আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম, আজ অন্য একটা প্রশ্ন করতে চাই প্রশ্নটা বিস্তারিত পড়ে জনাবেন ইংশাআল্লাহ।
আজ ইসলাম আমাদের হাতের মুঠোয় যেটা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর মাধ্যমে আজ এত সহজে পেয়েছি, পেয়েছি রবের দিকনির্দেশনা, পেয়েছি রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আদর্শ। কতজনেইবা পেরেছি সে গুলো নিতে, সেগুলো মানতে। আজ ৯০% মুসলমানের দেশ ৬০/৭০% ই নামাজ পড়তে পারেনা, ওযু করতে পারেনা, কুরআন তিলাওয়াত ও পারেনা। জুম্মার সালাতে মানুষ কানায় কানায় মসজিদ পূর্ন আসরের ওয়াক্তেই আবার এক কাতার ভরে না। মানুষকে আজ আর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আদর্শ শেখানো হয় না, শেখানো হয়না সালাতের ওযুর নিয়মকানুন, তাও বলা হয় সবাই মুসলিম। আজ ইমামরা ব্যস্ত মসজিদ বড় করা নিয়ে,এসি নিয়ে,টাকা কলেকশন নিয়ে। জুম্মার খুতবায় যা বলাহয় তাও সে নিজে করেনা মানুষ ও করেনা। কত কত খুতবা তো দেয়া হয়েছেই কত জনই বা এ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। আজ আমরা কি করছি ইসলামের জন্য দ্বীনের জন্য। রাসুলুল্লাহ সাঃ কত কষ্ট করে যে দ্বীন এনেছেন, সাহাবী, তাবেয়ী যাদের থেকে এটা পেয়েছি এত সহজে আর সেটাকেই এখন আর আকড়ে ধরা যাচ্ছে না। প্রতি ক্ষেত্রে মুসলমান নিপিড়ীত, মার খাচ্ছে তাতেও আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এখন এই দ্বীনকে মানুষ কে কি করে আবার আগের মতো আকড়ে ধরবে, নামাজ পড়বে শুধু রবের জন্যই, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর আদর্শ মানবে কিভাবে।আমরা মানুষ কে নামাজের নির্দেশ দেই ইমামরাও দেয় কত জন পেরেছে তাদের হাতে ধরে শেখাতে আজ কেন এতদুরত্ব। আলেম কেন আর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাহ মানেন না। কেন ডাবলস্ট্যান্ডার্ড কেন মানুষ আজ পৃথক, ভেদাভেদ, কেন সাহাবীদের মতো ইমান, সালাত,খুতবা, ন্যায় আজ বিলুপ্ত। কিভাবে সম্ভব এই দ্বীনকে চুড়ায় পৌছানো।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

দাওয়াতের গুরুত্ব সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلاً مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّقَالَ إِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ، وَلاَ تَسْتَوِى الْحَسَنَةُ وَلاَ السَّيِّئّةُ ادْفَعْ بِالَّتِى هِيَ أَحْسَنُ فَإِذَا الَّذِيْ بَيْنَكَ وَبَيْنَهُ عَدَاوَةً كَأَنَّهُ وَلِيٌّ حَمِيْمٌ.

‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হ’তে পারে, যে আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই আমি মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত। সৎকর্ম ও অসৎকর্ম সমান নয়। প্রতুত্তর নম্রভাবে দাও, দেখবে তোমার শত্রুও অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে পরিণত হয়েছে’ (হা-মীম সিজদা ৩৩-৩৪)।

অন্যত্র আল্লাহ বলেন,

ثُمَّ كَانَ مِنَ الَّذِيْنَ آمَنُوا وَتَوَاصَوا بَالصَّبْرِ وَتَوَاصَوا بِالْمَرْحَمَةِ- أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْمَيْمَنَةِ.

‘অতঃপর (আল্লাহর নৈকট্য তারাও লাভ করতে পারে) যারা ঈমান আনে এবং পরস্পরে ধৈর্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরে দয়া করার উপদেশ দেয়। তারাই হল ডানপন্থি, তারাই সফল’ (বালাদ ১৭)। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أبيْ مَسْعُوْدٍ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ.

