আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (108 points)
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকা-তুহ
আমরা একটা ব্যবসা করছি।তার বর্ণনা নিম্নরুপ

১,

ইনভেস্টর চারজন, তৌফিক, আদিয়ান, সিয়াম ও মুস্তাফিজ

গায়ে গতরে খাটবে তিনজন তৌফিক আদিয়ান সিয়াম

 ১০% করে আদিয়ান তৌফিক ও সিয়াম খাটাখাটুনির জন্য এমপ্লয়ি হিসেবে পাবে। বাকি ৭০ পার্সেন্ট, চার পক্ষ ইনভেস্টমেন্ট যতখানি তার এর আনুপাতিক হার অনুযায়ী পাবে।

এটা প্রফিটের ক্ষেত্রে।

লসের ক্ষেত্রে, ইনভেস্টমেন্টের আনুপাতিক হার অনুযায়ী প্রত্যেকের ভাগে যত অংশ পড়ে তত অংশ লস বহন করবে।
এরুপ নীতিমালায় ব্যবসা করা কি বৈধ? যদি অবৈধ হয় কিছু সাজেশান দিন কিভাবে ঠিক করা যায়।

২, উক্ত ব্যবসা মূলত চারজন মালিক। আমি সিয়াম একজন মালিক,তবে আমার ব্যক্তিগত শেয়ার আমি আরেকজনের কাছে বিক্রি করছি সে আমার ফ্রেন্ড খাইরুল,মানে তার থেকে ইনভেস্টমেন্ট নিচ্ছি।তার সাথে চুক্তি,উক্ত ব্যবসায় আমার ভাগের ইনভেস্টমেন্ট করার জন্য যে প্রফিট পাব তার ৫০% আমার ফ্রেন্ড খাইরুল কে দিব।আর লসের ক্ষেত্রে আমার ভাগের লসের ৫০% সে বহন করবে। উল্লেখ্য এমপ্লয়ি হিসেবে যা পাব তা আমার ফ্রেন্ড খাইরুল্কে দিবনা।

এই চুক্তি কি বৈধ? অবৈধ হলে করণীয় সাজেশান করবেন?

৩,মুহতারাম, আমি টিউশন করে এই মুহুর্তে ইনকাম করি ১১ হাজার টাকা,বাসা থেকে পাউ ৪হাজার। এটা দিয়ে নিজের খরচ চলি ও লোন শধ করি।লোন ছিল প্রায় আড়াইলাখের বেশি। এখন শোধ করতে করতে দুই লাখ (স্ত্রীর মোহরানা ৯৮ হাজার বাকি সহ)।


আমার পাওনাদার সেভাবে চাপ দেয়না,সময় দিয়েছে,দেয়ার। বলেছে সুবিধামত দিতে।

আমার বয়স ২৬, পড়াশুনার সুবাদে বাবা মার থেকে দূরে থাকি, বাবা অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক(এখনো পেনশান পাওয়া শুরু করেনি),মা প্রধান শিক্ষিকা, নিজ এলাকায় নিজস্ব বাসা আছে,বাবার জমিজমা আছে,বন্ধক দেয়া ও বন্ধক মুক্ত উভয়। তিন ভাইবোন, ছোট বোন পড়ালেখা করে। বড় ভাই চাকুরি খুজছে স্ত্রী আছে


এখন আমি কি যাকাত পাবার হক্বদার?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ব্যবসার ক্ষেত্রে এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম দেওয়াকে মুদারাবা বলা হয়।
এটি জায়েজ আছে। 
,
মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে।
কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ     
بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ
حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .
শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন।
নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪। 

