আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। আমার ৪ টা প্রশ্ন আছে।

১) তাহাজ্জুদের পর ফজরের ওয়াক্ত হয়ে গেলে আমি যদি আযানের পূর্বেই ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত আদায় করে ফেলি এবং বিভিন্ন দুনিয়াবি কাজ করে আযান হলে মসজিদে গিয়ে জামাতে ফজরের ফরজ নামাজ আদায় করি এতে কি কোন সমস্যা হবে?

২) আমার নাকের এলার্জির সমস্যা আছে। সকালে ওযুতে নাকে পানি দিলেই আমার সর্দি,হাঁচির সমস্যা হয়। এমন অবস্থায় জামাতে দাড়ালে আমি সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকি এই বুঝি হাঁচি আসলো!!  আর হাঁচির সাথে সর্দি আসার সম্ভাবনা থাকে বলে প্রায় সময়ই ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় এবং নাক টানতে হয়। এমন করতে গিয়ে আমি আমার নাক নিয়েই ব্যস্ত থাকি যাতে নামাজে পূর্ণ মনযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। এমতাবস্থায় জামাতে না গিয়ে ঘরে নামাজ পড়া যাবে কিনা? মূলত নাকের সমস্যার জন্য নামাজে ভালো মনযোগ থাকে না আর হাঁচিতে সর্দি বা পানি আসলে মুসল্লিদের সমস্যা হবে এই ভেবে আমি যেতে চাই না। সে সময় ঘরে নামাজ পড়লে ভালোই মনযোগ দিতে পারি। এমতাবস্থায় কি করব? মাস্ক পড়াটা কি সমাধান হতে পারে?

৩) আমি একটানা কুরআন পড়তে পারি না। ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমি যদি একটা  বা দুইটা করে শব্দ পড়ে পড়ে তেলাওয়াত করি তাহলে কি গুনাহ হবে?

৪) তাহাজ্জুদের জন্য ওযু করার প্রায় ১ ঘন্টা ২০ মিনিট পর ফজরের জামাত হয়। দুইবার ওযু করতে ইচ্ছা করে না। তাহাজ্জুদের ওযু দিয়ে ফজরের নামাজ পড়লাম কিন্তু হয়ত আমার ওযু ভেঙ্গে গেছে কিন্তু আমি জানি না (অনেক সময় ছোট মযির ফোঁটা চলে আসে)  তাহলে কি আল্লাহ আমার এই নামাজ কবুল করবেন? নিয়মিত চেক করে আবার ওযু করাটা পেইন লাগে আবার যেহেতু নাকে ঠান্ডার সমস্যা আছে। কি করব?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، كَانَتْ تِلْكَ صَلاَتَهُ، يَسْجُدُ السَّجْدَةَ مِنْ ذَلِكَ قَدْرَ مَا يَقْرَأُ أَحَدُكُمْ خَمْسِينَ آيَةً قَبْلَ أَنْ يَرْفَعَ رَأْسَهُ، وَيَرْكَعُ رَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ، ثُمَّ يَضْطَجِعُ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ حَتَّى يَأْتِيَهُ الْمُنَادِي لِلصَّلاَةِ.

আবূল ইয়ামান (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাহাজ্জুদের) এগার রাকা’আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন এবং তা ছিল তাঁর (স্বাভাবিক) সালাত। সে সালাতে তিনি এক একটি সিজ্দা এত পরিমাণ (দীর্ঘায়িত) করতেন যে, তোমাদের কেউ (সিজ্দা থেকে) তাঁর মাথা তোলার আগে পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারত। আর ফজরের (ফরয) সালাতের আগে তিনি দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। তারপর তিনি ডান কাঁতে শুইতেন যতক্ষণ না সালাতের জন্য তাঁর কাছে মুয়ায্যিন আসতো।
(বুখারী ১০৫৬)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এক্ষেত্রে ফজরের ওয়াক্ত আসার পর ফজরের সুন্নাত আদায় করে থাকলে এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।

ফজরের সুন্নাত আদায়ের জন্য আযান হওয়া আবশ্যক নয়। বরং ফজরের ওয়াক্ত আসাই যথেষ্ট। 

(০২)
এমতাবস্থায় জামাতে না গিয়ে ঘরে নামাজ পড়া যাবেনা।
জামাতেই নামাজ আদায় করতে হবে।
এক্ষেত্রে পকেটে একটি রুমাল বা টিস্যু পেওয়ার রাখবেন, হাঁচি আসলে এক হাত দিয়ে রুমাল/টিস্যু পেপারটি পকেট থেকে বের করে নাক ধরবেন ও মুছবেন,তাহলে আর কোনো সমস্যা হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 
পাশাপাশি চিকিৎসা চালিয়ে যাবেন। 

