আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত উস্তায।
কিছু বিষয় নিয়ে কনফিউশান হচ্ছে তাই জানতে চাচ্ছি।
১. কেও ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে কষ্ট দিলে, বা আমার উপর মিথ্যারোপ করলে, অন্যের সামনে ছোট করলে বা দোষী প্রমানিত করতে চাইলে বা আমার হক নষ্ট করে কিন্তু আমি অনেক কষ্ট পাই আবার পরক্ষণেই তাকে ক্ষমা করে দেই (কিন্তু তারপরেও আমি মাঝে মাঝে ভীষণ কষ্ট পাই আমার সাথে অকারনে কেন এমন করেছে এটা ভেবে),
তাকে ক্ষমা করে দেওয়াতে সে ক্ষমা পেয়ে গেল।কিন্তু সে যে হিংসা থেকে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছাবশত করেছে তাকে কী এ জন্য পরকালে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না?
আমি অনেকের কাছে টাকা পাই কিন্তু তারা আমাকে দিচ্ছে না,আমার প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও কখনও চাইতে পারি না। যদিও ক্ষমা করে দিয়েছি।
এর জন্য কী পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তিকে জবাবদিহি করতে হবে?না কি তার এ ব্যাপারে কোনো হওসেব নিকাশ হবে না?
যেহেতু তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে
(★তারা প্রতিনিয়ত এরকম ক্ষতি করতেই থাকে)
ক্ষমা করে দেওয়ার পরেও যে কষ্ট হয়,কান্না আসে এজন্য কী আমাকে জবাবদিহি করা লাগবে?
৩. যদি কোনো মেয়ে তার মেয়ে ফ্রেন্ড কে বলে যে "আমি ছেলে হলে তোমাকেই বিয়ে করতাম" এ ধরনের কথা বলাতে ইতস্তবোধ হয় খুব। কীভাবে বান্ধবীদের বুঝানো যেতে পারে এ ব্যাপারে কোনো হাদিস আছে কী উস্তায?
৪. আমার স্কুল কলেজের অলমোস্ট সকল বান্ধবীদের মামা অথবা চাচা অথবা ভাইয়ের জন্য বিয়ের প্রপোজাল পাঠালে আমাদের বাসা থেকে না করে দেওয়া হয় মনমতো না হওয়ার কারনে।আমার বান্ধবীরা আমার ছবি চায়, ছবি তুলতে চায় আমি ছবি না দেওয়াতে বা ভিডিও কলে অদের সাথে কথা না বলাতে ওরা অনেক কষ্ট পায়,বা কোনো খাবার রান্না করে নিয়ে এলে পিঠা বা যেকোনো আইটেম,আমি খাইনা,খুব বিশ্বস্ত না হলে কারো রান্না করে নিয়ে আসা খাবার আমি খাইনা (কারন আমি সতর্ক থাকি পূর্বে আমাকে খাবারের মাধ্যমে তাবিজ করা হয়েছিল) এতে ওরা খুব কষ্ট পায় এবং এক পর্যায়ে সম্পর্ক নষ্ট হয়। এতে কী আমার গুনাহ হবে?
৫. কিছুদিন আগে একজনের সাথে ওয়াদা করছিলাম," যদি নেক্সট এই কাজ করা হয় তাহলে কোনোদিন মিষ্টি খাব না।কিন্তু ঐ কাজটা সে আবার করা হয়েছে।
এই ওয়াদার কাফফারা কী হবে?যদিও এখনও মিষ্টি খাওয়া হয়নি,,,, সামনে তো বলা যাচ্ছে না কখন মিষ্টি খাওয়া লাগতে পারে।এ ধরনের ওয়াদা ভঙ্গের কাফফারা কীভাবে আাদায় করতে হবে?
৬. বাসায় কাওকে না বলে রোজা রেখে যদি দুপুরে পরিবারের কেও জিজ্ঞেস করে খেয়েছি কী না।তখন যদি বলি হ্যা আমার খাওয়া শেষ বা স্পষ্ট করে বলতে জয় হ্যা অথবা না, তখন ভয়ে হ্যা বলে ফেলি, এক্ষেত্রে কী মিথ্যা বলার গুনাহ হবে
বা রোজা ভাঙার কথা বলার পর যদি না ভেঙে বলি যে ভেঙেছি তাহলে কী গুনাহ হবে?
৭. উস্তায অনেক আগে রাস্তার পাশে যে ফুল গাছ থাকে ওখান থেকে কাঠগোলাপ আর বাগান বিলাস ফুল ছিড়েছিলাম।ওগুলো তো সরকারি গাছ যদিও কোথাও লিখা ছিল না যে "ফুল ছিড়া নিষেধ "।ভুলে ফুল ছিড়ে ফেলেছি এখন কী এই ঋন সারা বাংলাদেশের মানুষকে দিতে হবে মৃত্যুর পরে?
সমুদ্র বা নদীর পাড় থেকে ঝিনুক নিলে কী গুনাহ হবে?