আবু মাসঊদ আনছারী (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি কল্যাণের পথ দেখাবে সে ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির সমপরিমাণ নেকী পাবে, যে ঐ পথে চলবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২০৯; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/১৯৯ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ... مَنْ سَنَّ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئٌ وَمَنْ سَنَّ فِيْ الإِسْلاَمِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَ وِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ مِنْ غَيْرِ أَنْ يُّنْقَصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئٌ.

জারীর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি (দাওয়াতের মাধ্যমে) ইসলামের একটি (মৃত) সুন্নাত চালু করবে সে তার নেকী পাবে এবং ঐ সুন্নাতের প্রতি মানুষ আমল করে যত নেকী পাবে তাদের সমপরিমাণ নেকী তার আমলনামায় লেখা হবে, তবে তাদের কারো নেকী কমকরা হবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইসলামে কোন মন্দ আমল চালূ করবে সে জন্য তার পাপ রয়েছে। আর ঐ মন্দ আমল করে যত লোক যে পরিমাণ পাপ অর্জন করবে সবার সমপরিমাণ পাপ তার আমলনামায় লেখা হবে, তবে তাদের কারো পাপ এতটুকুও কম করা হবে না’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২১০; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/২০০‘ইলম’ অধ্যায়)।

عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ نَضَّرَ اللهُ إِمْرَاً سَمِعَ مِنَّا شَيْئًا فَبَلَّغَهُ كَمَا سَمِعَهُ فَرُبَّ مُبَلِّغٍ أَوْعَى لَهُ مِنْ سَامِعٍ.

আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির মুখমন্ডল উজ্জল করুক যে ব্যক্তি আমার কোন হাদীছ শুনে এবং যেভাবে শুনেছে ঠিক সেভাবে অপরের নিকট পৌঁছে দেয়। কেননা অনেক সময় যার নিকট পৌঁছানো হয়, সে ব্যক্তি শ্রোতা অপেক্ষা অধিক জ্ঞানী হয়’ (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, দারেমী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩০; বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/২১৬ ‘ইলম’ অধ্যায়)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
দাওয়াত থাকবে তো দ্বীন থাকবে,দাওয়াত থাকবেনা তো দ্বীনও থাকবেনা।
মাছের জন্য যেমন পানি জরুরী, দ্বীনের জন্যেও দাওয়াত জরুরী। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
বর্তমান দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের সাথী ভাইয়েরা জান মাল উৎসর্গ করে মানুষকে নামাজী বানানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে,অনেক হক্কানী শায়েখরাও বিভিন্ন পদ্ধতিতে মুসলমানদেরকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তারপরেও লোকদের মাঝে দাওয়াত গ্রহনের আগ্রহ না থাকায় মূলত শতভাগ সফলতা অর্জন হচ্ছেনা।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত পরিস্থিতি হতে উন্নতির জন্য মুসলিমদের দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে যুক্ত হওয়া বা কোনো হক্কানী শায়েখের পরামর্শ মোতাবেক অতিব জরুরী। 

মানুষকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসার জন্য নসিহত করা,চেষ্টা করা ইমাম,খতিব,মুয়াজ্জিন, বক্তা সহ আপামর সকল মুসলমানের অতিব আবশ্যকীয় দায়িত্ব। 

এক্ষেত্রে ফজিলতও রয়েছে অনেক।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

“তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একজন লোককেও হেদায়েত দেন তবে তা তোমার জন্য একটি লাল উট পাওয়া থেকেও উত্তম।” (বুখারী ১২/৩৭)

তিনি আরো বলেন:

مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنْ الْأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا

“যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে আহবান করে সে ঐ পরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হয় যে ব্যক্তি তদনুযায়ী আমল করে। কিন্তু এতে আহ্বানকারীর সওয়াব কমানো হয় না।”(সুনানু আবি দাউদ-৪৬০৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...