আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
204 views
in পবিত্রতা (Purity) by (10 points)
১/ আমি পাখি পালি,,পাখি গুলো ছোট হওয়ায়,তাদের হাতে খাওয়াতে হয়,,অনেক সময় খাওয়ার সাথে সাথে উগলে দেয়,মাথা ঝাঁকা দিয়ে চারপাশে ছিটিয়ে দেয়,,অনেক সময় গায়ে এসে পরে,,খাওয়ার সাথে সাথে উগলে দিলে,সেটা বমি বলে ধরব?এটা কি নাপাক

আবার অনেক সময়,, মুখ দিয়ে খাবার এনে ছিটায়,,এই বমি কি নাপাক

আর পাখির বমির বিধান কি?

২/ আমরা ঘরে খাঁচায় পাখি পালি,,ঘরে পাখি পাললে কি রহমতের ফেরেশতা আসবে না? একজন বলেছে,যে ঘরে পাখি থাকলে আর পাখির মল থাকার কারণে নাকি ঘরে রহমতের ফেরেশতা আসে না,,এটা কি সত্যি?

৩/ অনেক সময় পাখি ফ্লোরে পায়খানা করে দেয়! কখনও সাথে সাথে মুছে ফেলি আবার কখনও শুকিয়ে যায়!
পাখির মল পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে ভিজা কাপড় নিয়ে মুছে,,সেই কাপড় টা ট্যাপের কলে বেশি পানির নিচে অনেকক্ষন রেখে, চিপে আবার পাখির মলের জায়গা মুছি,
++যে কাপড় টা দিয়ে মুছি,সেটা এভাবে ট্যাপের কলের নিচে রেখে ধুয়ে নিলে পাক হবে?

এভাবে দুইবার মোছার পর,ফ্লোর যায়গা শুকিয়ে গেলে যায়গা পাক হবে?

আর যদি পাক না হয়ে থাকে,তাহলে এই অবস্থায়, এভাবে ২ বার মোছার পর পুরো ঘর অন্য ঘর মুছনি দিয়ে মুছি। এভাবে কি পুরো ফ্লোর নাপাক হয়ে যাবে?

আমাদের টাইলস এর ফ্লোর!

৪/ একটা কাপড়ে নাপাক লাগলো,আমি জানিনা সেটা কোথায় লেগে আছে,,আমি যদি সেই কাপড় আলাদা করে না ধুয়ে,সাবান পানিতে ভিজিয়ে রেখে,

পরে ট্যাপের কলের নিচে পানি ছেড়ে,চিপে চিপে অনেকক্ষণ পানির নিচে ধুয়ে নিলে তা পাক হয়ে যাবে?

নাকি পাক করার জন্য,আলাদা করে তিনবার পানি পাল্টিয়ে অবশ্যই ধুতে হবে

আমি উপরের মতো করে বড় বড় কাপড়,যেমন,চাদর,কম্বল ইত্যাদি! ধুই,,যেগুলো তিনবার ধুয়ে পানি পুরো বের করা কষ্টকর!এভাবে পাক হয়?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
বিশিষ্ট তাবেয়ি শুবাহ (রহ.) বলেন-
عَنْ شُعْبَةَ ، قَالَ : سَأَلْتُ الْحَكَمَ ، وَحَمَّادًا عَنْ خُرْءِ الطَّيْرِ ؟ فَقَالاَ : لاَ بَأْسَ بِهِ
‘আমি হাকাম ও হাম্মাদ (রহ.)কে পাখির বিষ্ঠা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেন: কোন সমস্যা নেই।’ [মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ১২৬৬]

পাখির ক্ষেত্রে তাদের বিষ্ঠা নাপাক হওয়ার মূলনীতি হলোঃ
যেসব পাখির গোশত খাওয়া হালাল এবং উড়ে বেড়ায় সেগুলোর বিষ্ঠা নাপাক নয়।
রদ্দুল মুহতার ১/৩২০.আহসানুল ফাতওয়া ২/৮৪.ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১/৩২২)
,
ফাতাওয়ায়ে শামীর ইবারতঃ
  
