আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি একজন মেয়ে। আমার প্রথম বিবাহ হয়েছিল একখানে। সেখানে আমার স্বামীর সাথে বিভিন্ন কারণে বনিবনা না হওয়ায় একসময় তার সাথে অনেক রাগারাগি হয় আমার।সেখানে রাগারাগীর এক পর্যায়ে আমি ডিভোর্স লেটার পাঠাই কিন্তু তার সাথে কথা বলে। সে এক সময় রাগের মাথায় আমাকে বলছে যে ঠিক আছে তুমি পাঠাও। তার এই কথার পর আমি সেখানে লেটার পাঠিয়ে দিই। তার ঠিক দেড় বছর পর আমার অন্যখানে বিবাহ হয়, আমার ২য় সংসার দেড় বছরের চলছে।কিন্তু হঠাৎ কোনো এক মাধ্যম থেকে আমি জানতে পারি যে আমার প্রথম স্বামী বলে সে আমাকে তালাক দেয়নি। আমাকে যে বলেছিলো 'ঠিক আছে পাঠাও' সেটা নাকি  রাগে বলেছে, কিন্তু আমাকে ছাড়তে চাইনি। আমি তো তার ওই কথায় ধরে নিয়েছি যে, রাগে হোক বা অভিমানে হোক সে আমাকে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু এখন সে অস্বীকার করছে। বিয়ের কাবিনে ১৮ নং এ তো টিক চিহ্ন কাজি দিয়েছে তার কাছে জিজ্ঞেস না করেই।আর আমি তার কাছে থেকে এক টাকাও মোহরানা নেইনি।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ২ টা,,,

প্রথমত..আমি তো দ্বিতীয় সংসার করতেছি, আমার কি আসলেই প্রথম সংসার থেকে তালাক হয়েছে?

যদি সেটা না হয় তাহলে তো দ্বিতীয় সংসার এ আমার পাপ হবে।

দ্বিতীয়ত... প্রথম স্বামী আমার মোহরানা পরিশোধ করতে চায় নিজে থেকে,,,, সেটা নেয়া কি আমার জায়েয হবে?
আমি খুব বড় সমস্যার মধ্যে পড়েছি, দয়া করে খুব দ্রুতই উত্তর দিবেন হুজুর।
আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান দিক।

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।    

’’ ولو قال اختاری فقالت أنا اختارنفسی طلق ‘‘ ( الھدایۃ : ۲/۳۷۷)
সারমর্মঃ
স্বামী যদি বলে (তালাক সংক্রান্ত)  তোমার ইখতিয়ার,বা তোমার ইচ্ছা।
স্ত্রী যদি বলে আমি নিজের নফসের প্রতি ইখতিয়ার করলাম,তাহলে তালাক পতিত হবে। 

الدر المختار مع رد المحتار کتاب الطلاق باب تفویض الطلاق ،ج:۳،ص:۳۱۵ و۳۱۶ (طبع سعید) قال لھا اختاری أو أمرک بیدک ینوی تفویض الطلاق ۔۔۔۔أو طلقی نفسک فلھا أن تطلق فی مجلس علمھا بہ مشافھۃ أو اخبارا وان طال ۔۔۔۔ما لم تقم لتبدل مجلسھا حقیقۃ أو حکما بان تعمل ما یقطعہ ۔۔۔۔۔لا تطلق بعدہ أی المجلس ۔۔۔۔الخ۔
সারমর্মঃ
স্বামী যদি বলে (তালাক সংক্রান্ত) তোমার ফায়সালা তোমার হাতে,তোমার ইচ্ছা,,,,
তাহলে স্ত্রীর অধিকার থাকবে সামনা সামনি বা খবর দিয়ে তালাক প্রদানের,,,।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে যে বিবরন রয়েছে,সেই হিসেবে আপনি তালাক প্রদানের ক্ষমতা প্রাপ্তা হননি,আপনার ১ম স্বামী তো আপনাকে তালাকের ক্ষমতাই দেয়নি।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত তালাক পতিত হয়নি।

এক্ষেত্রে ১ম স্বামীর সাথেই আপনার বিবাহ এখনো বহাল রয়েছে।

এক্ষেত্রে দ্রুত ২য় স্বামী হতে পৃথক হয়ে যেতে হবে।

(★উল্লেখ্য প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত জবাব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার ১ম স্বামী যে বলেছে যে, "ঠিক আছে তুমি পাঠাও"
এই কথা আপনার কোন কথার জবাবে বলেছে,আর সেখানে আর কি কি কথা হয়েছিলো,সেই বিষয় বিস্তারিত জানালে ভালো হতো। অথবা কোনো দারুল ইফতায় সরাসরি স্বশরীরে গিয়ে বিস্তারিত বলে মাসয়ালা জানার পরামর্শ রইলো। )

(০২)
হ্যাঁ,সেই মোহরানা পাওয়ার হকদার আপনি নিজে। সুতরাং সেই মোহরানা আপনি গ্রহন করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...