আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)

আসসালামু আলাইকুম। আমার বিয়ে হওয়া ১বছর সাত মাস হয়েছে। বিয়ের সময় আমি এবং আমার হাজব্যান্ড সুন্নতি বিয়ে সম্বন্ধে জানতাম না খুব একটা। হয়তো কিছুটা জানলেও আমরা অপারগ ছিলাম। আমার বিয়েতে হুজুর বিবাহ পাঠ করিয়েছেন,আমার বাবা বিবাহ পাঠ করাননি। ছেলের কাছে তো মেয়ের বাবা বিয়ে পাঠ করবেন কিন্তু বিয়ে পাঠ করেছেন হুজুর। তবে আমার বাবা উপস্থিত ছিলেন, তবুও বিয়ের আসর থেকে কিছুটা দূরে। আমার বিয়েতে কয়েকটা বিষয় যা আমাদের মনে এখনো খটকা লাগে তা হলো:

1ছেলের কাছেও আমার বাবা বিয়ে পড়াননি। হুকুম কি হবে এখন?

 ২.বিয়েতে সম্মিলিত মোনাজাত হয়েছে এটা ঠিক হয়েছে কি? 

৩.বিয়েতে খুতবা দেওয়া কি খুবই জরুরী আর দিলে সেটা কখন দিতে হয়? আমার বিয়েতে খুতবা দেওয়া হয়েছে বিয়ে পড়ানোর পরে হয়তো বা।

 ৪.উকিল বাবা শব্দটা সেভাবে উচ্চারিত না হলেও, মনে হয় আমার নানা উকিল বাবা ছিলেন।এটা বলছি কারণ তিনিই আমাকে আমাকে পরে আমার হাজবেন্ডের হাতে সঁপে দিয়েছিলেন।

 ৫.বিয়ের পরের দিন অর্থাৎ বাসর রাতের পরের দিন আমার হাজবেন্ড অলিমা অনুষ্ঠান করতে পারেননি কেননা তখন ওনার সামর্থ্য ছিল না.

বলতেএসব মিলিয়ে দেখা যায় আমার বিয়ে হয়েছে সামাজিক রীতিনীতিতে। যা আমি এবং আমার হাজবেন্ড দুজনেই ভালোভাবে মানতে পারি না খটকা লাগে। আমরা আল্লাহর দেয়া বিধান ভালোভাবে মেনে চলতে চাই আমরা খুব সংশয়ের মধ্যে থাকি। সব নাজায়েজ কাজে কি বিয়েতে সমস্যা হবে? বিয়ে কবুল হবে? আসলে এসব নিয়ে সন্দেহ থাকা ঠিক না। তাই সন্দেহ দূর করতে প্রশ্ন করেছি ওস্তায। দয়া করে বলে দে আমাদের এখন করনীয় কি? আবার কী সুন্নতি পদ্ধতিতে বিয়ে পড়ানো যাবে?

1 Answer

0 votes
by (57,030 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/56002/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।


হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)


ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}


বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।


ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!


 ১. জ্বী, কোনো ইমাম বা হুজুর যদি আপনাদের দুজনের কাছে ইজাব-কবুল পেশ করার মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়ে দেন তাহলেও বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে। আবার আপনারা যেহেতু বিয়েতে রাজী ছিলেন তাই কোনো হুজুর বিয়ে পড়িয়ে দিলেও বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে। তাই পেরেশানীর কোনো কারণ নেই।

২. এতে কোনো সমস্যা নেই।

৩. বিয়েতে খুতবা দেওয়া সুন্নাত। আর তা বিয়ে পড়ানোর পরেই দিতে হয়।

৪. জ্বী ঠিক আছে।

৫. জ্বী এতে কোনো সমস্যা নেই।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের বিয়ে সহীহ হয়ে গিয়েছে। তাই পেরেশানীর কোনো কারণ নেই। তবে আপনারা একান্ত চাইলে আবার একেবারে সুন্নাত তরীকায় বিয়ে করতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 133 views
...