আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
94 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একবার এক ইসরাইলবিরোধী মিছিলে গিয়েছিলাম। সেখানে এক পর্যায়ে বক্তা বলছিলেন, "ভাইয়েরা, আমরা শপথ করতেছি তো যে, আর ইসরাইলি পণ্য ব্যবহার করব না?"। আমি হাত তুলেছিলাম। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে-

১। এটা কি ওয়াদা বলে গণ্য হবে? এই ওয়াদা কি আল্লাহর সাথে হয়েছে নাকি মিছিলের ঐ বক্তার সাথে?
২। এই ওয়াদা অনুসারে আমি কি শুধু ইসরাইলি পণ্য বাদ দিতে হবে, মানে যেগুলো মেইড ইন ইসরাইল? নাকি ইসরাইলি বিনিয়োগ আছে যে কোম্পানিতে তাদের পণ্যও বাদ দিতে হবে? ইসরাইলি কোম্পানি নয়, আমেরিকান/ইউরোপীয় কোম্পানি যারা ইসরাইলকে সমর্থন দেয় বা ইসরাইলে বিনিয়োগ করে, তাদের পণ্যও কি বাদ দিতে হবে? কিংবা ইসরাইলি নয়, কিন্তু ইহুদিদের পণ্য কি বয়কট করতে হবে? আমার এই প্রশ্নগুলো উক্ত শপথকে কেন্দ্র করে যে, শপথের কারণে এগুলো ফরজ কিনা আমার উপর।
৩। যেগুলো ফ্রি পণ্য সেগুলো কি বাদ দিতে হবে?
৪। রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আল্লাহর কসম! আমি যখন কোন কিছুর উপর শপথ করবো, অতঃপর ওর বিপরীত জিনিসে মঙ্গল দেখবো তখন ইনশাআল্লাহ আমি ঐ মঙ্গলজনক কাজটিই করবো এবং আমার কসমের কাফফারা আদায় করবো।” - এই হাদিস অনুসারে আমি কি শপথটা ভঙ্গ করে কাফফারা আদায় করতে পারবো? কারণ কিছু ক্ষেত্রে বয়কট খুবই কঠিন হয়ে যায় আমার জন্য। আবার তাদের কিছু পণ্য ব্যবহার করে দ্বীনি খিদমতও করা যায়। সহজে হালাল উপার্জনের রাস্তা তৈরি হয়। আমি বয়কটের বিরুদ্ধে নই, কিন্তু সম্পূর্ণ বয়কট কঠিন।
৫। যদি শপথ ভঙ্গ করে ফেলি, কাফফারা কী হবে?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

সুরা মায়েদার ৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন 
 لَا یُؤَاخِذُکُمُ اللّٰہُ بِاللَّغۡوِ فِیۡۤ اَیۡمَانِکُمۡ وَ لٰکِنۡ یُّؤَاخِذُکُمۡ بِمَا عَقَّدۡتُّمُ الۡاَیۡمَانَ ۚ فَکَفَّارَتُہٗۤ اِطۡعَامُ عَشَرَۃِ مَسٰکِیۡنَ مِنۡ اَوۡسَطِ مَا تُطۡعِمُوۡنَ اَہۡلِیۡکُمۡ اَوۡ کِسۡوَتُہُمۡ اَوۡ تَحۡرِیۡرُ رَقَبَۃٍ ؕ فَمَنۡ لَّمۡ یَجِدۡ فَصِیَامُ ثَلٰثَۃِ اَیَّامٍ ؕ ذٰلِکَ کَفَّارَۃُ اَیۡمَانِکُمۡ اِذَا حَلَفۡتُمۡ ؕ وَ احۡفَظُوۡۤا اَیۡمَانَکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۸۹﴾

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অর্থহীন কসমের ব্যাপারে, কিন্তু যে কসম তোমরা দৃঢ়ভাবে কর সে কসমের জন্য তোমাদেরকে পাকড়াও করেন। সুতরাং এর কাফফারা হল দশ জন মিসকীনকে খাবার দান করা, মধ্যম ধরনের খাবার, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক, অথবা তাদের বস্ত্র দান, কিংবা একজন দাস-দাসী মুক্ত করা। অতঃপর যে সামর্থ্য রাখে না তবে তিন দিন সিয়াম পালন করা। এটা তোমাদের কসমের কাফ্ফারা, যদি তোমরা কসম কর, আর তোমরা তোমাদের কসম হেফাযত কর। এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন যাতে তোমরা শোকর আদায় কর। 
,
★সুতরাং শপথ তিন প্রকার। এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে।' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বলা হয়। 

এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।

তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এখানে যেহেতু মহান আল্লাহ তায়ালার নাম ধরে শপথ করা হয়নি,তাই এটা ওয়াদা বলে গণ্য হবে। এই ওয়াদা আল্লাহর সাথে করা হয়েছে।

(০২)
এই ওয়াদা অনুসারে আপনাকে শুধু ইসরাইলী পণ্য বাদ দিতে হবে।

(০৩)
ফ্রি পন্য বলতে কি বুঝানো হয়েছে,বিষয়টি কমেন্ট স্পষ্ট করলে ভালো হতো।

(৪.৫
এটা শপথ হয়নি।
তাই এটা ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবেনা।
তবে ওয়াদা খেলাফির গুনাহ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (14 points)
(২) তাহলে যেসব কোম্পানিতে ইসরাইলি বিনিয়োগ আছে, সেগুলো আমার বাদ দিতে হবে না? বা আমেরিকান ইহুদির কোন পণ্য বাদ দিতে হবে না? (কিছু মনে করবেন না, নিশ্চিত হবার জন্য আবার জিজ্ঞেস করছি)

(৩) কম্পিউটার/ইন্টারনেটের জগতে এমন পণ্য পাওয়া যায় যেমন  ইসরাইলি সফটওয়ার বা এপ, কিংবা ইসরাইলি ভার্সিটির অনলাইন কোর্স ইত্যাদি।
by (561,180 points)
(০১)
এগুলো বাদ দেয়া আবশ্যক নয় 
তবে ঈমানী তাকাজা হতে বাদ দিতে পারেন।

(০২)
ব্যবহার করা যাবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...