আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
160 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। আমি আমার প্রশ্নের জবাব ঠিকমতো পাইনি দেখে আবার প্রশ্নটা করলাম।প্রথম তালাক দিয়েছে ১ তালাক,২ তালাক,৩ তালাক বলে। তারপরে ছেড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য বলেছে ছেড়ে দিয়েছি। ছেড়ে দিয়েছি বলার পরে আমরা দ্বিতীয় বারের পর আবার তারা বিয়ে করে। দুইজন সাক্ষী নিয়ে । তখন বলে যে - আমি,ছেলেটার নাম,ছেলেটার বাবার নাম,মেয়েটার বাবার নাম,মেয়ের নাম বলে-তারপরে বলে যে আমি মেয়েটাকে বিবাহ করিলাম।তারপরে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করে যে- তুমি কী রাজি আছো? মেয়েটা বলে যে হা আমি রাজি আছি। তারপরে আবার মেয়েটাকে এভাবে দুইবার জিজ্ঞাসা করে যে সে রাজি আছে কিনা।
প্রথম বিয়েতে যে সাক্ষীরা ছিল দ্বিতীয় বার বিয়েতে ওই সাক্ষীরা ছিলো না, আর ওই সাক্ষীগুলো মেয়ের পক্ষ থেকে ছিলো না,ছেলের পক্ষ থেকে ছিলো।

দ্বিতীয় বিয়ের পর স্বামী বলেছে আমি তোমাকে তালাক দিলাম, কিন্তু তার তালাক দেওয়া উদ্দেশ্য ছিলো না।সে এক প্রকার ভয়ে স্ত্রীকে হারানোর ভয়ে তালাক দিতে বাধ্য হই।
ছেড়ে দিয়েছি বললে কী তালাক হয়ে যায়?

শেষ বার তালাক এ যে তালাক দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছিলো না কিন্তু স্বামী বলেছে আমি তোমাকে তালাক দিলাম, তালাক কী হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)

 

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাব,

https://ifatwa.info/57974/  নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, তালাক খুবই মারাত্মক এক বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যেআল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক। (আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)

'তোমাকে ছেড়ে দিলাম' ‘তোমাকে মুক্ত করে দিলাম’ বা ‘স্বাধীন করে দিলাম’ শব্দগুলো প্রচলনে সারীহ বা স্পষ্ট তালাকের স্থলে ব্যবহার হয়ে থাকে।

আর সারীহ তালাকের ক্ষেত্রে নিয়তের প্রয়োজন হয় না। বরং যদি কেউ স্ত্রীকে কেবল ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেও এজাতীয় কথা বলে তাহলেও এর দ্বারা তালাক হয়ে যায়। (জামিউল ফাতাওয়া ১০/১২০ কিতাবুন নাওয়াযিল ৯/২৯৩, ২৯৬, ২৯৯, ৩০০)

যে সকল শব্দ স্পষ্টভাবে তালাককে বুঝায়, সে সকল শব্দ দ্বারা তালাক দিলে তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের প্রয়োজন পড়ে না। আমাদের দেশে ‘ছেড়ে দিলাম’ -এর দ্বারা তালাক বুঝায়। কাজেই এ কথা বললে তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের কোনো প্রয়োজন পড়বে না। (রদ্দুল মুহতার ৪/৫৩০; ফাতওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭৯)

سرحتك وهو “رها كردم” لأنه صار صريحا فى العرف (رد المحتار، كتاب الطلاق، باب الكنايات-4/530)

সারমর্মঃ-ছেড়ে দিলাম বাক্যটি আমাদের উরুফের মধ্যে সরিহ বাক্য হয়ে গিয়েছে।

اذا قال الرجل لامرأته: “بهشتم ترا از زنى” فاعلم بأن هذه اللفظة استعملها أهل خراسان وأهل العراق فى الطلاق، وأنها صريحة عند أبى يوسف حتى كان الواقع بها رجعيا ويقع بدون النية (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السابع فى الطلاق بألفاظ الفارسية-1/379، جديد-1/447، الفتاوى التاتارخانية-4/463، رقم-6678)

সারমর্মঃ-

কেহ যদি তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলাম হলে,তাহলে এটিকে খোরাসান বাসী ও ইরাক বাসীগন তালাকের বাক্যের অন্তর্ভুক্ত বলেন।

আবু ইউসুফ রহঃ এর নিকটে এটি সরীহ শব্দ। এর দ্বারা রজয়ী তালাক পতিত হবে।  এবং নিয়ত ছাড়াই তালাক পতিত হবে।

وقال أبو يوسف: إذا قال: بهشتم ان زن، أو قال: ان زن بهشتم، فهى طالق نوى الطلاق أو لم ينو، وتكون تطليقة رجعية (بدائع الصنائع-3/163)

সারমর্মঃ- ইমাম আবু ইউসুফ রহঃ বলেছেন,কেহ যদি তার স্ত্রীকে ছেড়ে দিলাম বলে,তাহলে তালাক পতিত হবে।  তালাকের নিয়ত করুক বা না করুক। আর এর দ্বারা রজয়ী তালাক পতিত হবে।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন/ভাই

তাদের মাঝে তালাক হয়ে গেছে। কারণ, স্পষ্ট ভাবে স্বামী স্ত্রীকে তালাক শব্দ দ্বারা তিন তালাক প্রদাণ করেছে। তালাক শব্দ উচ্চারণ করে তালাক দেওয়ার পর নিয়তের কোন ধর্তব্য নেই। নিয়ত থাকুক বা না থাকুক তালাক হয়ে যাবে। এছাড়া ‘ছেড়ে দিয়েছি’ শব্দটি বাংলাদেশে স্ত্রীর ক্ষেত্রে তালাকের জন্য ‘ছরীহ’ তথা স্পষ্ট শব্দ। এ শব্দে তালাক দেয়া আর তালাক শব্দে তালাক দেয়া একই কথা।

আর ছরীহ তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত থাকা বা না থাকার কোন ধর্তব্যতা নেই। সর্বাবস্থায়ই তা স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বললে তালাক হিসেবে পরিগণিত হয়। আর কথা কাটাকাটির সময় বলার দ্বারা একথা প্রমাণ করে যেতালাক উদ্দেশ্যেই কথাটি বলা হয়েছে এটা অস্বিকার করার কোন সুযোগ নেই।

প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট তালাক সম্পর্কে আরো জানুন: https://ifatwa.info/41681/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...