আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওবারকাতুহ।

উস্তাদ,নিম্মোক্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি পয়েন্ট আকারে দিতেন তাহলে খুব উপকৃত হতাম।আর অনেক বেশি দুঃখিত এতো গুলা প্রশ্ন একসাথে করার জন্য
১/একদিন আমি নিজেই নিজের কাছে আল্লাহর কসম করে বলেছিলাম সেদিন ফযরের পরে আর ঘুমাবোনা।কিন্তু সেদিন জেগে থাকতে আমার এতো বেশি কষ্ট হইছে যা বলার বাইরে।কিন্তু তাও আমি ঘুমাইনি।এরপর সকালের আমল করার জন্য চেয়ারে বসে আমল করছিলাম।তখন আমার নিজের অজান্তেই ঘুম চলে আসছে।এর কিছুক্ষন পর ঘুম ভাঙ্গলে আবার খুব ঘুম পাচ্ছিলো।তখন নিজ ইচ্ছাতেই আবার চেয়ারে ঘুমাই । সেদিন ৪০ মিনিটের মতো ঘুমাইছি।এখন কসম করার পরেও ঘুমাই যাওয়ার কারণে এর কাফফারা আদায় করতে হবে কিনা?

২/একদিন বিতির নামায পড়ার সময় প্রথম রাকাতে মনে হয় সুরা নাসর পড়েছি,দ্বিতীয় রাকাতে সুরা লাহাব না পড়ে ভুল করে সুরা ইখলাস পড়ে ফেলেছি এখন সুরা গুলা সিরিয়ালে না পড়ার কারণে বিতির নামায টা কি আবার কাজা করতে হবে?

৩/বিতির নামাযে শেষের রাকাতে সুরা ইখলাস পড়া কি বাধ্যতামূলক?

৪/নিজের মুখের সামান্য রক্ত যদি পেটে চলে যায় তাহলে কি সেটা  হারাম হবে?
৫/কেউ যদি বলে যে আমি অমুক কাজ আর করবোনা এটা আমি নিজের সাথে নিজে ওয়াদা করলাম এবং পরে যদি এই কাজটি আবার করে তাহলে কি ওয়াদা ভঙ্গ করা হবে?যদি ওয়াদা ভঙ্গ করা হয়ে থাকে তাহলে এর কাফফারা কী?

৬/কারো সাথে খারাপ আচরণ করলে কি আমলে স্বাদ পাওয়া যায়না?

৭/আল্লাহর প্রিয় বান্দি হওয়ার উপায় কি??

৮/আমি IOM এ আলিম কোর্সের একজন ত্বলিবুল ইলম।আমি ক্লাস এ কোন ভাবেই মনোযোগ দিতে পারিনা।ক্লাস চালু রেখে আমি ফোনের ভিবিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করি।ক্লাস করি শুধু মাত্র এটেনডেন্সের জন্য।ক্লাস এ মনোযোগ দিইনা।এভাবে কি আমি কোন বান্দার হক নষ্ট করছি?আমি যে ক্লাস এর হক আদায় করছিনা এর জন্য কি আমার গুনাহ হবে??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
সুরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 
 لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُہٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَہۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُہُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। 
,
★সুতরাং শপথ তিন প্রকার। এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে।' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বলা হয়। 

এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।

তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে আপনি যদি মনে মনে কসম করে থাকেন,সেক্ষেত্রে কাফফারা দিতে হবেনা।
আর যদি মুখে উচ্চারণ করে আল্লাহর নামে কসম করে থাকেন,সেক্ষেত্রে কসম ভঙ্গের কাফফারা আদায় করা আপনার উপর আবশ্যক হবে।

(০২)
উক্ত বিতর নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।
সেটির কাজা আদায় করতে হবেনা। 

(০৩)
বিতির নামাযে শেষের রাকাতে সুরা ইখলাস পড়া বাধ্যতামূলক নয়।

(০৪)
সেটা তো হারাম।
তবে অনিচ্ছাকৃত ভাবে গেলে এর দরুন সমস্যা নেই।

(০৫)
এক্ষেত্রে কোনো কাফফারা আদায় করতে হবেনা।

(০৬)
এমনটি কাহারো ক্ষেত্রে হতে পারে।

(০৭)
এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালার যাবতীয় বিধান মেনে চলতে হবে।
নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত ও যিকির করতে হবে। সৎ লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে। গুনাহের কাজ হতে বিরত থাকার জন্য সব সময় চেষ্টা করা।
গুনাহের উপকরণ হতে দূরে থাকা।
সুন্নাত পদ্ধতিতে জীবন যাপন করা 
 
পাশাপাশি নিম্নোক্ত হাদীসের উপর আমল করতে হবে।

প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.

‘‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৫৪।)

(০৮)
আপনি কোন বান্দার হক নষ্ট করছেননা।আপনি ক্লাস এর হক আদায় করছেননা।
বিনা ওযরে এমনটি করলে সেক্ষেত্রে এর দরুন আপনার গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...