আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (47 points)
আল্লাহর সিফাতের ব্যাপারে ২ টি মূলনীতি দেখতে পেলাম।
১) যেসব সিফাতের ব্যাপারে কোরআন হাদিসে কোথাও কিছু বলা হয় নি, সেগুলো সাব্যস্ত ও করা যাবে না, নাকচ ও করা যাবে না। বরং নীরব থাকতে হবে।
২)আল্লাহর সিফাত সাব্যস্তের জন্য দলিল লাগবে, নাকচের জন্য দলিল লাগবে না।

এ ব্যাপারে সঠিক কোনটি?  আমাদের মূলনীতি কেমন হবে?

1 Answer

0 votes
by (560,820 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা  সবকিছুই শুনেন।
মানুষ যে কথাবার্তা বলে, আলোচনা করে, তিনি তা শোনেন। একজনের কথা শুনতে গিয়ে অন্যজনের কথা থেকে বেখবর থাকেন না। কোথাও কোনো গোপন পরামর্শ হলে তাও তিনি শুনতে পান। যে ভাষায়ই কথা বলা হোক না কেন, তিনি সব শোনেন ও বোঝেন। এমনকি গহিন সমুদ্রের তলদেশে বসেও যদি কেউ কথা বলে, তাও তিনি শুনতে পান।
গহিন সমুদ্রের তলদেশে কোনো পাথর,পানি ইত্যাদির আওয়াজও তিনি শুনতে পান।
,
সুরা মুজাদালাহ এর ০১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

قَدۡ سَمِعَ اللّٰهُ قَوۡلَ الَّتِیۡ تُجَادِلُکَ فِیۡ زَوۡجِهَا وَ تَشۡتَکِیۡۤ اِلَی اللّٰهِ ٭ۖ وَ اللّٰهُ یَسۡمَعُ تَحَاوُرَکُمَا ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیۡعٌۢ بَصِیۡرٌ ﴿۱﴾

আল্লাহ অবশ্যই সে রমনীর কথা শুনেছেন যে তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বাদানুবাদ করছিল আর আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছিল। আল্লাহ তোমাদের কথোপকথন শোনেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।
,
সুরা আ'রাফের ২০০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা  ইরশাদ করেনঃ 

وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ ؕ اِنَّهٗ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۰۰﴾

আর যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোন প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

মানুষ যা প্রকাশ করে তা যেমন জানেন, তেমনি যা গোপন করেন তথা মনে মনে রাখেন এমনকি মনে সংকল্প করেন তাও জানেন। এ বিষয়টি সুস্পষ্ট করে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-

قُلْ إِن تُخْفُواْ مَا فِي صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ اللّهُ وَيَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأرْضِ وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

‘(হে রাসুল!) আপনি বলে দিন, যদি তোমরা তোমাদের মনের কথা গোপন করে রাখ অথবা প্রকাশ করে দাও, আল্লাহ সে সবই জানতে পারেন। আর আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে, সেসবও তিনি জানেন। আল্লাহ সব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।’ 
(সুরা আল-ইমরান : আয়াত ২৯)

,
কোন কিছুই তার সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।  (সুরা: শুরা, আয়াত: ১১)

নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সুরা: নিসা, আয়াত: ৫৮)

আল্লাহ রাত্রিকে প্রবিষ্ট করেন দিবসের মধ্যে এবং দিবসকে প্রবিষ্ট করেন রাত্রির মধ্যে এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সম্যক দ্রষ্টা।  (সুরা: হজ্জ, আয়াত: ৬১)

হে নবী! তুমি বল, তারা কত কাল ছিল, আল্লাহই তা ভালো জানেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অজ্ঞাত বিষয়ের জ্ঞান তারই। তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা (সুরা:কাহফ, আয়াত: ২৬)।

কখনই নয়, অতএব তোমরা উভয়ে আমার নিদর্শনসহ যাও, আমি তো তোমাদের সঙ্গে আছি, আমি শ্রবণকারী। (সুরা: শু‘আরা, আয়াত: ১৫)

তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও গোপন পরামর্শের খবর রাখি না? অবশ্যই রাখি। আমার ফেরেশতারা তো তাদের নিকট অবস্থান করে সব কিছু লিপিবদ্ধ করেন (সুরা: যুখরুফ, আয়াত: ৮০)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যেসব সিফাতের ব্যাপারে কোরআন হাদিসে কোথাও কিছু বলা হয়নি, সেগুলো যে আল্লাহর সিফাত,এটা কোন দলিলের ভিত্তিতে সাব্যস্ত হলো? 

কে বলেছে যে সেগুলো আল্লাহর সিফাত?

মূল বিষয় হলো কুরআন হাদীসে যেসব সিফাতের কথা উল্লেখ আছে,সেগুলোর প্রতি আমরা বিশ্বাস স্থাপন করবে।
ইহা ছাড়া অন্য গুনাগুন এর বিষয় কেহ বললে সেক্ষেত্রে তাহা নিয়ে গবেষণা করা হতে নিজেকে দূরে রাখবো।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রাযি থেকে বর্ণিত,
أخرجه أبو نعيم في "حلية الأولياء" (6/66) ، وأبو القاسم التميمي في "الحجة في بيان المحجة" ، وقوام السنة في "الترغيب والترهيب" (673) ، جميعا من طريق عبد الجليل بن عطية القيسي ، قال ثنا شهر بن حوشب ، عن عبد الله بن سلام -رضي الله عنه- قال: خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِهِ وَهُمْ يَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ اللهِ ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:" فِيمَ تَتَفَكَّرُون " ، قَالُوا: نَتَفَكَّرُ فِي اللهِ قَالَ:" لَا تُفَكِّرُوا فِي اللهِ ، وَتَفَكَّرُوا فِي خَلْقِ اللهِ ؛ فَإِنَّ رَبَّنَا خَلَقَ مَلَكًا قَدَمَاهُ فِي الْأَرْضِ السَّابِعَةِ السُّفْلَى ، وَرَأْسُهُ قَدْ جَاوَزَ السَّمَاءَ الْعُلْيَا، مَا بَيْنَ قَدَمَيْهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ مَسِيرَةُ سِتِّمِائَةِ عَامٍ، وَمَا بَيْنَ كَعْبَيْهِ إِلَى أَخْمَصِ قَدَمَيْهِ مَسِيرَةُ سِتِّمِائَةِ عَامٍ، وَالْخَالِقُ أَعْظَمُ مِنَ الْمَخْلُوقِ» .
সারমর্মঃ রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা আল্লাহকে নিয়ে চিন্তা ফিকির করবে না।বরং আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা গবেষণা করবে।(হিলয়াতুল আউলিয়া-৬/৬৬(আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব-৬৭৩)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (تَفَكَّرُوا فِي آلَاءِ اللَّهِ، وَلَا تَفَكَّرُوا فِي اللَّهِ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা আল্লাহর নিয়ামত নিয়ে চিন্তা গবেষনা করো। আল্লাহকে নিয়ে চিন্তা গবেষনা করবে না।(বায়হাক্বী-৯২৭, তাবারানি-১২১১১)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...