আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (46 points)
আসসালামু আলাইকুম।
প্রশ্ন (১)যদি কোন ব্যক্তির এমন হয় যে সে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেছিল কিন্তু  ব্যবসায় লাভ হয়নি। সেই ব্যক্তি এখন একটা কোম্পানিতে জব করছে বেতন ২০ হাজার টাকা।সবসময়ই পেরেশানিতে থাকে সে ঋণ  কিভাবে পরিশোধ করবে। তার বাবার সামান্য কিছু জমি জমা আছে কিন্তু তার বাবা এখন তার নামে সেই জমিগুলো দিবে না।
এই ব্যক্তি প্রথম  বাচ্চা নিতে চায়,কিন্তু বাচ্চা নেওয়ার পরেও যদি তার এই একই দরিদ্র অবস্থা থাকে তাহলে বাচ্চাকে কিভাবে লালন পালন  করবে এখন তো দ্রব্যমূলের অনেক দাম। এই ব্যক্তিটি বিশ্বাস করে যে,রিজিক দাতা  একমাত্র আল্লাহ। কিন্তু আল্লাহ যদি তার দরিদ্র অবস্থার মধ্যেই রাখে   তাহলে সে তার সন্তানকে কিভাবে লালন পালন করবে দরিদ্রতার কষ্টের কারণে সে পেরেশানিতে থাকে। এরূপ অবস্থায় সে যদি চায় যে, সচ্ছল অবস্থা হওয়ার পর সন্তান নিবে তাহলে কি তার কোন কুফরি গুনাহ হবে কি?
প্রশ্ন (২) যদি কোন ব্যক্তি  বিচ্ছেদের  নিয়তে গাণিতিক সংখ্যা শুধুমাত্র  "১" বলে এবং  "১" সংখ্যার আগে এবং পরে  অন্য কিছু যদি না বলে তাহলে কি তার স্ত্রীর উপর কোন কিছু পতিত হবে  কি?


প্রশ্ন (৩) গাণিতিক সংখ্যা "১" এটা কি কেনায়া শব্দ?
হুজুর সবগুলো প্রশ্নের উত্তর জানাবেন দয়া করে। হুজুর সবগুলোর উত্তর না দিয়ে ফিরিয়ে দেবেন না আল্লাহর কসম লাগে  আপনার দু হাত ধরে অনুরোধ করছি । সবগুলো প্রশ্নের উত্তরটা দয়া করে দিবেন  হুজুর আবারো আপনার দুই হাত ধরে অনুরোধ করছি আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি।


আসসালামু আলাইকুম।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
এক্ষেত্রে কুফরির গুনাহ হবেনা।
তবে উক্ত নিয়তে জন্ম নিয়ন্ত্রণ এর পদ্ধতি অবলম্বন নাজায়েজ।

(২.৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তিনি ইবন শিহাব (রহঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলিলঃ “আমার তোমা হইতে দায়িত্বমুক্ত হইয়াছি। তুমিও আমা হইতে দায়িত্বমুক্ত।” ইহা দ্বারা তালাকাই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হইবে।

যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলিলঃ (أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ) “তুমি দায়মুক্ত” (أَنْتِ بَائِنَةٌ) “তুমি আমা হইতে পৃথক।” মালিক (রহঃ) বলেনঃ সে স্ত্রী যাহার সঙ্গে সহবাস করা হইয়াছে এইরূপ হইলে তবে তাহার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলির দ্বারা তাহার উপর তিন তালাক বর্তাইবে। আর যদি সেই স্ত্রী এমন হয় যাহার সহিত সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হইবে এবং তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে-সে উপরিউক্ত বাক্যগুলি দ্বারা এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে বলিয়া প্রকাশ করে তাহা হইলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেওয়া হইবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হইয়াছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসাবে অন্য লোকদের মতো একজন বলিয়া পণ্য হইবে। ইহার কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হইতে পৃথক হইবে না। আর যাহার সহিত সঙ্গম হয় নাই সেই স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হইয়া যায়।

মালিক (রহঃ) বলিয়াছেনঃ এ বিষয়ে যাহা আমি শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহাই আমার নিকট উত্তম।
(মুয়াত্তা মালিক ১১৬৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ,যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়। তিন তালাকের নিয়ত করলে তিন তালাক পতিত হয়। 
যদি দুই তালাকের নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে এক তালাক পতিত হয়।
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে কাযা'আন তালাক হবে। দিয়ানাতান তালাক হবেনা,কিন্তু যদি নিয়ত করে,তাহলে তালাক হবে।
আর যদি মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে না হয়,বরং রাগ ও ঝগড়াঝাটির অবস্থায় হয়,তাহলে প্রত্যেকটি কেনায়া বাক্য বলার দ্বারাই তালাক হবে,কিন্তু যেসব বাক্য দিয়ে গালি গালাজ উদ্দেশ্য করা হয়,সেসব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু যদি নিয়ত করে,তাহলে তালাক হবে।

(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এটি কেনায়া বাক্য। 
সুতরাং তালাকের নিয়তে বললে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।
অন্যথায় তালাক পতিত হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (46 points)
edited by
ভালোভাবে পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য আবারো প্রশ্ন ভুল হলে ক্ষমা করবেন। 
আপনি বলেছেন 
কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। যেগুলো নিয়ত না থাকলে হয় না এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

★এখানে " তুমি"  শব্দটি আছে। 

প্রশ্নে লেখা ছিল যে,

প্রশ্ন (২) যদি কোন ব্যক্তি  বিচ্ছেদের  নিয়তে গাণিতিক সংখ্যা শুধুমাত্র  "১" বলে এবং  "১" সংখ্যার আগে এবং পরে  অন্য কিছু যদি না বলে তাহলে কি তার স্ত্রীর উপর কোন কিছু পতিত হবে  কি?
এখানে ব্যক্তিটি যদি স্ত্রীর সামনে না এমনি একা কোন স্থানে যদি  শুধুমাত্র  "১" বলে কিন্তু "১" সংখ্যার পূর্বে যদি "তুমি" শব্দটি না বলে তাহলে কি তার স্ত্রীর  উপর  কোন কিছু পতিত হবে কি?
by (574,260 points)
আপনি ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্ন করেছেন।
জবাব দেয়া হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...