জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨
অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}
عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»
হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০]
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।
তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)
এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।
দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।
তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।
,
আরো জানুনঃ
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
উপরোক্ত ৩ টি বিষয়ের সমন্বয়ে আপনি খালেস দিলে তওবা করবেন,
এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা আপনার তওবা কবুল করবেন,ইনশাআল্লাহ।
এক্ষেত্রে নামাজ পড়া আবশ্যক নয়।
তদুপরি যদি "তওবার নামাজ পড়ছি" এমন নিয়তে ২ রাকাত নামাজ আদায় করেন,তারপর নামাজ শেষে উপরে উল্লেখিত নিয়মে তওবা করেন,সেক্ষেত্রে আরো ভালো হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الْمُغِيرَةِ الثَّقَفِيِّ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ الأَسَدِيِّ، عَنْ أَسْمَاءَ بْنِ الْحَكَمِ الْفَزَارِيِّ، قَالَ : سَمِعْتُ عَلِيًّا، - رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُولُ : كُنْتُ رَجُلاً إِذَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم حَدِيثًا نَفَعَنِي اللهُ مِنْهُ بِمَا شَاءَ أَنْ يَنْفَعَنِي، وَإِذَا حَدَّثَنِي أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ اسْتَحْلَفْتُهُ، فَإِذَا حَلَفَ لِي صَدَّقْتُهُ، قَالَ : وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ وَصَدَقَ أَبُو بَكْرٍ - رضى الله عنه - أَنَّهُ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ عَبْدٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا فَيُحْسِنُ الطُّهُورَ ثُمَّ يَقُومُ، فَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللهَ إِلَا غَفَرَ اللهُ لَهُ " . ثُمَّ قَرَأَ هَذِهِ الآيَةَ (وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ) إِلَى آخِرِ الآيَةِ - صحيح
আসমা ইবনুল হাকাম (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আমি এমন এক ব্যক্তি, যখন আমি সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে কোনো হাদীস শুনি, তখন তার মাধ্যমে মহান আল্লাহ যতটুকু চান কল্যাণ লাভ করি। কিন্তু যদি তাঁর কোন সাহাবী আমাকে হাদীস বর্ণনা করেন, আমি তাকে (সত্যতা যাচাইয়ের জন্য) শপথ করাতাম। তিনি শপথ করলে আমি তাকে বিশ্বাস করতাম। তিনি বলেন, আবূ বাকর (রাঃ) আমাকে একটি হাদীস বর্ণনা করলেন, মুলতঃ তিনি সত্যই বলেছেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যখন কোনো বান্দা কোনরূপ গুনাহ করার পর উত্তমরূপে অযু করে দাঁড়িয়ে দু’ রাক‘আত সলাত আদায় করে এবং আল্লাহর নিকট গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন। অতঃপর তিনি প্রমাণ হিসেবে এ আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ ‘‘এবং যখন তারা কোনো অন্যায় কাজ করে কিংবা নিজেদের উপর অত্যাচার করে.....আয়াতের শেষ পর্যন্ত (সূরাহ আলে ‘ইমরান : ১৩৫)।
(আবু দাউদ ১৫২১,তিরমিযী (অধ্যায় : তাফসীর, অনুঃ সূরাহ আলে-‘ইমরান, হাঃ ৩০০৬), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সলাত কাফফারাহ স্বরূপ, হাঃ ১৩৯৫), আহমাদ (হাঃ ৬৫)
(০২)
নামাজের নিষিদ্ধ টাইমে আপনি সেই নামাজ আদায় করতে পারবেননা।
সূর্য উঠার ১৫ মিনিট পর ইশরাকের ওয়াক্তে আপনি তওবার নামাজ আদায় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আগে বা পরে কোনো সময়েই ইশরাকের নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক নয়।
সূর্য উঠার ১৫ মিনিট পর আপনি চাইলে তওবা করার জন্য দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে পারবেন,এতে কোনো সমস্যা নেই।
★উল্লেখ্য, তওবার জন্য তওবার নামাজও বাধ্যতামূলক নয়,এটা নফল।
উপরে উল্লেখিত ৩ টি বিষয়ের সমন্বয়ে আপনি খালেস দিলে তওবা করলেই আল্লাহ তায়ালা আপনার তওবা কবুল করবেন,ইনশাআল্লাহ।