বুখারী শরীফের ৩৯৬ নং হাদীসে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى نُخَامَةً فِي الْقِبْلَةِ، فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَيْهِ حَتَّى رُئِيَ فِي وَجْهِهِ، فَقَامَ فَحَكَّهُ بِيَدِهِ فَقَالَ " إِنَّ أَحَدَكُمْ إِذَا قَامَ فِي صَلاَتِهِ، فَإِنَّهُ يُنَاجِي رَبَّهُ ـ أَوْ إِنَّ رَبَّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْقِبْلَةِ ـ فَلاَ يَبْزُقَنَّ أَحَدُكُمْ قِبَلَ قِبْلَتِهِ، وَلَكِنْ عَنْ يَسَارِهِ، أَوْ تَحْتَ قَدَمَيْهِ ". ثُمَّ أَخَذَ طَرَفَ رِدَائِهِ فَبَصَقَ فِيهِ، ثُمَّ رَدَّ بَعْضَهُ عَلَى بَعْضٍ، فَقَالَ " أَوْ يَفْعَلْ هَكَذَا ".

কুতায়বা (রহঃ) .... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিবলার দিকে (দেয়ালে) ‘কফ’ দেখলেন। এটা তাঁর কাছে কষ্টদায়ক মনে হল। এমনকি তাঁর চেহারায় তা ফুটে উঠলো। তিনি উঠে দিয়ে তা হাত দিয়ে পরিষ্কার করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে তাঁর রবের সাথে একান্তে কথা বলে। অথবা বলেছেন, তাঁর ও কিবলার মাঝখানে তাঁর রব আছেন। কাজেই, তোমাদের কেউ যখন কিবলার দিকে থুথু না ফেলে। বরং সে যেন তাঁর বাম দিকে বা পায়ের নীচে তা ফেলে। তারপর চাঁদরের আঁচল দিয়ে তিনি তাতে থুথু ফেললেন এবং তাঁর এক অংশকে অন্য অংশের উপর ভাঁজ করলেন এবং বললেনঃ অথবা সে এরূপ করবে।
সহীহ : বুখারী ৪০৫, সহীহ আল জামি‘ ১৫৩৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ২২৬৭।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এক্ষেত্রে গুনাহ হবেনা।
এমন কষ্টে তিলাওয়াতের দরুন দ্বিগুন ছওয়াব হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، وَهَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفَى، عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " الَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهُوَ مَاهِرٌ بِهِ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ، وَالَّذِي يَقْرَؤُهُ وَهُوَ يَشْتَدُّ عَلَيْهِ فَلَهُ أَجْرَانِ " . -

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন পাঠে দক্ষ ব্যক্তি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ফিরিশতাদের সঙ্গী হবে। আর যে ব্যক্তি কুরআন পড়ার সময় আটকে যায় এবং কষ্ট করে তিলাওয়াত করে তার জন্য রয়েছে দ্বিগুন সওয়াব।
বুখারী ৪৯৩৭, মুসলিম ৭৯৮, ইবনু মাজাহ ৩৭৭৯, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক্ব ৪১৯৪।

(০৪)
এক্ষেত্রে মাঝে ঘুমিয়ে গেলে পুনরায় অযু করবেন। ঘুমিয়ে না গেলে সেক্ষেত্রে পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হয়েছে কিনা,তাহা নামাজের আগে চেক করবেন।
এক্ষেত্রে কিছু বের হয়ে থাকলে পুনরায় অযু করে নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি কোনো কিছুই বের না হয়,সেক্ষেত্রে আর অযু করতে হবেনা। তাহাজ্জুদের অযু দিয়েই ফজরের নামাজ আদায় হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আসসালামু আলাইকুম। টিস্যু বা রুমাল না নিয়ে মাস্ক পড়ে নামাজ পড়লে কি হবে?
by (561,180 points)
বিনা ওযরে এমনটি করলে মাকরুহ হবে।
ওযর বশত হলে মাকরুহ হবেনা।

তবে সর্বাবস্থায় নামাজ হয়ে যাবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...