 مَالِك وَجْهُ الْقِرَاضِ الْمَعْرُوفِ الْجَائِزِ أَنْ يَأْخُذَ الرَّجُلُ الْمَالَ مِنْ صَاحِبِهِ عَلَى أَنْ يَعْمَلَ فِيهِ وَلَا ضَمَانَ عَلَيْهِ وَنَفَقَةُ الْعَامِلِ فِي الْمَالِ فِي سَفَرِهِ مِنْ طَعَامِهِ وَكِسْوَتِهِ وَمَا يُصْلِحُهُ بِالْمَعْرُوفِ بِقَدْرِ الْمَالِ إِذَا شَخَصَ فِي الْمَالِ إِذَا كَانَ الْمَالُ يَحْمِلُ ذَلِكَ فَإِنْ كَانَ مُقِيمًا فِي أَهْلِهِ فَلَا نَفَقَةَ لَهُ مِنْ الْمَالِ وَلَا كِسْوَةَ قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يُعِينَ الْمُتَقَارِضَانِ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا صَاحِبَهُ عَلَى وَجْهِ الْمَعْرُوفِ إِذَا صَحَّ ذَلِكَ مِنْهُمَا قَالَ مَالِك وَلَا بَأْسَ بِأَنْ يَشْتَرِيَ رَبُّ الْمَالِ مِمَّنْ قَارَضَهُ بَعْضَ مَا يَشْتَرِي مِنْ السِّلَعِ إِذَا كَانَ ذَلِكَ صَحِيحًا عَلَى غَيْرِ شَرْطٍ قَالَ مَالِك فِيمَنْ دَفَعَ إِلَى رَجُلٍ وَإِلَى غُلَامٍ لَهُ مَالًا قِرَاضًا يَعْمَلَانِ فِيهِ جَمِيعًا إِنَّ ذَلِكَ جَائِزٌ لَا بَأْسَ بِهِ لِأَنَّ الرِّبْحَ مَالٌ لِغُلَامِهِ لَا يَكُونُ الرِّبْحُ لِلسَّيِّدِ حَتَّى يَنْتَزِعَهُ مِنْهُ وَهُوَ بِمَنْزِلَةِ غَيْرِهِ مِنْ كَسْبِهِ 
মালিক (রহঃ) বলেনঃ মুযারাবাত বা শরীকী কারবার এইভাবে বৈধ যে, কেহ কাহারও নিকট হইতে এই শর্তে টাকা নেয় যে, সে শ্রম ও মেহনত করিবে। ক্ষতি হইলে সে দায়ী থাকিবে না। সফরে খাওয়া-দাওয়া এবং বহন খরচ ও অন্যান্য বৈধ খরচ ঐ মাল হইতে নিয়ম মাফিক ব্যয় করা হইবে মূলধন অনুযায়ী। অবশ্য অর্থ গ্রহণকারী আবাসে থাকিলে মূলধন হইতে ব্যয় করিতে পারবে না।

মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি অর্থ গ্রহণকারী অর্থদাতাকে, অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারীকে তাহার শ্রমের পরিমাণ মতো কোন শর্ত ব্যতীত সাহায্য করে তবে তাহাতে কোন ক্ষতি নাই। যদি অর্থদাতা অর্থ গ্রহণকারী হইতে শর্ত ব্যতীত কোন বস্তু খরিদ করে তবে ইহাতেও কোন ক্ষতি নাই।

মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তিকে এবং স্বীয় দাসকে শরীকী কারবারের জন্য অর্থ দেয় এবং এই শর্ত করে যে, উভয়ই ইহাতে কাজ করিবে, তবে তাহা জায়েয আছে। কারণ নির্ধারিত লভ্যাংশের মালিক ক্রীতদাস হইবে, তাহার প্রভু উহা ছিনাইয়া লইতে পরিবে না, এই মালের স্বত্বাধিকারী ক্রীতদাসই থাকিবে।
(মুয়াত্তা মালিক ১৩৮৯)

বিস্তারিত জানুনঃ  


تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق وحاشية الشلبي: 
"قال - رحمه الله - (وما هلك من مال المضاربة فمن الربح)؛ لأنه تابع ورأس المال أصل لتصور وجوده بدون الربح لا العكس فوجب صرف الهالك إلى التبع لاستحالة بقائه بدون الأصل كما يصرف الهالك العفو في الزكاة قال - رحمه الله - (فإن زاد الهالك على الربح لم يضمن المضارب)؛ لأنه أمين فلا يكون ضمينا للتنافي بينهما في شيء واحد".
(کتاب المضاربۃ،باب المضارب یضارب،ج:5،ص:67،ط:المطبعة الكبرى الأميرية - بولاق، القاهرة) 
সারমর্মঃ-
মুদারাবার সম্পদ হয়ে যাহা লোকসান হবে বা ক্ষতিগ্রস্ত হবে,তাহা লভ্যাংশ থেকে পূরন হবে।
কেননা সেটা অনুগত,আর মূলধন হলো আসল।
যদি লাভ থেকে ক্ষতি বেশি হয়,সেক্ষেত্রে বাকি টুকু মূলধন থেকে পূরন করা হবে।

এক্ষেত্রে যে ব্যবসায় শ্রম দিচ্ছে,সে যদি শুধু শ্রমই দিয়ে থাকে,ইনভেস্ট না করে থাকে,তাহলে তার তো মূলধন নেই,তাই সে উক্ত লোকসানে ভাগীদার হবেনা। 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে ব্যবসা করা বৈধ,আলহামদুলিল্লাহ। 

(০২)
আপনি নিজের ব্যক্তিগত শেয়ার খাইরুলের কাছে পুরাটাই বিক্রয় করে এভাবে তাহা হতে খাইরুলকে ৫০% লাভ দেয়া, আর নিজে প্রকৃত পক্ষে কোনো টাকা ইনভেষ্ট না করেই ৫০% লাভ নেয়া প্রশ্নের বিবরন মতে জায়ে হবেনা।

এক্ষেত্রে আপনি নিজের ব্যক্তিগত শেয়ার এর ৫০% খাইরুলের কাছে বিক্রয় করে তাকে এভাবে ৫০% লাভ দিতে পারবেন।
সেক্ষেত্রে এটা জায়েজ হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে আপনার কোনো প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ বা স্বর্ন/রুপা না থাকলে আপনি যাকাত গ্রহনের হক্বদার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...