بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
কোন ব্যাক্তির যদি ছোট বেলায় আকিকা করা না হয় এবং বড় হলে যদি কুরবানি করার সামর্থ্য হয়,, তাহলে কুরবানির সাথে আকিকা করা তার উপর আবশ্যক নয়।
এটা তার ইচ্ছাধীন। চাইলে আকীকা দিতেও পারে,নাও দিতে পারে।
আকীকা না দিলে তার কোনো গুনাহ হবেনা।
কুরবানির সাথে আকিকা সম্পর্কিত নয়।
(০২)
এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা।
শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই।
(০৩)
নবজাতক জন্মের সপ্তম দিনে আকীকা দেওয়ার কথা হাদীস শরীফে এসেছে।
সামুরা বিন জুনদুব রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
«كُلُّ غُلاَمٍ رَهِينَةٌ بِعَقِيقَتِهِ تُذْبَحُ عَنْهُ يَوْمَ سَابِعِهِ وَيُحْلَقُ وَيُسَمَّى»
‘প্রত্যেক শিশুই তার আকীকা জরুরী। জন্মের সপ্তম দিনে তার জন্য জবাই করা হবে এবং তার মাথা নেড়ে করা হবে আর নাম রাখা হবে। [আবূ দাউদ : ২৮৪০; মুসনাদ আহমদ : ২০০৯৫।]
আমর বিন শুয়াইব তার বাবা আর বাবা তার দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন যে,
«أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- أَمَرَ بِتَسْمِيَةِ الْمَوْلُودِ يَوْمَ سَابِعِهِ وَوَضْعِ الأَذَى عَنْهُ وَالْعَقِّ».
‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জন্মের সপ্তম দিবসে নবজাতকের নাম রাখা, তার আবর্জনা দূর করা (তথা নেড়ে করা) ও আকীকার নির্দেশ দিয়েছেন।’ [তিরমিযী : ২৮৩২।]
বিস্তারিত জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
জন্মের সপ্তম দিনে আকীকা করা উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪ বা ২১ তম দিনে করা ভালো। কেননা হাদীস শরীফে এই তিন দিনের উল্লেখ আছে। এ তিন দিনেও করা না হলে পরে যে কোনো দিন আকীকা করা যেতে পারে।
হযরত বুরাইদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আকীকার পশু সপ্তম বা চৌদ্দতম বা একুশতম দিনে যবাই করা হবে। (আলমুজামুল আওসাত ৫/৪৫৭)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আকিকার কোনো বিধান লঙ্ঘিত হবেনা।
সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।
(০২)
আকীকার গোশত পিতা-মাতা ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধনী-গরীব নির্বিশেষে সকলেই খেতে পারবে।
হযরত আয়েশা রা. বলেন, (আকীকার গোশত) নিজে খাবে, অন্যদের খাওয়াবে এবং সদকা করবে।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৭, হাদীস : ২৪৭৪৩, ২৪৭৩৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩২৯, ৩৩০, ৩৩১)
قال الموفق فى المغنى: وسبيلها فى الاكل والهدية والصدقة سبيل الاضحية (اعلاء السنن -17/127)
সারমর্মঃ-
আকিকার গোশত খাওয়া,হাদিয়া ও সদকাহ করার ক্ষেত্রে কুরবানীর ন্যায় একই বিধান প্রযোজ্য ।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কুরবানীর গোশতের ন্যায় আকীকার গোশত তিন ভাগ করা মুস্তাহাব।
এটি শুধু মুস্তাহাব বিধান, ওয়াজিব নয়
সুতরাং তিন ভাগ করে নিজের, আত্মীয় ও গরীবদের দেয়া। বা নিজেই পুরোটা রেখে দেয়া। সবই জায়েজ।