আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (5 points)
উস্তাদ আসসালামু আলাইকুম। আমার প্রশ্নটি ছিলো সাদাকায়ে জারিয়া সম্পর্কে।

১. বিভিন্ন হিফজের মাদ্রাসা অনেক সময় কুরআন চায়। মাদ্রাসায় যেসব স্টুডেন্ট হিফজ বিভাগে ভর্তি হয় তাদের মাঝেমধ্যে কুরআন কিনে দেই আলহামদুলিল্লাহ। আমার প্রশ্ন হলো বাচ্চারা যতক্ষণ কুরআন পড়বে আমি কি সবটুকুর সওয়াব পেতে থাকবো ইনশাআল্লাহ? প্রতি হরফে তো দশ নেকি এটা কি দাতার জন্যও প্রযোজ্য উস্তাদ?  এর সওয়াব কি আমি পেতে থাকবো সবসময়ই? একসময় সেই বাচ্চারা ইনশাআল্লাহ হাফিজ হয়ে যাবে, তারপর অনেককে শিখাবেও ইনশাআল্লাহ। সবকিছুর সওয়াব ও কি আমি পেতে থাকবো? নাকি শুধুমাত্র যতদিন আমার দান করা মুসহাফ থেকে পড়েছে শুধুমাত্র ততদিনই সওয়াব পাওয়া যাবে? যদি আমার দান করা মুসহাফ হতে কোনো সূরা কেউ মুখস্থ করে তাহলে সে যতদিন সেই সূরা পড়বে  আমি কি সওয়াব পাবোনা উস্তাদ? সেটা পড়ে অন্য মুসহাফ দেখেই পড়ুক অথবা না দেখে যেহেতু তার মুখস্থ?
২.একজন বললেন উনি নাকি জেনেছেন মৃত ব্যক্তির জন্য হুজুর ডেকে কুরআন পড়লে সওয়াব নাকি মৃত ব্যক্তি পায়না, শুধুমাত্র হুজুরই পায়। সাদাকায়ে জারিয়া করতে হলে নাকি ৩ শ্রেণী (ইলম শিখানো, সন্তানের দুয়া, আর সাদাকায়ে জারিয়া) এর মধ্যে থেকেই করতে হবে।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ بِشْرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ يَسْتَحْمِلُهُ فَلَمْ يَجِدْ عِنْدَهُ مَا يَتَحَمَّلُهُ فَدَلَّهُ عَلَى آخَرَ فَحَمَلَهُ . فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ " إِنَّ الدَّالَّ عَلَى الْخَيْرِ كَفَاعِلِهِ "

নাসর ইবন আবদুর রহমান কূফী (রহঃ) ..... আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তি এসে একটি বাহন চাইলে। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কাছে তার আরোহণের জন্য কিছু পেলেন না। তাই তিনি অন্য একজনের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, ঐ ব্যক্তি তাকে একটি বাহন দিল। পরে সে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তা জানালে তিনি বললেনঃ ভাল কাজের পথ প্রদর্শনকারী তা সম্পাদনকারীর মতই। 

হাসান সহীহ, সহিহাহ ১১৬০, তা'লিকুর রাগীব ১/৭২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৬৭০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

“তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একজন লোককেও হেদায়েত দেন তবে তা তোমার জন্য একটি লাল উট পাওয়া থেকেও উত্তম।” (বুখারী ১২/৩৭)

তিনি আরো বলেন:

مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنْ الْأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا

“যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে আহবান করে সে ঐ পরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হয় যে ব্যক্তি তদনুযায়ী আমল করে। কিন্তু এতে আহ্বানকারীর সওয়াব কমানো হয় না।”(সুনানু আবি দাউদ-৪৬০৯)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আশা করা যায় যে আপনি সমান ছওয়াব পাবেন,ইনশাআল্লাহ। 
আপনার দান করা মুসহাফ হতে যতদিন পড়া হবে,ততদিন আপনি তিলাওয়াতের ছওয়াব পাবেন।

(০২)
এক্ষেত্রে মৃত ব্যাক্তির কবরে ছওয়াব পৌছানোর নিয়তে পড়া হলে মৃত ব্যাক্তিরাও সমান ছওয়াব পাবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

তবে এভাবে হুজুর ডেকে কুরআন পড়ানো হলে সেক্ষেত্রে তাকে কোনো টাকা বা হাদিয়া দেয়া বা দাওয়াত খাওয়ানো নাজায়েজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 251 views
...