিয়ে এসেছেন আমি ঘুমিয়েছিলাম সে ডাকেনি কিন্তু বাহির থেকে এসে ঘরে এসে বলছে আমাদের বাজার সেগুলো শাশুড়ী রান্না করেছে। আর তাকে বলছে আমি রান্না করছি আর রান্না করা লাগবে না তোদের। আমার কথা হলো তার রান্না আমি খাবো? খেতে পারবো?

তার ছেলের জন্য সে রান্না করবে এতে সমস্যা নেই আমার জন্য রান্না করলেই সে আমার বান্দী হয়ে যাবে। এরপর কি আর এই খানা আমি খাবো? ভবিষ্যতে যদি আবার খোটা দেয়?

এইযে ভিন্ন করে দিয়েছিলো, তার ছেলের সাথে ঠিকই কথা বলেছে আর আমার মুখও দেখার চেষ্টা করেনি কথাও বলেনি। ছেলের জন্য সব ঠিক আছে আমি খারাপ,আমি ভালো না,আমার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে তার রান্না আমি খাবো? খাওয়াটা উচিত হবে? আমি আত্মসম্মানী মানুষ নিজেই রেঁ্ধে খাবো নিজের খাবার প্রয়োজন হলে কিন্তু জানতে চাই যেহেতু রান্নাটা আমার জন্য না আমার খাওয়াটা জায়েয হবে কি না?

আমি পুরোঘটনা লেখার কারণ যেনো বুঝতে পারেন আমার পরিস্থিতি। লম্বা লেখার জন্য আফওয়ান।

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَنَّ دَاوُدَ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ كَانَ لاَ يَأْكُلُ إِلاَّ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ "
আল্লাহর নবী দাউদ (আলাইহিস সালাম) নিজ হাতে উপার্জন থেকেই খেতেন।(সহীহ বোখারী-১৯৪৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ঘরের সমস্ত কাজকর্ম করবেন। ধীরে ধীরে নিজে রান্না করতে শিখবেন। শাশুড়ীর রান্না করা খাবার আপনি খেতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...