৮. ২০১৭/১৮ সালে আমাদের স্কুলে পিকনিক হয়। সেখানে অংশগ্রহণ করেছিলাম।যাওয়ার সময় আমার বান্ধবী আমার ব্যাগ এ ওর মেমোরি কার্ড রাখে।কিন্তু স্কুলে যাওয়ার পথে আরেক বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলাম একসাথে যাব এজন্য। ওদের বাসায় যেয়ে ব্যাগ খুজার পরে মেমোরি কার্ড টি আর পাইনি।পরে পিকনিক শেষে বাড়ি আসার অনেক দিন পরে আমার এক ভাবি ব্যাগ ধুইতে নিয়ে মেমোরি কার্ড পেয়ে আমাকে দেখায় যে দেখ তো ব্যাগে মেমোরি কার্ড টা কার,পরে মনে পড়েছে এটা তো আমার বান্ধবীর।ততোদিনে মেমোরি কার্ডটি নষ্ট হয়ে যায় এবং আমাদের এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়।কিন্তু ওকে আর খুজে পাইনি।ওর মামাতো বোনদের থেকে খোজ নিয়ে জেনেছি ওর বিয়ে হয়ে গিয়েছে।কোনোভাবেই ওর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।
তারকয়েক বছর পরে হঠাৎ রাস্তায় দেখা হয় কিন্তু শুধু কুশল বিনিময় ছাড়া আর কোনো কথা বলতে পারিনি।ফোন নাম্বার চাইলে ও জানায় যে ও ফোন ইউজ করে না।
তারপরে আর ওর দেখা পাইনি।কিন্তু এরপর অনেক ভেবে আমি ওর মেমোরির সমপরিমান টাকা মসজিদের দান বক্সে দিয়েছিলাম।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে উস্তায আমার কী এজন্য জবাবদিহি করতে হবে?আমি কী ওর কাছে ঋনি থাকবো?খুব অস্বস্তি হচ্ছে ুটা নিয়ে।
৯. মিলাদের পরে বা মসজিদের সাপ্তাহিক হালাকায় যে খাবার বা জিলাপি দেওয়া হয় সেটা যারা মিলাদ পড়ে না তারা খেলেও কী বিদয়াত হয় বা গুনাহ হয়?
১০. উস্তায আমি সর্বদা নজরের হিফাজত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি কিন্তু কয়েকদিন আগে আমি না চাইতেও পরীক্ষা চলাকালীনসময় ক্লাসমেট একজনের দিকে কয়েকবার নজর পরে যায়,পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিল তখন, কথাও হয়েছে কয়েকদিন একটা প্রয়োজনীয় টপিক নিয়ে,কয়েকদিন অপ্রয়োজনীয় কথাও হয়েছে,কিন্তু কথা না বললেও পারতাম, কেন বললাম কথা,অনেক বেশি অনুশোচনা হয়,এখন নিজেকে নিজের কাছে ঘৃণা লাগে, লজ্জা লাগে অনেক,খাওয়া নামায সব কিছুতে নিজেকে অপরাধী মনে হয়,লজ্জা লাগে,পরিবারের লোকজনের দিকে তাকাতে পারি না লজ্জা লাগে।নিজেকে অনেক পচা মনে হয়।যদিও একেবারে নরমাল কথাই হয়েছে
আমি কী আমার স্বামীর হক নষ্ট করে ফেলেছি?অস্থিরতা কাটছে না
১১. আমি অনেক বেশি বোকা।সব কাজ/ চিন্তাধারা ভাসমান মনে হয় আমার কাছে,গভীর ভাবে ভাবতে পারিনা। সবাইকে সরল ভেবে না ভেবেই অনেক কথা বলে ফেলি।সবাইকে অনেক আপন ভেবে ফেলি,মনে করি সবাই নরমালি যেকোনো বিষয়
এর থেকে পরিত্রাণ এর উপায় কী?
এর জন্য কী আমার গুনাহ হবে?
১২. উস্তায একটা বিষয় জানতে পেরেছি যে সঠিক উদ্দেশ্যহীন আমলে কোনো সওয়াব হয়না।
কিন্তু ছোট থেকে নামাজপড়তাম কারন মা পড়তে বলতো বা নামাজ পড়তে হবে তাই পড়তাম। কোনো কাজিনের সামনে যেতাম না,তাদের দিকে বা কোনো ছেলের দিকে ভুলেও তাকাতাম না লজ্জা লাগতো এজন্য। বাসার কাজ করতাম করতে হবে বা করা উচিত মনে হতো তাই করতাম। গান শুনলে মা চিল্লাপাল্লা করতো বকা দিতো তাই শুনতাম না। কোনো ছেলের সাথে কথা বলিনি, কারন কথা বলা খারাপ কাজ, মানুষ পচা বলবে তাই বলিনি। কিন্তু এখানে আমার উদ্দেশ্য আল্লহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ছিল না।তাহলে কী আমি কোনো সওয়াব পাব না?
সবকিছু কী বিফলে যাবে?(তখন আমার দ্বীনের সঠিক /গভীর বুঝ ছিল না)
১৩. আমাদের ভালো কাজের বিনিময়ে কী আমরা দুনিয়াতে আমাদের প্রয়োজনীয় ভালো কিছু চাইব?বা প্রিয়জনের সুস্থতা চাইব?
নাকি ভালো কাজের বিনিময় শুধু মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি চাইব,জান্নাত চাইব?কোনটা বেশি যুক্তিযুক্ত?