আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
82 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (37 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহ মাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ।
উস্তাদ, আমি পয়েন্ট আকারে প্রশ্ন করছি।  অনুগ্রহ করে পয়েন্ট আকারেই উত্তর দিবেন।

১/একদিন আমার আম্মু কিছু মাছ ধরে আনে,যে মাছগুলো হারাম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তারপর সে মাছগুলো তেলে ভাজি করে।হারামের ভয়ে সে মাছগুলো আমি খাইনি।পরের দিন আমার আম্মুর ধরে আনা মাছগুলো যে তেলে ভাজি করা হয় সেই একই তেলে আমার আব্বুর কিনে আনা মাছ গুলাও ভাজি করা হয়।সেই একই তেলে আব্বুর কিনে আনা মাছ গুলো ভাজি করার কারনে আমি আব্বুর মাছ গুলাও ভয়ে খাইনি।তেলের পাতিলে আব্বুর কিনে আনা কিছু মাছ অবশিষ্ট ছিল। পরে আমি একটি কাজে অন্য একটি পাতিলে নতুন তেল নিয়েছিলাম। পরের দিন আম্মু আগের তেলে আব্বুর যে মাছের টুকরোগুলো অবশিষ্ট  ছিল সেই মাছ গুলো আমার নতুন করে নেওয়া  তেলে ঢেলে দেয়।এখন আমার নেওয়া ওই তেল দিয়ে যদি অন্য কোন খাবার তৈরি করা হয় সেই খাবার কি আমি খেতে পারবো?

২/ বৃষ্টির সময় গ্রামে বিভিন্ন জলাশয় থেকে অনেক অনেক  কৈ মাছ উপরে উঠে আসে।তখন গ্রামের মানুষের মধ্যে এইসব কই মাছ ধরার ধুম পড়ে যায়।এখন কেউ তো জানে না কোন মালিকের পুকুর বা জলাশয় থেকে এই মাছগুলো উঠে এসেছে।তাহলে আমার আব্বুও যদি উপরে উঠে আসা কৈ মাছগুলো আমাদের খাওয়ার জন্য আনে তাহলে আমরা খেতে পারবো? হালাল হবে? কিংবা যদি জানেও কোন মালিকের পুকুর বা জলাশয় থেকে এই মাছ উঠে এসেছে তাহলেও কি খাওয়া যাবে?

৩/ নামাজে বুকে হাত বাধা অবস্থায় একদিন আমার শরিরের কোন অংশ চুলকালে আমি ভুলবশত বুক থেকে দুই হাত সরাই ফেলি।এখন আমার উক্ত নামায টা কি হয়েছে??

৪/অনেক বছর আগে তখন আমার দ্বীনের বুঝ ছিলনা।সেই সময় আমাদের জানালার বাইরে আমাদের এক প্রতিবেশী বালতিতে বৃষ্টির পানি নিয়েছিল।আমি বৃষ্টির পানি গুলো খেয়াল করিনি।তাই ঘরের ভেতর থেকে একটি নাপাকি বস্তুু জানালার বাইরে ছুড়ে মারি।তখন নাপাকি বস্তুুটি আমার প্রতিবেশির বালতির পানিতে গিয়ে পড়ে।পরে আমি গিয়ে উক্ত নাপাকি বস্তুুটি বালতি থেকে ফেলে দিই।কিন্তু পানি গুলো হয়তো ভয়ে ফেলিনি।এখন ওই পানি গুলা তো নাপাক হয়ে গেছে যেহেতু স্থির পানি ছিল। আর নাপাকিও ছিল নাজাসাতে গলিজা।আমার কারনে আমার প্রতিবেশি নাপাক পানি দিয়ে রান্না বান্না করে খেয়েছে।এটাতো আমি বান্দার হক নষ্ট করেছি।এখন যদি তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে যাই তাহলে সমস্যা হতে পারে।এখন আমার করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না।
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা(২৯)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) আপনি খেতে পারবেন। আপনা নেওয়া ওই তেল দিয়ে যদি অন্য কোন খাবার তৈরি করা হয়, তাহলে সেই খাবার আপনি খেতে পারবেন।

(২) 

قال: (وكل من اصطاد سمكا من نهر جار لرجل فهو للذي أخذه)؛ لأن صاحب النهر ما صار محرزا له بل هو صيد في نهره فالمحرز له من اصطاده، 
যদি কোনো ব্যক্তির মালিকানায় একটি প্রবাহিত নদী থাকে,এবং উক্ত প্রবাহিত নদী থেকে কেউ মাছ শিকার করে নেয়,তাহলে যে ব্যক্তি শিকার করবে সে সেই মাছের মালিক বনে যাবে।কেননা এক্ষেত্রে নদীর মালিক উক্ত মাছের সংরক্ষণকারী হিসেবে গণ্য হচ্ছে না।বরং উক্ত নদীর মাছকে শিকার করা জনসাধারণের জন্য বৈধ বলে গণ্য হবে।এবং উক্ত মাছের সংরক্ষণকারী হিসেবে সেই গণ্য হবে যে মাছকে শিকার করবে।(মাবসুত-সারখাসী;১১/২১৫)
 
নিজ মাল অন্য কেউ নিয়ে গেলে তাকে চুর প্রমাণিত করতে হলে সর্বপ্রথম নিজ মাল যে  সংরক্ষিত,তা প্রমাণ করতে হবে।মালকে সংরক্ষিত প্রমাণ করা ব্যতীত কাউকে চুর প্রমাণিত করা যাবে না।
যেহেতু পুকুরের মাছকে সংরক্ষণের দায়িত্ব মালিকের ছিল,তা যেকোনো ভাবেই হোক।কিন্তু এখানে মালিক তা করতে পারেননি।তাছাড়া এখানে কোন মাছ বেড়িয়ে যাচ্ছে,তা নির্দিষ্ট ও নয়।তাই উনার মাছ উনার মালিকানা থেকে অন্য কোথাও বেড়িয়ে গেলে তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।পরবর্তীতে যে কেউ তা শিকার করতে পারবে।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বৃষ্টির সময় জলাশয় থেকে কৈ মাছ বের হয়ে যদি ঐ মালিকের জায়গা অতিক্রম করে অন্য কোথাও চলে যায়, তাহলে সেই মাছ সবার জন উন্মোক্ত হয়ে যাবে।
(৩) নামাজে বুকে হাত বাধা সুন্নত। সুতরাং কোনো কারণে সরে গেলে নামাযে কোনো সমস্যা হবে না।
(৪) তাদের কাছে ক্ষমা না চাইলেও হবে।বরং শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...