وفي “الدر المختار” مع “رد المحتار” 577:1، ط: الأزهر، ( وخرء ) كل طير لا يذرق في الهواء كبط أهلي (ودجاج ) أما ما يذرق فيه ، فإن مأكولا فطاهر وإلا فمخفف. وقال ابن عابدين رح تحت قوله: ( قوله : فإن مأكولا ) كحمام وعصفور .اهـ. 
সারমর্মঃ যেসব পাখি হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়,সেগুলোর গোশত খাওয়া যদি হালাল হয়,তাহলে তার বিষ্ঠা পাক।
অন্যথায় নাজাসাতে খফিফাহ।
গৃহপালিত হাঁস মুরগী এগুলো উড়তে পারেনা,এগুলোর বিষ্ঠা নাপাক।

جاء في “الأصل” 25:1، ط: دار ابن حزم، قلت: الإناء يقع فيه عصفور او خرء حمام؟ قال: يلقيه من الإناء، ثم يتوضأ به.اهـ.
সারমর্মঃ চড়ুই,কবুতর পাত্রে পড়লে পাত্র থেকে ফেলে দিতে হবে,অতঃপর সেই পানি দিয়ে অযু করা যাবে। 

وفي “المبسوط” 171:1، ط: العمرية، ولا يفسد خرء الحمام ولاعصفور الماء فإنه طاهر عندنا.اهـ.
সারমর্মঃ কবুতর, চড়ুই পাখির বিষ্ঠা পানিকে নাপাক করবেনা।
কেননা সেগুলো আমাদের নিকটে পবিত্র। 

وفي “البزازية” 21:4، ط: زكريا، الخارج من بدن الإنسان على نوعين، طاهر كالعرق والنخامة، واللبن، والدمع والريق. ونجس: وذلك كل ما يوجب خروجه الوضوء أو الغسل وما يخرج من أبدان سائر الحيوان، فإنه نجس غير أبوال مأكول اللحم.اهـ.
সারমর্ম যে সমস্ত প্রানীর গোশত খাওয়া জায়েয নেই,মতলকান তাদের পেশাব নাপাক।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এটা নাপাক নয়।
সুতরাং চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
কুকুর আর প্রানীর ছবি থাকলে ঘরে রহমতের ফেরেশতা আসেনা। পাখির সাথে এর সম্পর্ক নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

আবু তালহা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

لَا تَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ، وَلَا صُورَةٌ

“ফেরেশতাগণ ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর অথবা ছবি থাকে। (সুনানে আন-নাসায়ী হা/৫৩৪৭-সহিহ)

সুতরাং সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির কথা সত্য নয়।

(০৩)
এভাবে কাপড়টি নতুন পানি দিয়ে প্রতিবার ধুয়ে ফ্লোর তিনবার মুছে ফেললে তাহা পাক হয়ে যাবে। শর্ত হলো এক্ষেত্রে পাখির বিষ্ঠা যেনো ফ্লোরে আর না থাকে।

উল্লেখ্য, যেসব পাখি হাওয়ায় উড়ে বেড়ায়,সেগুলোর গোশত খাওয়া যদি হালাল হয়,তাহলে তার বিষ্ঠা পাক।
সুতরাং এ ধরনের পাখির বিষ্ঠা ফ্লোরে লাগলে ফ্লোর পাক করার প্রয়োজনীয়তা নেই।

(০৪)
ট্যাপের পানিতে এভাবে ভালোভাবে সরাসরি ধোয়া হলে যদি নাপাকি চলে যাওয়া সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হোন,সেক্ষেত্রে তাহা পাক হয়ে যাবে। তিনবার ধোয়া আবশ্যক নয়।
কেননা উলামায়ে কেরামগন এটিকে প্রবাহিত পানির হুকুমে বলেছেন।

অন্যান্য কাপড়ের ক্ষেত্রেও বিধান এমনই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...