আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
108 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি একজন বেসরকারি চাকুরিজীবী।আমার পরিবারে মা,বাবা,ছোট ভাই,দাদা আর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী।সবার খরচ ই আমাকে একা বহন করতে হয় আলহামদুলিল্লাহ। কুরবানি ঈদের কিছুদিনের মধ্যেই ইন শা আল্লাহ আমাদের সন্তান হবে।এদিকে ব্যক্তিগত কিছু কারণে আমার অনেক ঋণ আছে,যেগুলো এক বছরের বেশি সময় ধরে বহন করছি।মাস শেষে আমার কোন সঞ্চয় তো দূর,বেতন পেতে দেরি হলে আবার ধার করে চলতে হয়,তারপর বেতন পেলে সেগুলো শোধ করি।এজন্য চেষ্টা করেও পারি না ঋণ টা অল্প অল্প করে শোধ করতে।পারিবারিক সম্পদ যা আছে সেগুলোর মালিকানা দাদা থেকে বাবা হয়ে আমার নামে এখনো রেজিষ্ট্রি হয় নি।তবে বংশ পরম্পরায় কিছু সম্পদ আমার নামে হবে ইন শা আল্লাহ।এখন আমার মূল যে জিজ্ঞাসা বা সমস্যা তাই সমাধানের জন্য আমাকে নসিহাহ দিয়ে বাধিত করবেন।সামনে কুরবানি,সন্তানের আকীকা,আবার ঋণ শোধ ও স্ত্রীর ডেলিভারী খরচ ব্যাপারগুলো জড়িত।আমি কিছু বোনাস পাব ঈদে।আর আমাদের নিয়ত ছিল সন্তানের আকিকা ৭/১৪ দিনের মধ্যে করে দেওয়ার।আমার স্ত্রী এই অবস্থায় ও অনেক কষ্ট করে কিছু উপার্জন করছে কারণ তার মনের ইচ্ছা সন্তানের আকিকা দেওয়ার।সে যতটুকু উপার্জন করেছে তা দিয়ে হয়ত টেনেটুনে আকিকার খরচ টা হবে।এদিকে আমার ঋণের বোঝা তেও সে অনেক কষ্ট পায়।তাই একরকম বাধ্য হয়েই কাজে নেমেছে।এ উপার্জনের টাকা তো তার বাবা মা কে সাপোর্ট দেওয়ার জন্যও প্রয়োজন যা সে অনুভব করে প্রতিনিয়ত,সেই বাসনা চাপা দিয়ে সে আমাকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য কষ্ট করছে।সন্তানের আকিকা,ঋণ শোধ দুটো দায় ই আমার,আমার স্ত্রীর জন্য কোনটাই ফরজ নয়,কিন্তু সে আমার এই কষ্ট টা হালকা করার জন্য বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত কাজ করছে।এই অবস্থায় আমার কি কুরবানী করা ফরজ?নাকি বোনাসের টাকা দিয়ে যতটা পারা যায় ঋণ শোধ করে (হয়ত পুরোপুরি শোধ হবে না) ঋণের বোঝা হালকা হওয়া।আর আমার স্ত্রীর টাকা দিয়ে সন্তানের আকিকা দিব আপাতত যেহেতু তার মনের নিয়ত আর ইচ্ছা।পরে আস্তে আস্তে তাকে টাকা দেওয়া যাবে।সম্মানিত শায়েখ আমাকে উত্তম সমাধান দিয়ে সাহায্য করুন।

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৭৮০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
ঋণ পরিশোধ করার পর যদি হাতে ৫২.৫ভড়ি রূপার সমমূল্য পরিমাণ সম্পত্তি হাতে না থাকে, তাহলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব হবে না।কিতাবুল-ফাতাওয়া-৪/১৩৪)

প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। সুতরাং আপনি বোনাসের টাকা দিয়ে যতটা পারা যায় ঋণ শোধ করবেন।

এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রী চাইলে সন্তানের আকীকা তার টাকা দিয়ে দিতে পারেন।
সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...